মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বাবু (সিঙ্গাপুর প্রবাসী): বাবা মা কে মেনে চলুন ,দেখবেন শান্তি পাবেন ,স্ত্রীকে দিন তার পাপ্য সংসার হবে রঙিন। এক সাথে না থেকে দূরে দূরে শুরুতেই থাকুন ,বিদেশিদের মোতে ঈদে ফেস্টিভ্যালে আল্লাদে ,উল্লাসে থাকুন ,সম্পর্ক ভালো থাকবে। কিন্তু সবার পক্ষে কি সম্ভব হয় ,এক মাত্র কোটি পতি রাও সামঞ্জস্য রাখতে পারে কিনা ,নট সিউর।
বাবা মায়ের ন্যায় অন্যায় নিয়ে প্রশ্ন তোলা উচিৎ নয়. তাদের অন্যায় বিচারকেও সত্য বলে মেনে নেয়া উচিৎ ,নচেৎ বদ দোয়া ঠেকাতে পারবে না কেউ.এটি ঐশ্বরিক মিরাক্কেল পাওয়ার, একবার হায় ,আফসোস করে সৃষ্টি কর্তাকে স্মরণ করেছেতো আপনার জীবনের সব পুন্য শেষ. “এক মন দুধে এক ফোঁটা গরুর চনা দিলে দুধ অপবিত্র তেমনি আপনার সার জীবনের সাধনা নিমিষেই শেষ”.বার্ধ্যকে এসে পিত মাতা অনেকটা অর্র্থিক,মানসিক ,লৌকিকভাবে দুর্বল সন্তানদের প্রতি অতি মাত্রায় ন্যায় পরায়ণ উঠেন। তাদের অন্যায়কে এক গুঁয়েমী বলে চালিয়ে দেন. মানুষ মৃত্যুর আগে ধার্মিক হয়.সে ধামিকতায় নিয়ে আসেন তাদের মনের আকাঙ্খা। এতে করে পিত মাতার উপর নাখোশ হওয়ার কিছুই নেই. তাদের সাথে উচ্চ স্বরে কথা বলবেন না। কারণ গাড়ি আপনার ও আসছে। আপনিও এর ব্যতিক্রম হবেন না.
সে দিন শুনলাম দুই ভাই ,তিন বোনের কাহিনী।ছো ট ছেলে সিঙ্গাপুর থাকে। বাবার মিরপুরের জায়গা সম্পত্তি যায় যায়,সিঙ্গাপুর থেকে ধার দেনা করে সরকারি নিরানব্বই বছরের লিজ জমি ঠেকিয়েছে। ডেভলাপার কে জমি দিয়ে তিনটি ফ্ল্যাট পেয়েছে . সংসার টেনেছে প্রবাসী ছেলেটা। এখন বাবা মা সব সম্পত্তি অন্য ছেলে এবং মেয়েদের লিখে দিয়েছে।বা বা মা বলেছে এই ছেলে কিছু করে খেতে পারবে। চালাক চতুর ,দোয়া করে দিলাম। সে ভাতে মরবে না ?
আরেক ছেলে বড় সন্তান , যে কোন কারণে বাবার পুরো জীবনের সহায় সম্মতি যখন শেষ .১৪ বছর বয়সে বয়স বাড়িয়ে আজ থেকে উনিশ বছর আগে টুরিস্ট ভিসায় সিঙ্গাপুর আসে. কালের পরিক্রমায় পারমিট হয় ,তিন ভাইকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে আসে বিয়ে করে দেশে আসে যায়, দেয় ,ভাইয়েরা কেউ প্রতিষ্টিত বা চাকরিতে স্থায়ী হয় নি ,সবাই এখন সংসারী। বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে আছেন। গত বছর সেই ছেলেটির আঠার বছর হয়ে যাওয়ায় আর ভিসার মেয়াদ বাড়েনি। এখন সেই ছেলের বাড়ি ঘর নেই ,ভাড়া বাড়িতে দেশে মানবেতর জীবন কাটছে।তার স্ত্রী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে তৃতীয় শ্রেণীর কাজ করছে।ভাইরা ,যে যার মতো ব্যাবসা বাণিজ্য করে দিব্ব্যি চলছেন।বাবা মা ও আছেন। টাকা পয়সার হিসেবে পাওয়া যায় নি.
আমার সাথে এখন কাজ করে এক ছেলে ,প্রেম করে বিয়ে করেছিল বছর দশেক আগে ,আই এ পাশ করা হয় নি। সিঙ্গাপুর এসে কষ্ট করে নানা কোর্স করে মধ্যম মানের কাজ করছে, সব টাকা বাবা মা-কে দিচ্ছে। টিনের ঘর পাকা হয়েছে। তার মেঝ ভাই এখনো পড়ে। বড় ভাই ঢাকায় ডাক্তার মেয়ে বিয়ে করে ঢাকায় থাকে। বাম মায়ের কাছে তার বৌ, এক কন্যা। বড় ভাই বাবা মা-কে টাকা পয়সা দেয় না, ডাক্তার বৌয়ের ঘরে তার বাবা মা ভাই বোন যেতে পারেনা। এই ছেলের বৌ দেখা শুনা করে তার বাবা মা-কে মেয়ে এখন ক্লাস ওয়ানে পড়ে। শান্তিতে নেই ছেলেটি ,কারণ প্রেম করে বিয়ে করার সেই অপরাধে আজো প্রতিমুহূর্ত বাবা মায়ের কটু কথা শুনতে হয় ,ছেলেটি পাঞ্জেগানা নামাজী ,বৌকে ফোনে নামাজ পড়তে বলে ,বাবা মায়ের খেদমত করতে বলে। সে প্রেম কাহিনী নিয়ে বাবা মা তিরস্কার করে। ছেলেটির বৌ ফোনে কান্না করে ,এখানে ছেলেটি ফোন ভাঙে। টাকা দিয়ে শান্তি পেলোনা ছেলেটি।
কেন যেন ছেলে মেয়েদের পাশাপাশি বাবা মা ও ডিজিটাল হয়ে গেছে। যে ছেলে বেশি টাকা দিবে বা যেই মুহূর্তে দিবে তখন ভালো।কিংবা যে ছেলে তাদের মতো চলবে ,মানে মতাদর্শে চলবে সে ভালো হবে। মানবাধিকারের ,বিবেকের প্রশ্নের ও উত্তর চাওয়া যাবে না। কেন যে ব্যালেন্স করে না বাবা মা? এই কেন বলা যাবে না যদি আপনি ধার্মিক হন.
এখানে বাবা মা কে দোষ দেয়া যাবে না। আপনার বাবা মা আপনার কাছ থেকে কষ্ট পেলে আপনি ছার খার হয়ে যাবেন।জীবন সায়াহ্নে এসে বাবা মা কখন কি করেন, তা নিয়ে তাদের সমালোচনা না করে,তাদের মতামতের সাথে বা বুঝিয়ে তাদের বাকি দিন গুলি যেন ইবাদত বন্দেগিতে কাটে, শান্তি মত দিনাতিপাত করতে পারে সে দিকেই খেয়াল রাখা দরকার। এই বয়সে তারা অবুঝ শিশুর মতো। আগুন পানি বোঝার শক্তিও ,হারিয়ে ফেলেন।এ কথা অস্বীকার করবেন কি করে আপনার শরীরের রক্ত মাংস শিক্ষা সবই কিছুতেই তাদের অবদান।
সংসারে যত দিন বিয়ে না করবেন আপনি থাকবেন সকলের প্রিয়।ভাবীর প্রিয় দেবর।ভাইয়ের আদরের ভাই, বোনের সেরা ভাই, বন্ধুর শ্রেষ্ঠ বন্ধু ,বাবা মায়ের আদরের সু-সন্তান। বিয়ে করলে বৌ তার ছেলে মেয়ে আর আপনার ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাববে। সেখানেই হবে কাল। পিত মাতাকে না জানিয়ে কোন ব্যাবসা বাণিজ্য করবেন অভিশাপ দেবে।এক ভাই আরেক ভাইকে বাবা মা-কে না জানিয়ে সহায়তা করবেন অভিশপ্ত হবেন।
বদ দোয়া দেবেন। বাবা মা একটা জীবনে কষ্ট করে সংসারে ,সন্তান মানুষ করতে। পৃথিবীতে বাবা মা সবার আপন.খারাপ বাবা মা পৃথিবীতে নেই.খারাপ মানুষ গুলি তার সন্তানের কাছে শেষ বাবা-মা. সন্তান মানুষ করতে যে যেমন শ্রেণীর তার ক্ষেত্র বিশেষে অন্তহীন কষ্ট করেন।
বাবা-মা শেষ সময়ে এসে আশা করে সব সন্তান এক সাথে থাকবে নাতি পোতি নিয়ে থাকবে ,সন্তানদের সকল অর্থ তার হাতে আসবে।কম বেশি যে যাই করুক আয় তারা সম বন্টন করবেন। এটা প্রকৃতি গত ভাবনা। আবার বাস্তবে এটাই যন্ত্রনা। যে সন্তান নিজের বৌয়ের সাথে কিংবা নিজে নিজে করতে চাইবে একটা কিছু, আয়ের পথ, দেখা দেবে ঝামেলা,অশান্তি।
অপেক্ষাকৃত চতুর ছেলে বৌরা থাকবে দূর দূরান্তে ,মাঝে মাঝে দেখা দেবে ,তারাই থাকে ভালো।আর যারা কাছাকাছি তাদের মনে হবে শত্রু।বাবা মায়ের কাছে আজ এই ছেলে খারাপ তো কাল ঐছেলে। এই সব নিয়ে মন খারাপ করা উচিত নয়। প্রবাসে ছেলে থাকলে তাকে এই সব সাংসারিক সমস্যা না জানানো ভালো।বৌ আর স্বামী ফোনে তাদের সুখ দুঃখের ভালোবাসার কথাও শেয়ার করতে পারেনা অনেক পরিবারে ,সন্দেহ না জানি আজকের ঘটনা বলে দিলো কিনা ? যেমন ভাবে বাবা মা তেমন ভাবে বৌ.
আজ কাল নতুন উপদ্রব টেলিফোন ইন্টারনেট, সন্দেহ যেমন , অঘটনও ঘটছে অনেক।বছিলাম, বাবা মায়ের কথা। তাদের সাথে উচ্চস্বরে কথা বলা উচিৎ নয়. তারা যা ভালো মনে করবেন তাই করবেন। ন্যায় অন্যায় যাই হোক.বাবা মায়ের কি অন্যায় থাকতে পারে? যেই সব ছেলে অধিক আয় করে বাবা মাকে ,সুখ সাচ্ছন্দে রাখে তাদের উপর বাবা মা নাখোশ হলেও বা মায়ের বিরুদ্ধে কিছু না বলাই ভালো।
এই সব মাথায় আসার সাথে সাথেই ,অভিশাপ লিপিবদ্ধ হয়। যা তাৎক্ষণিক নয়, ব্যাবসা বাণিজ্যে লস, কর্মক্ষেত্রে অনুন্নতি, সমস্যায় জর্জরিত হয়, কঠিন পরিশ্রমের পর ও কামিয়াব না হওয়া । গানের কথায় বলি, মায়ের একধার দুধের দাম ,কাটিয়া গায়ের চাম পাপোশ বানাইলে ঋণের শোধ হবে না,আর পিতা যার আঙ্গুল ধরে প্রথম শুরু হয়েছে পথচলা ,আপনাকে একটা কর্ম পর্যন্ত নিয়ে আসতে যিনি দিনরাত করছেন পরিশ্রম ,তার বিরুদ্ধে কোন কথা থাকতে ই পারেনা। থাকা উচিত নয়. এতো কথা বলার কারণ একটাই ,বাবা-মা যে কাজে বা ব্যবহারে দীর্ঘশ্বাস ছাড়বে ,সেখানেই সব শেষ.যে কাজে হাত দিবেন হাত পুড়ে যাবে।পিতা মাতাই সন্তানের আসল পীর। আল্লাহ,নবী রাসূলের পর মা আর বাবার স্থান এমনিতেই বলে না. তাই না !
৮ সেপ্টেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস