মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বাবু
ঘরের বাইরে প্রথম যে দিন পা রাখি
সে দিন শতভাগ না হলেও পঁচানব্বই ভাগ সভ্য ছিলাম।
আজ মনে হচ্ছে শত ভাগ অসভ্য হয়ে গেছি !
ইস্যু যখন নারী,লঘু ,শিশু
প্রতিশোধ যখন রিপুর তাড়নায় ,উগ্রতায় প্রতিহিংসায়
তখন নিজেকে অসভ্য বলতেই পারি।
যখন দখল ,রাজনীতির কূটনীতির দাবার চালে
হেঁচড়ে নিয়ে আসি ধর্ম ,শান্তির চেয়ে দুর্গন্ধ যখন প্রিয়
আমি তখন শতভাগ অসভ্য বটে।
প্রিয়জনকে আড়ালে রেখে লোলুপ দৃষ্টি পরের তরে,
সভ্য আর রইলাম কই ? হয়ে গেলাম ছদ্মবেশী অসভ্য!
কারো অগ্রভাগে তৈল মর্দনে জলাঞ্জলি দেই বিবেকের,
পশ্চাৎ সপে দেই প্রাপ্তির লোভে,অন্ধের মতো
সত্য-অসত্য বিচার না করে হুজুগে দেই শ্লোগান ,
আদ্যপান্ত না ভেবে ঝাঁপিয়ে পড়ি,
স্তুতি বাক্যের কাব্য রচনায় পৌঁছুতে চাই খ্যাতির শীর্ষে
অসভ্যতার বাকি রইলো কি?
যখন গর্ভের ভ্রূণ হত্যা করি মাতৃ গর্ভে ,
কন্যা শিশুর অঙ্গ ছিঁড়ে, রক্তাক্ত করে,
খুন করে উল্লাস করি মর্দামীর !
তখন আমি নিজেকে অসভ্য দাবি করতেই পারি।
স্কুল গামী,কলেজ,বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্রী
,কর্মজীবী নারী পথে দেখলেই শীষ দেই গান গাই, লাঞ্ছিত করি
যৌতুকের বলিতে ফাঁসির দড়িতে ঝুলাই ঘরের লক্ষী
নির্যাতন করে হাসি জল্লাদের হাসি ,
দুর্বলতার সুজুগে অন্যের ঘরের বধূর সাথে
ফোনালাপ,প্রেমালাপে হয়ে যাই প্রেমিক ,
নিতে চাই অসভ্যতার নির্যাস !
পরকীয়ায় গড়ে তুলি ভালোবাসার তাজমহল!
এতিম করি শিশু পুত্র কন্যা , ভেঙে খান খান করি
সাজানো ঘর,সুখ স্বপ্ন কারো !
তখন আমি নিজেকে অসভ্য দাবি করতেই পারি।
গুম করি,খুন করি,পথে ঘাটে গাড়ি পুড়ি ,ব্যাবসা প্রতিষ্টান
বাড়ি ঘর লুট করি , সন্ত্রাসী,চাঁদাবাজি,দুর্নীতি ,প্রতারণা যখন পেশা
অসভ্য শিরোনামে গর্ব করতেই পারি !
চাটুকারিতে যদি তুলি তৃপ্তির ঢেকুর ,
কান্দু পট্টির দালালদের চোরা কারবারি ,দুর্নীতিবাজ ,খুনিদের
গলায় ফুলের মালা পরিয়ে, চেয়ারে বসইয়ে তুষ্ট হই ,
আমি অসভ্য ছাড়া আর কি ?
ভদ্রতার মুখোশে ,শিক্ষিত-অশিক্ষিত অসভ্যরা এক কাতারে!
অসভ্য হয়ে গড়ছি নতুন সভ্যতা ,জন্ম দিয়ে যাবো অসভ্য প্রজন্ম !
অসভ্যের নগ্ন উল্লাস বিশ্ব জুড়ে ,আমি বাকি থাকি কি করে?
আমি অসভ্যের ভাই,বন্ধু,পড়শী
আমায় গালি দাও অসভ্য বলে,আমি করবো অসভ্যের উল্লাস!
৫ অক্টোবর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস