পাবনা থেকে: শবে বরাতের রাতে যখন সব শিশুরা আতশবাজি নিয়ে মেতে উঠেছিল, ঠিক সেই মুহূর্তে হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছিল ছোট্ট শিশু খাদিজা (ছদ্মনাম)। ঠোঁটগুলো ফ্যাকাসে হয়ে গেছে, দুই পা বেয়ে টপ টপ করে ঝরে পড়ছিল লাল টকটকে তাজা রক্ত। বার কয়েক বমিও করলো মেয়েটা। মেয়ের মা পাশেই ছিলেন।
একেবারে নিশ্চুপ, নিশ্চল। যেন একটা পাথরের মুর্তি। ভ্যান চালক বাবা উদ্ভ্রান্তের মত ছোটাছুটি করছিলেন। কারোও মুখে কোন শব্দ নেই। খাদিজাকে জিজ্ঞাসা করলাম-কি হয়েছে মা মনি? সে বলল- আমার খালু আমার সাথে খারাপ কাজ করছে। চকলেট দিবে বলে ডেকে নিয়ে তারপর …
আর লিখতে ইচ্ছে হচ্ছে না। লাইলাতুল বারাতের রাত হচ্ছে মহিমান্বিত রজনীর মধ্যে অন্যতম। স্বয়ং আল্লাহপাক নাকি এই রাতে বান্দার গুনাহ মাফের জন্য পৃথিবীর খুব কাছাকাছি থাকেন। ফেরেশতারা নাকি মানুষের ভাগ্যলিপি লেখেন। জানি না, মহান রাব্বুল আলামিন খাদিজাকে নির্যাতনকারীর গুনাহ মাফ করবেন কি না। তবে খাদিজা আমার মেয়ে হলে আমি মাফ করতাম না (আমার বলা ভুল হলে আল্লাহপাক আমাকে মাফ করুন)।
নির্যাতনকারীকে ধরা হয়েছে। জানোয়ারটা দেখতে অনেকটা মানুষেরই মত। শুনতে পাচ্ছি ওরও নাকি খাদিজার সমান একটা বাচ্চা আছে। আমার বিশ্বাস হচ্ছে না।
ঘটনাস্থল-তেঘরিয়া, বেড়া, পাবনা
খাদিজার বয়স-৯+, ক্লাস-৩য় শ্রেণি
নির্যাতনকারীর নাম-আমিরুল ইসলাম, বয়স-৩২+”
লেখক : আশীষ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, বেড়া সার্কেল, পাবনা
ধন্যবাদ পাবনা হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সদের, পাবনা সদর থানার ওসি এবং কনস্টেবল এনামুল যে খাদিজার অপারেশনের সময় ও পজেটিভ রক্ত দিয়েছে।
খাদিজা এখন শঙ্কা মুক্ত।
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি