বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৩:২৮:৫৯

মেডিকেলে চান্স পাওয়া দিনমজুরের মেয়ের দায়িত্ব নিলেন জেলা প্রশাসক

মেডিকেলে চান্স পাওয়া দিনমজুরের মেয়ের দায়িত্ব নিলেন জেলা প্রশাসক

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : বিভিন্ন গণমাধ্যমে দিনমজুর বাবার মেধাবী সন্তান মেঘলা খাতুনের (১৯) মেডিকেল কলেজে চান্স ও তার দারিদ্র্যতার খবর প্রচারের পর শিক্ষার্থী মেঘলার পাশে দাঁড়ালেন পাবনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম। এতে খুশি মেঘলা ও তার পরিবার। 

মঙ্গলবার পাবনার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মেঘলা ও তার পরিবারকে ডেকে নেন পাবনার জেলা প্রশাসক। এ সময় তাকে নগদ অর্থসহ ফুলেল শুভেচ্ছা দিয়ে এ সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।

এ সময় অন্যদের মধ্যে পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জাহাঙ্গীর আলম, পাবনা প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক এবং দৈনিক আমারদেশ ও বাসসের পাবনা প্রতিনিধি জহুরুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক এবং আরটিভি ও নিউ নেশনের পাবনা প্রতিনিধি আবুল কালাম আজাদ, বাংলাটিভির পাবনা প্রতিনিধি এসএম আলম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহারুল ইসলামসহ জেলা প্রশাসনের সকল কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, শিক্ষার্থী মেঘলা পাবনা সদর উপজেলার আতাইকুলা ইউনিয়নের মৌগ্রাম মহল্লার দিনমজুর কৃষক হাসমত মির্জা ও গৃহকর্মী মোছা. চায়না খাতুনের একমাত্র মেয়ে। নানা অভাব অনটন আর প্রতিকূলতার মধ্যদিয়ে মেঘলার বেড়ে উঠা। শিক্ষা জীবনে কখনোই স্বাচ্ছন্দ্য, পছন্দের জামা কাপড় প্রয়োজনীয় বই খাতা না পেলেও সে দমে থাকেনি। দারিদ্র্যতার মধ্যদিয়েই পাবনার আঠঘরিয়া উপজেলার একদন্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ ৫ এবং সরকারি অ্যাডওয়ার্ড কলেজ থেকে এইচএসসি তে জিপিএ ৫ পেয়ে সাফল্যের সঙ্গে সে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছে। তার এই সাফল্যে গর্বিত পিতামাতা ও এলাকাবাসী। 

কিন্তু মেডিক্যালে চান্স পেলেও কিভাবে ভর্তিসহ পড়াশোনার খরচ বহন করবে এমন চিন্তা ভর করে মেঘলা ও তার পরিবারের মাথায়। বিভিন্ন গণমাধ্যমে তাদের এই চিন্তা ও আর্থিক দূরাবস্থার কথা প্রচার করলে নজরে আসেন পাবনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম। তিনি তাৎক্ষণিক মেঘলার বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার জন্য পাবনা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নাহারুল ইসলামকে দায়িত্ব দেন। মঙ্গলবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেঘলা ও তার বাবা মাকে জেলা প্রশাসকের কাযালয়ে উপস্থিত করেন। জেলা প্রশাসক মেঘলাকে তার সাফল্যের জন্য ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এ সময় জেলা প্রশাসক তার ও তার পরিবারের সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর নেন। ভর্তিসহ প্রাথমিক খরচাদি মেটানোর জন্য মেঘলাকে নগদ বিশ হাজার টাকা প্রদান করেন এবং তার মেডিকেলে পড়াশোনার যাবতীয় খরচাদি পাবনার জেলা প্রশাসন বহন করবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি।

জেলা প্রশাসকের এমন আশ্বাসে শিক্ষার্থী মেঘলা আবেগ আব্লুত হয়ে বলেন, জীবনেও আশা করিনি এমন সহযোগিতা পাবো। জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট কৃতজ্ঞ থাকবো। এখন একটু চিন্তামুক্ত হয়ে পড়তে পারবো। এটা আমার জীবনে অনেক বড় উপহার।

মেঘলার বাবা ও মা বলেন, আজ মনটা ভালো লাগছে। ডিসি স্যার আমার মেয়ের পাশে দাঁড়ালেন। এর চেয়ে আর কি চাই।  

এ সময় পাবনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, মেঘলা তার পরিশ্রমের ফল পেয়েছে। সে এই দেশের গর্বিত সন্তান। তার দায়িত্ব আমাদের সকলের। 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে