বৃহস্পতিবার, ০৬ জুলাই, ২০১৭, ০৮:৪৪:২৭

প্রেমার্থ অভিশাপ: পর্ব-১

প্রেমার্থ অভিশাপ: পর্ব-১

লেখক- মেহেদী হাসান কৌশিক

অনেক ব্যস্ততার মধ্যেই কেটে যাচ্ছিল আব্রামের সময়। সকালে ঘুম থেকে উঠেই ফ্রেশ হতে না হতে কলেজে যাওয়ার সময় হয়ে যায়। আগেই বলে রাখা ভালো, আব্রাম মাস্টাসে পড়ুয়া একজন স্টুডেন্ট পাশাপাশি একটি প্রাইভেট কলেজের গেস্ট টিচার। কলেজের বেশ কিছু স্টুডেন্টদের আবার প্রাইভেট কোচিং করাতে হয়। সারাদিন খুব ব্যস্ততার মাঝেই কাটে আব্রামের দিনগুলো।

এসব যে নিতান্ত প্রয়োজনে করছে তা না, ভালো লাগাও আছে। শিক্ষার্থীরা তাকে নিজেদের আপন ভাইয়ের মত দেখে। সে নিজেও তার শিক্ষার্থীদের প্রচণ্ড ভালোবাসে। তাদের সকল সমস্যা তার কাছে বললেই হল, আব্রাম জানপরান দিয়ে চেষ্টা করে তা সমাধান করার জন্য। সদা হাস্যোজ্জল মুখের অবয়বে ঢাকা থাকে বদন।

সাহিত্য-সংস্কৃতি অনুরাগী ও ক্রিড়ামোদী ইত্যাদি তার বিশেষ খেতাব। নিজে যা জানেন তা অন্যের মধ্যে ঢেলে দিতে কমতি রাখেননি তিনি। খারাপ কিছু গুনও রয়েছে তার। যার মধ্যে মদমেজাজে সর্বশীর্ষে। যাকে ভালোবাসে তো বাসেই, যাকে একবার মন থেকে বাদ দিয়ে দেয় তাকে আর আগের মত গ্রহণ করে নিতে পারেন না আব্রাম। attitude boy ও বলা যায়।

বেশ কয়েকদিন হল তাকে মনমরা দেখাচ্ছেন! যতই সে ঠোঁট বজিয়ে চলার চেষ্টা করছে কিন্তু তা দৃশ্যমান। বন্ধুবর আব্রামকে অনেক অনুরোধের পর রাজি করালাম কি হইছে তার সাথে তা বলার জন্য। আমরা দুই বন্ধু মিলে চলে গেলাম নিরিবিলি স্থান ঘাটারচর ব্রিজে। তখন প্রায় রাত ৮টা...

আব্রাম বলতে লাগলো, ‘প্রায় মাস পাঁচেক আগে, আমার এক কাছের বড় ভাই অনুরোধ করেন তার আসন্ন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী Cousin কে পড়াতে। অনেক excuse দেখানোর পরও তাকে বুঝাতে না পেরে শেষমেশ পড়াতে রাজী হয়ে গেলাম। শুরু করলাম পড়ানো। ছাত্রটা আমার সাদাসিধে আর প্রচণ্ড খেলা পাগল, মাশরাফি আর মুস্তাফিজের বড়সড় fan.প্রচুর কথা বলে এক কথায় বাচাল। অল্প একটু ধমক দিলে আর পড়া মনোযোগ দিয়ে নিতোনা। তাই তেমন একটা ধমক দিতাম না।

বড় ভাইয়ের মত পড়াতে লাগলাম। তাদের বাসায় ছিলো তার আর এক অনার্স পড়ুয়া বড়বোন আর বাবা মা। ওর বড়বোনটা খুব চঞ্চল আর দুষ্ট ছিল। আমি পড়াতে বসলেও দুজন আমার অগোচরে দুষ্টামি করতো। সব সময় মিমির (ছাত্রের বোনের) হাসি লেগেই থাকতো ঐ সুন্দর মায়াবী মুখে। কিন্তু তার পরও কি যেনো অপূর্নতা তার ভিতর দেখতে পেতাম। কিছু একটা বিষন্নতা তার মধ্যে কাজ করতো, তা সে না বললেও আমি বুঝতে পারতাম। দুমাস পড়ানোর মধ্যে ওর (মিমি) সাথে তেমন কোন কথায়ই আমার হয়নি। একদিন Facebook এ এসে দেখি ও আমার friend list আছে। প্রথম প্রথম একটু আধটু কথা বলতাম chatting এ। এভাবে নিয়মিত কথা বলতে লাগলাম, এক সময় used to হয়ে গেলাম। আমরা এক সময় বন্ধুত্ব করে ফেললাম। ও মাঝে মাঝেই আমাকে জিজ্ঞাসা করতো আমি কাউকে ভালোবাসি কিনা। আমি 'হ্যা' বলতাম, ও দেখতে চাইলে আমি শ্রুতি হাসানের ছবি দেখাতাম। সেটা নিয়ে হাসাহাসি.....

এভাবে এগোতে এগোতে একদিন আমরা বাহিরে দেখা করার সিদ্ধান্ত নিলাম। পড়ন্ত বিকেল বেলায় তাকে তার বাসার সামনে হতে গাড়ী করে নিয়ে গেলাম মহাকালের সেই প্রিয় ব্রীজের উপর। সত্যি সেদিন দখিনা হাওয়ায় আর পূর্ণিমা চাঁদের আলোয় দেখেছিলাম অপূর্ব মিমিকে। তখনই আমি তার প্রেমে পড়েছিলাম। মনে চাচ্ছিল না সেখান থেকে আসতে, কিন্তু ও ওর বাবার ভয়ে তাড়াতাড়ি চলে আসলো। রাতে ফোনে অনেক কথার পর আমি তাকে propose করি। সে বলল আমি তো এটা তোমার কাছ থেকে অনেক আগেই আশা করছিলাম। শেষমেশ আমাদের প্রেম শুরু হয়.....
(২য় পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন)
০৬ জুলাই ২০১৭/এমটি নিউজ/আ শি/পিএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে