এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : পাবনার ঈশ্বরদীতে বেকারত্ব ও অনলাইন জু/য়ার আসক্তি থেকে চরম হতাশায় নিজের জীবনের ইতি টানলেন মো. সেলিম (২৪) নামে এক যুবক।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার পাকশী যুক্তিতলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
সেলিম নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার থানাইখাড়া গ্রামের বাবু হোসেনের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ছয় মাস ধরে স্ত্রী খাদিজা ও তিন বছর বয়সী মেয়ে সাবিহাকে নিয়ে পাকশী যুক্তিতলা এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন সেলিম। তার স্ত্রী খাদিজা ঈশ্বরদী ইপিজেডের আইএম বিডি নামের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় কাজ শেষে বাসায় ফিরে খাদিজা দেখেন, সেলিম গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলছেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
এ সময় ঘর থেকে একটি চিঠি উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, মৃত্যুর আগে সেলিম চিঠিটি লিখে গেছেন।
চিঠিতে তিনি লিখেছেন—
প্রিয় খাদিজা, তোমার কথা রাখতে পারলাম না। আমি খুব বড় অপরাধ করে ফেলেছি, পারলে আমায় মাফ করে দিও। আমি আর পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে চাই না। আব্বার সঙ্গে শেষবারের মতো কথা বলেছি, তারা ভালো আছে। তুমি আর আমার মেয়ে ভালো থেকো। সাবিহাকে দেখে শুনে মানুষ কইরো। ইতি-তোমার সেলিম। শেষবারের মতো তোমার চেহারাটা দেখতে পারলাম না। I love you খাদিজা, সাবিহা। আব্বা-আম্মা, তোমরাও আমাকে ক্ষমা করে দিও। খাদিজার কোনো দোষ নেই। আমার ভুলেই আমি চলে যাচ্ছি। আল্লাহ।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সেলিম দীর্ঘদিন বেকার ছিলেন এবং অনলাইন জু/য়ায় আসক্ত হয়ে পড়েন। এতে পরিবারের অনেক টাকা নষ্ট হয়। পরপর ক্ষতি ও বেকারত্বের হতাশা থেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি।
স্থানীয়দের ধারণা, জু/য়ার আসক্তি ও আর্থিক দুরবস্থার কারণে হতাশ হয়ে আত্মহত্যা করেছেন সেলিম।
এই ঘটনায় এলাকায় নিন্দা ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। অনলাইন জু/য়া নিয়ন্ত্রণে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
পাকশী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মনিরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।