সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৬, ০৭:৪১:৪৯

বিলীন অস্তিত্ব

বিলীন অস্তিত্ব

রেজাউল করিম রেজা: একটি ছেলে নাম রানা,  সে নেশা করে, রংবাজই চাদাবাজি সব ধরনের অপ কর্মের সাথে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেছে আস্তে আস্তে। সে হয়তো ভাবছে এটাই মজার জগত, যা চাই তাই পাই অথবা জোর করে  আদায় করে নেয়, মানুষ তাকে ভয় পায়,   এমনটা ভেবে সে মহা খুশি। সে নিজেকে সমাজের নায়ক ভাবে। আসলে সমাজ এই ধরনের মানুষকে ঘৃণা করে। একটি কুসন্তান তার পরিবারের জন্য কলঙ্ক।

বছর কয়েক আগের কথা একটি মেয়েকে ওই ছেলে অপহরণ করতে গিয়ে এলাকার মানুষের হাতে ধরা পরে যায়। সবাই তো ক্ষেপে গিয়ে তাকে মারতে গেলে তার পরিচয় জানতে চাইলে সে বলে সে ওই এলাকার সবার সম্মানের পাত্র এলাকার ভাল মানুষ হিসেবে পরিচিত খান মহাম্মাদ সাহেবের ছেলে। যিনি এলাকার কলেজের একজন সৎ প্রফেসার। তিনি হলেন এলাকার গর্ব। সবাই তার বাবার পরিচয় পেয়ে অবাক,  তুমি এত ভালো মানুষের সন্তান হয়ে এসব করে বেড়াও তোমার বাবার সম্মানের কথা একবার কি ভাবলে না। তোমার বাবা যদি এসব কথা  শুনে তবে কি  মনে কষ্ট পাবে না । যাও আজ তোমাকে কিছু বললাম না শুধু তোমার বাবার সম্মানের কথা ভেবে।

আজ জনগনের হাত থেকে তোমার বাবার সুনাম তোমাকে রক্ষা করল। চেষ্টা করো বাবার সম্মান নিজের মধ্যে ধরে রাখতে। কিন্তু ওই ছেলে যুগের হাওয়া গায়ে লাগিয়ে আরও খারাপ পথে চলতে লাগলো, বনে গেল এলাকার ত্রাস  । এক সময় ওই ছেলে বিয়ে করল, তার ২টি সন্তান ১ টি ছেলে ও একটি মেয়ে জন্ম নিল।

তার বাবা মারা গেছে। সে তার খারাপ পথ আজও ছাড়তে পারেনি। তার অসৎ টাকায় সন্তানদের লালন পালন করে একজন শিক্ষিত হয়েছে । তবে রানা জঘন্য হলেও সে তার অসৎ অপকর্মের টাকা দিয়ে তার সন্তানদের লালন পালন করলেও সে তার সন্তাদের তার খারাপ চরিত্র এর কোন প্রভাব পরতে দেয়নি ।

তবে মেয়েটি হয়েছে অনেক জ্ঞানী আর সু শিক্ষিত। ছোট বেলা থেকেই এলাকার কোন ছেলে মেয়ে রানার ছেলে মেয়েদের সাথে  মিশতে ভয় পেত। রানা এলাকার খারাপ মানুষ তাই কখন কোন ভুলে মার খেতে হয় । খারাপ মানুষের ছায়া ও নাকি খারাপ হয়।  

কেউ ভয়ে তার মেয়েকে প্রেম নিবেদনও করেনি এমন কি তার ছেলেকেও কোন মেয়ে। সবাই তাদের এরিয়ে চলতো। ছেলে মেয়ের বিয়ের বয়স হয়েছে কিন্তু কোন ভদ্র শিক্ষিত পরিবার থেকে প্রস্তাব আসছেনা । অনেক ঘটক লাগিয়েছে তবুও লাভ হচ্ছে না। সবাই ওই রানা গুণ্ডার নাম শুনলেই বিষয়টা এড়িয়ে যায়। এসব কথা শুনে তার মেয়ের ও ছেলের মন খারাপ থাকতো।

এমনি করে তাদের বয়স  বাড়তে লাগলো। রানা মেয়ের বিয়ের চিন্তায় মাথা খারাপ হওয়ার অবস্থা। এত টাকা খরচ করে ছেলে মেয়ে কে শিক্ষিত মানুষ বানিয়ে ও সে একটি ভদ্র শিক্ষিত পরিবারে তার মেয়ে কে বিয়ে দিতে পারছে না। সে তখন জেদ করে তার মেয়েকে ওই এলাকার তার মত বদ একটি ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক করল। যে নাকি সারারাত নেশা করে বাজারে মেয়ে নিয়ে ফুরতি করে।
 
ডাকাতি চাঁদাবাজি সবি তার নিত্য সাথি। কিন্তু তার মেয়ে কিছুতেই রাজি না। অবশেষে জোর করা তে তার মেয়ে আত্মহত্যা করে।এই শোকে তার ভাই ঘর ছেড়ে কথায় চলে গেছে কেও জানেনা।

একটি কথা রানার বাবা সৎ ভাল মানুষ ছিল বলে সে একদিন সমাজের মানুষের গণ ধোলাই খাওয়া থেকে বেচে গেছে। তাকে রক্ষা করেছে তার বাবার নাম সম্মান সততা । কিন্তু রানা কেন পারলনা তার মেয়ে কে বাঁচাতে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে, সুন্দর একটি জীবন উপহার দিতে। কেন পারলনা তার ছেলেকে ঘর ত্যাগ করা থেকে বিরত রাখতে। কেন পারলনা তার সন্তানদের সমাজের চোখে বড় করতে। যদি আপনি নাই পারেন আপনার সন্তান কে আপনার নামে গর্ব করে সমাজে মুখ উচু করে চলতে । তবে আপনার কোন অধিকার নাই সন্তানের বাবা হওয়া। আপনার অধিকার নাই কোন নতুন কুঁড়িকে ফুল হওয়ার আগে ঝরে যেতে বাধ্য করা। আপনার নাম যাতে আপনার সন্তান গর্ব করে বলতে পারে সেই ব্যবস্থা কি আমরা করে যেতে পারব?
১৯ ডিসেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪ডটকম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে