সাকিব জামাল: বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়েই আমাদের স্বপ্ন । যেকোন খেলায় বাংলাদেশের জয়ই আমাদের কাম্য । আমাদের আবেগ , আমাদের আকাঙ্খা বাংলাদেশকে নিয়েই । এখানে কোন সমঝোতা নাই । বাংলাদেশি হিসেবে আমার মুখে, আমার অন্তরে সবাস বাংলাদেশ শব্দই ধ্বনিত হয় । বাংলাদেশেরই জয়ই আমার অস্তিতের, আমার এগিয়ে যাওয়া জানান দেয় ।
এখন আসুন - আসলেই ক্রিকেটে আমরা কতটা বাংলাদেশি ? এর বিচার বিশ্লেষণ বেশ কঠিন বলেই আমার মনে হয় । তবুও একটু চেষ্টা করছি । তবে আমার মত আর আপনার মত ভিন্ন হতেই পারে !
পাকিস্তানের সমর্থক প্রসঙ্গে প্রথমেই বলি- এদেরকে 'রাজাকার' বলে গালি দেয়া হয় ! গালিটি কি আদৌ আপনি দিতে পারেন ? না, কারণ, যাকে আপনি রাজাকার বলছেন তিনি এ প্রজন্মের একজন যুবক বা তরুন ।তিনি কোন ভাবেই রাজাকার হতে পারেন না । তবে কথা হলো এই সমর্থক গোষ্ঠী যদি বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান ম্যাচে বাংলাদেশকে সমর্থন না করে পাকিস্তান সমর্থন করে তবে তারা অবশ্যই ক্রিকেটে বাংলাদেশি নন । কিন্তু পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ যদি বাংলাদেশ না হয়ে অন্য যেকোন দেশ হয় তবে যেকেউ যেকোন দেশকেই সমর্থন করতে পারে-যেদেশের খেলা যার ভালো লাগে । যেমন ফুটবলে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, জার্মানী এর সমর্থন আমাদের দেশে লোকজন করেন ।
তেমনি ভারতকে সমর্থন করলেই কেউ ভারতের দালাল হয়ে যায়না । তবে এই সমর্থক গোষ্ঠী যদি বাংলাদেশ বনাম ভারত ম্যাচে বাংলাদেশকে সমর্থন না করে ভারত সমর্থন করে তবে তারা অবশ্যই ক্রিকেটে বাংলাদেশি নন কিন্তু তাদের ভারতের দালাল বলা অতি রাজনীতি ।
ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ বাদে অন্য যেকোন দুটি দেশের খেলায়ও সমর্থকরা ভাগ হয়ে যায় । তবে এতে করে সে দেশ বিরোধী হিসেবে চিহ্ণিত হয়না ।
তবে পাকিস্তান, ভারত এ দুটি দেশের ক্ষেত্রে কেন বাড়াবাড়ি ?
কারণটি ১৯৭১ । ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি যুদ্ধ করে তারা আমাদের শত্রু । আর আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারত বন্ধুতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলো । এজন্যই আমরা দুদেশকে দুই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি ।
কিন্তু আপনি কি জানেন ???
বাংলাদেশের অধিনায়ক আমাদেরকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, খেলাটা মুক্তিযুদ্ধ নয়, এটা একটা খেলাই মাত্র ।
আমরা সবাই বাংলাদেশি । আমাদের মাঝে ক্ষয়িষ্ণু জাতীয় ঐক্য তরুন এবং যুব সমাজের মধ্যে সহিষ্ণুতা বৃদ্ধির মাধ্যমে পুন: প্রতিষ্ঠা করতে হবে ।বাংলাদেশের খেলার সময় যেন আমরা শতভাগ বাঙালি বাংলাদেশকেই সমর্থন করি এ প্রত্যাশা আমার ।অন্যান্য দলের মধ্যে যখন খেলার সময় আমরা যার যার ভালোলাগাকে গ্রহণ করে নিব- এই সহিষ্ণুতাই কিন্তু ক্রিকেটে আমাদের পুরোপুরি বাংলাদেশি হবার ক্ষেত্রে নিয়ামক হিসেবে ভুমিকা পালন করবে বাংলাদেশের খেলার সময় ।
সুতরাং খেলা নিয়ে আমাদের অতি রাজনীতি পরিহার করা উচিত । যুদ্ধাংদেহী সমর্থক না হয়ে খেলাকে খেলা হিসিবেই দেখা উচিত । কারন, খেলা বন্ধুতার প্রতীক, শত্রুতার নয় ।।
(বি:দ্র: সম্পাদক দায়ী নয়)
এমটিনিউজ২৪/টিটি/পিএস