নেত্রকোনা থেকে : নেত্রকোনার কলমাকান্দায় স্বামীর বাড়ি থেকে দেবী দাস (১৮) নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে কলমাকান্দা থানা পুলিশ। এক বছর আগে এই দিনেই প্রেমের সূত্র ধরে সজিব দাসের সঙ্গে বিয়ে হয় দেবী দাসের। সোমবার (৮ মার্চ) সকালে স্বামী সজিব দাসের বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করে দুপুরে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে নিয়ে আসে।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানায়, কলমাকান্দা উপজেলার পোগলা ইউনিয়নের ধীতপুর গ্রামের প্রাণেশ দাসের মেয়ে দেবী দাসসহ সকলেই মুন্সিগঞ্জের বিক্রমপুর থাকতেন। মোবাইলে ফোনে প্রেমের সূত্র ধরে একই এলাকার পনার পারুয়া গ্রামের সুনীল দাসের ছেলে সজিব দাসকে পালিয়ে এক বছর আগে এই দিনে বিয়ে করেন দেবী দাস। এর মধ্যে দেবী দাসের একটি গর্ভপাতও ঘটানোর অভিযোগ রয়েছে স্বজনদের।
সোমবার (৮ মার্চ) সকালে আটটার দিকে কলমাকান্দা থানার পুলিশ খবর পেয়ে সজিবের বাড়িতে গিয়ে ঘরের মেঝেতে মৃত অবস্থায় গৃহবধু পায় দেবী দাসের মরদেহ। তবে সজিব দাসের পরিবারের দাবি গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে দেবী। এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়ায় পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য দুপুরে নেত্রকোনা মর্গে পাঠায়।
দেবীর মা কল্পনা দাস, বোন ঝুমা দাস ও ভাই পরিতোষ দাসসহ স্বজনরা জানায়, তারা অনেক আগে থেকেই বিক্রমপুর অবস্থান করছিল। কিন্তু গ্রামের বাড়ি একই উপজেলায় হওয়ার সুবাদে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে সজিব ও দেবী দাসের মধ্যে। পরে তারা দুজনই পালিয়ে বিয়ে করে। বিয়ের কয়েকদিনের মধ্যে দেবীর শ্বাশুড়ী তার উপর নানাভাবে অত্যাচার করত। দেবীর পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে দেওয়া হতো না বলে অভিযোগ করে স্বজনরা। এরই মধ্যে হঠাৎ সোমবার ভোরে সজিবের মা ফোন দিয়ে দেবীর মা ভাইকে নেত্রকোনায় আসতে বলেন। তারা এসে দেবীর মৃতদেহ দেখতে পান।
দেবীর স্বামী সজিব দাস জানান, স্ত্রীকে নিয়ে রাতে প্রতিদিনের ন্যায় ঘুমিয়ে পড়েন। পরে ভোর রাতে তার বাবা ঘুম থেকে উঠে তাদের ঘরের দরজা বাইরে থেকে আটকানো দেখতে পায়। পরে তার ডাকাডাকিতে সজিব জেগে দেখেন দেবী ঘরে নেই। এরপর বাড়ির সবাই খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে রান্না ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস নেয়া অবস্থায় দেবীকে দেখতে পান। বেচে আছে মনে করে তারা দেবীকে নিচে নামিয়ে আনেন বলেও দাবি করেন সজিব দাস।
কলমাকান্দা থানার ওসি এটিএম মাহমুদুল হক দেবীর শ্বশুর বাড়ির বরাত দিয়ে জানান, পরিবারটি দাবি গলায় ফাঁস নেয়া অবস্থায় দেবী দাসকে দেখতে পায় তারা। পরে হাত পা নড়তে দেখে তারা তাকে নিচে নামিয়ে আনে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘরের মেঝে থেকেই দেবী দাসের মৃতদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে বলেও জানান মাহমুদুল হক।