পাবনা: দিনের পর দিন নিজের বাবা ও সৎ ভাইয়ের লালসার শিকার হয়েছে এক স্কুলছাত্রী। কিন্তু কখনও মুখ ফুটে কাউকে বলতে পারেনি সে। এক পর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে ভ্রুণ নষ্ট করে ফেলতে বাধ্য করেন পাষণ্ড ওই বাবা। চাঞ্চল্যকর এমন ঘটনা ঘটেছে পাবনার চাটমোহর উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নের বালুদিয়ার দক্ষিণপাড়া গ্রামে।
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর তোলপাড় শুরু হয়েছে ওই এলাকায়। আর এমন ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে ওই স্কুলছাত্রী। এ ঘটনার পর ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে গেছে অভিযুক্ত বাবা-ছেলে। তারপর থেকে মেয়েটির আশ্রয় মিলেছে প্রতিবেশী মামার বাড়িতে।
শুক্রবার ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী, তার স্বজন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বালুদিয়ার দক্ষিণপাড়া গ্রামের গুড় ব্যবসায়ী আনু মন্ডলের দ্বিতীয় স্ত্রী মারা যাওয়ার পর তিন মেয়েকে নিয়ে তিনি ওই গ্রামে বসবাস করে আসছিলেন। এরমধ্যে দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে যায়। এরপর থেকেই নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছোট মেয়ে বাড়িতে একা থাকার সুযোগে তাকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করে বাবা। এতে যোগ দেয় আনু মন্ডলের প্রথম পক্ষের ছেলে রিপন হোসেন। দিনের পর দিন বাবা ও সৎ ভাইয়ের লালসার শিকার হয়ে এক পর্যায়ে সম্প্রতি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে ওই মেয়েটি।
লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়টি কাউকে বলতে না পারলেও তার মামিকে সে বিষয়টি জানায়। পরে আনু মন্ডল জোরপূর্বক ওই স্কুল ছাত্রীর ভ্রুণ নষ্ট করতে বাধ্য করে। এতদিন বিষয়টি চাপা থাকলেও শুক্রবার এলাকায় ঘটনাটি জানাজানি হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, থানা পুলিশ গিয়ে ওই স্কুলছাত্রীর জবানবন্দি রেকর্ড করে এবং থানায় অভিযোগ দিতে বলে। এদিকে এ ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্ত বাবা আনু মন্ডল ও তার ছেলে রিপন হোসেন।
এ বিষয়ে ওই স্কুলছাত্রীর মামা বাবলু খন্দকার ও গ্রাম্য প্রধান মীর লিয়াকত আলী বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত অমানবিক ও লজ্জাজনক। বাবা-ছেলে মিলে অমানুষের মতো কাজ করেছে। এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার। আমরা ওই দুইজনকে গ্রেফতারের দাবি জানাই এবং ন্যায় বিচার চাই।
ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে মূলগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম বকুল বলেন, এ ধরনের লোকের কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত। এছাড়া ওই স্কুল শিক্ষার্থীকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান।
এ ব্যাপারে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) তাপস কুমার পাল বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলমান রয়েছে। এছাড়া পুলিশের দুটি টিম অভিযুক্ত বাবা ছেলেকে আটকের চেষ্টা করছে। আশা করি খুব শিগগিরই ভালো খবর দিতে পারবো।