রাজধানীর আজিমপুরের সরকারি স্টাফ কোয়ার্টার থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রী ইসরাত জাহান তুষ্টির (২১) মরদেহ উদ্ধারের খবরে তার গ্রামের বাড়িতে মাতম শুরু হয়েছে। তার বাড়ি নেত্রকোণা জেলার আটপাড়া উপজেলার সুখারী ইউনিয়নের নীলকণ্ঠপুর গ্রামে। তার বাবার নাম আলতু মিয়া।
ওই ছাত্রীর চাচা ঈমাম হোসেন বলেন, তুষ্টি ধর্মরায় রামধনু উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে (জিপিএ-৫) পেয়ে এসএসসি পাশ করেন। এরপর মদন উপজেলার জোবাইদা রহমান মহিলা কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে (জিপিএ-৫) এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। সে খুব মেধাবী ছিল। তারা তিন ভাই এক বোন। সে ভাই-বোনের মধ্যে দ্বিতীয়। বড়ভাই মাসুদ মিয়া সৌদি আরবে থাকেন, তুর্জয় মিয়া অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে আরেক ভাই মাহির বয়স ছয় বছর। মা হেনা আক্তার গৃহিণী। বাবা আলতু মিয়া ধান চালের ব্যবসা করেন।
ওই ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধারের খবরে তার গ্রামের বাড়িতে আহাজারি শুরু হয়। কেউ-ই মেনে নিতে পারছেন না এই মেধাবী ছাত্রীর অকাল মৃত্যুকে। তার স্বজনরা বলছে, এই ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে কেউ দায়ী থাকলে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে।
মেয়ে মৃত্যুর খবর শুনে তার মা হেনা আক্তার বারবার মূর্চ্ছা যাচ্ছিলেন। কেঁদে কেঁদে বলছিলেন, হায়রে আমার কী সর্বনাশ হইলো রে…এত কষ্ট করে মেয়েকে লেখাপড়া করাইছিলাম। আমার সন্তানের কেন এমন হলো? কেন এই সর্বনাশ হলো আমার! আমার মেয়েকে এনে দাও। বলেই তিনি আবার মূর্চ্ছা যাচ্ছিলেন।
নেত্রকোণার আটপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাফর ইকবাল বলেন, তুষ্ঠির মৃত্যুও সংবাদ পেয়েছে। তার বাবা ঢাকার লালবাগ থানা পৌঁছেছেন।
এর আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাকে জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই ছাত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ২য় বর্ষে অধ্যয়নরত ছিলেন। তিনি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের ছাত্রী ছিলেন। তবে হল বন্ধ থাকায় স্টাফ কোয়ার্টারের ওই ভবনের নিচতলায় থাকতেন। ইসরাত জাহান তুষ্টির বান্ধবী পরিচয় দেয়া তাপসী নামে একই বিভাগের আরেকজন ছাত্রী এসব তথ্য জানান। তাপসী আরো বলেন,তারা তিন বান্ধবী এক রুমে ঘুমাচ্ছিলেন। ভোরে ঘুম থেকে উঠে তুষ্টিকে না পেয়ে তারা ৯৯৯-এ কল করলে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা বাথরুম থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।