সোমবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৭, ১১:৩১:৩৫

কেঁদে হেরে যাননি, হেরে গিয়ে জিতেছেন অপু বিশ্বাস

কেঁদে হেরে যাননি, হেরে গিয়ে জিতেছেন অপু বিশ্বাস

জান্নাতুন নাঈম প্রীতি : অপু বিশ্বাস নামের অভিনেত্রীটি আজ (সোমবার) বিকেলে জানিয়েছেন, তিনি একজন স্বীকৃতিহীন মা এবং শাকিব খান তার সন্তানের পিতা। অপু বিশ্বাস বলছিলেন তার গর্ভবতী অবস্থায় একা হাসপাতালে নিজে বন্ডে সই করে অপারেশন থিয়েটারে ঢোকার কথা, যেটা সম্ভবত একজন মেয়ের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে নিষ্ঠুর মুহূর্ত।

আমি বিস্ময়ে থ হয়ে যাইনি, কেবল ভাবলাম- সেই বস্তি থেকে শুরু করে ওপরতলা, সমাজের মেয়েদের দশা ওই একই! জিম্মি হিসেবে জীবনযাপন করা। এই জিম্মি হওয়ার প্রধান উপকরণ হচ্ছে সন্তান।

তুমি বাংলা সিনেমাকে টেনে নিয়ে যাও, তুমি খুব ভালো কাজ করো, তুমি ডিরেক্টর প্রডিউসারদের কোটি কোটি টাকার মুখ দেখাও, কিন্তু আদতে তুমি একজন মেয়ে। যাকে হেরে যেতে হয় সমাজের কাছে, প্রতারক পুরুষের কথার মারপ্যাঁচের কাছে!

আমি অপু বিশ্বাসের প্রশংসাই করবো। কারণ আট বছর ধরে একটা বিষয় গোপন রাখা, সহ্য করে যাওয়া, প্রতিনিয়ত নানা মানসিক যন্ত্রণা তিনি একা সামলেছেন। শেষ মুহূর্তে যখন সহ্য করার মাত্রা অসহ্য হয়ে গেছে, সেই মুহূর্তে তিনি পারতেন আত্মহত্যা করে সান্ত্বনা কুড়াতেন। তিনি এসবের কিছুই করেননি। ক্যামেরার সামনে এসে সব বলেছেন, কেঁদেছেন এবং চেয়েছেন- সবাই সব কিছু জানুক।

পুরুষ হওয়া সম্ভবত খুব আনন্দের! নিজের সন্তানের জন্য ক্যারিয়ার যদি ধ্বংস হয়ে যায়, তবে সেই ক্যারিয়ারের কোনো দরকারই নেই। একটি মেয়েকে কেবল ঠকিয়ে যাওয়া যায় ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বলে। অথচ মেয়েদের কোনো ক্যারিয়ার নেই। কারণ তারা জিম্মি। সন্তানের বাবা হওয়া যায়, কিন্তু স্বীকৃতি দেওয়া যায় না! সেই স্বীকৃতিহীনতাকে পুঁজি করে ক্যারিয়ারে রঙ লাগানো যায়।

সন্তানের মা হলে একই সঙ্গে বাবাও হওয়া লাগে, যখন একা একা অপারেশান থিয়েটারে ঢুকেছেন তখনই বুঝিয়ে দিয়েছেন এই সমাজকে! অভিনন্দন অপু বিশ্বাস, আপনি পেরেছেন! অন্য নায়িকাদের মতন কেবল কেঁদে হেরে যাননি, হেরে গিয়ে জিতে গিয়েছেন!
লেখা-তরুণ লেখিকার ফেসবুক থেকে।
১০ এপ্রিল ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে