মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ: পরীক্ষায় খারাপ করলে বিয়ে দিয়ে দেব বলে একটা হুমকি আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে। অথচ খেলায় খারাপ করলেও বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতদিন জানতাম মানুষ পরিবর্তনশীল। এখন মনে হচ্ছে হুমকিও পরিবর্তনশীল।
একথা শোনার পর এক বড় ভাই বললেন, তাসকিনকে কয়েকদিন পরে দিয়ে দেওয়া উচিত ছিল। তার যুক্তি: সাউথ আফ্রিকায় খারাপ খেলার কারণে তাসকিনের বিয়ে দেওয়া হলো, এটা যদি দলের অবিবাহিত খেলোয়াড়রা বিশ্বাস করতে শুরু করে তাহলে আর জয়ের মুখ দেখতে হবে না। ওরা ইচ্ছে করে খারাপ খেলবে এবং দেশে ফিরে বিয়ের পিঁড়িতে বসবে।
সাউথ আফ্রিকায় তিন ওয়ানডে, এক টেস্ট ও দুই টি-টোয়েন্টিতে তাসকিনের শিকার দুই উইকেট। তারপরই দেশে ফিরে বিয়ে। ফলে কথাটাকে একেবারে উড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই।
দুয়েকটা ঘটনা থেকে জেনেছি, আমাদের খেলোয়াড়রা এমনিতেই অল্প বয়সে বড় হয়ে যায়। ফলে এমন আশঙ্কা মনে আসতেই পারে যে, বিয়ে করার জন্য অবিবাহিত খেলোয়াড়রা ইচ্ছে করে খারাপ খেলবে।
তখন পাশ থেকে আরেক ভাই বলল, সবাই বিয়ে করে ফেললে তো ঝামেলা চুকে গেল।
বিয়ে করলে ঝামেলা চুকে যায়, না ঝামেলা ঘরে ঢুকে যায় সেটা লম্বা বিতর্কের বিষয়। এক শিল্পী তো গান বেঁধেছিলেন, ‘দাদা বিয়ে করলাম ক্যান- আমার ঘরে আমি মেম্বর পরের মাইয়া চেয়ারম্যান।’
এমন অবস্থা হলে ক্রিকেটাররা কী গাইবেন? ‘আমার ঘরে আমি প্লেয়ার, পরের মাইয়া ক্যাপ্টেন, ও দাদা বিয়ে করলাম ক্যান।’
অবশ্য ২২ বছর বয়সী তাসকিনকে এমন গান গাইতে হবে না হয়তো। কেননা তার বয়স ২২ হলেও প্রেমের বয়স কিন্তু আট বছর। খেলার মাঠে অভিজ্ঞতা কম হলেও প্রেমের মাঠে কিন্তু কম না।
তাসকিন সাউথ আফ্রিকায় উইকেট ভাঙ্গতে না পারলেও বিয়ের মধ্য দিয়ে লাখো তরুণীর মন ভেঙ্গেছেন একথা নিশ্চিত।
অবশ্য টমাস মিল্টন বলেছেন, ‘ভালবাসা এমন একটি প্লাটফরম যেখানে সব মানুষ দাঁড়াতে পারে।’ সেই সূত্রে তরুণীদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। ক্রিকেটে ১১ জন খেলোয়াড়ের বাধ্যবাধকতা থাকলেও ক্রাশ খাওয়ার ব্যাপারে বাধ্যবাধকতা নেই।
তরুণীসমাজ এত সহজে হাল ছাড়বে বলে মনে হয় না। তারা ‘তাসকিনের বিয়ে মানি না’ নাম দিয়ে ফেসবুকে ইভেন্ট খুলে ফেলেছে। কিন্তু তরুণীসমাজ হয়তো ভুলে গেছে যে, তারা নির্বাচক কমিটির কেউ না। ফলে দল নির্বাচনের মতো বউ নির্বাচনে তাসকিন তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকবেন না।
ক্রিকেটার তাসকিন হাতছাড়া তো কী হয়েছে? ঢাকা অ্যাটাকের নীল চোখের তাসকিন তো আছে। তার উপরেও সমানে ক্রাশ খাওয়া চলছে। এ অবস্থা দেখে সেই বড় ভাই বললেন, ‘সবাই শুধু তাসকিনদের উপর ক্রাশ খায়। ভাবতেছি নিজের নাম বদলে “তাসকিন” রাখব।’
এমন সময় পাশ থেকে আরেক বড় ভাই দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন, এত খুশি হওয়ার কিছু নেই। বিয়ে নিয়ে এক মনিষী বলেছেন, “আমি আর আমার স্ত্রী জীবনের ২৫টা বছর বড় আনন্দে কাটিয়েছি। তারপর আমাদের পরিচয় হলো।”
ঘটনা যাই হোক, ক্রিকেটার তাসকিন ও মিসেস তাসকিনকে শুভেচ্ছা। গুড লাক তাসকিনস।
(সম্পাদক দায়ী নয়)
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস