নুসরাত মোহনা: মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বাংলাদেশ দলের একজন নির্ভর যোগ্য সদস্য গত এক দশক ধরেই। তারপরও মাঝে মাঝেই যখন তার খেলা দেখি মনে হয় তার যতটুকু প্রতিভা আছে তাঁর প্রতি ঠিক ততটা সুবিচার আমরা করতে পারিনি।
ঠিক কত কত ম্যাচে কারো কারো কয়েকটি ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের কাছে তার দিনের পর দিন ধারাবাহিক ভালো পারফরম্যান্স গুলোর পরও তাকে পার্শ্বনায়কের চরিত্রে থাকতে হয়েছে ।
তিনি একজন অনেক ভালো অলরাউন্ডার হওয়া সত্ত্বেও তার বোলিং ক্ষমতার প্রতি উপেক্ষা এবং অতি অল্প ব্যবহার বরাবরই আমার ব্যক্তিগত হতাশার কারণ। পর্যাপ্ত সুযোগ পেলে তিনি কি করতে পারেন তা শেষ বিপিএল আসরে তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন। বলতে গেলে শুধুমাত্র এই বোলিং আর অসাধারণ ক্যাপ্টেন্সির মাধ্যমে একটি অতি সাধারণ দলকে অনেক গুলো ম্যাচ জিতিয়েছেন।
জাতীয় দলে তাকে খুব একটা বোলিং এর সুযোগ দেয়া হয়না। তবে যখনই সুযোগ পান রান দিতে সবসময়ই কিপটেমিই করেন এবং অনেক সময় অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক থ্রু ও এনে দিয়েছেন তিনি। তবে অবশ্যই বাংলাদেশ দলের ক্যাপ্টেনদের বুদ্ধি বিবেচনার সামনে আমার স্বল্প ক্রিকেটীয় জ্ঞান নিয়ে তর্কের মতন বোকামি আর হয় না,তাই বোলিং নয় বরং ব্যাটিং পজিশন নিয়ে একটু বলি।
ক্যারিয়ার জুড়েই রিয়াদের ব্যাটিং পজিশন নিয়ে নানান এক্সপেরিমেন্ট করা হয়ছে । কখনো ৩ এ কখনো ৪ এ কখনো ৬ এ কখনো ৭ এ এমন কি ২ বার, এমনকি ৮ নম্বরেও ব্যাটিং এ নামতে হয়েছে তাকে।
প্রত্যেকেরই নিজস্ব ব্যাটিং স্টাইল থাকে। তিনি কখনোই হার্ড হিটার ব্যাটসম্যান ছিলেন না । তিনি সেট হতে সময় নেন এবং সেট হয়ে যাওয়ার পর ইনিংস লম্বা করতে পারেন। অথচ তাকে এখন প্রতিনিয়ত ভাবে ৬ নম্বরে ব্যাট করতে হচ্ছে যেখানে আমাদের প্রয়োজন একজন হার্ড হিটার ব্যাটসম্যানের । যার ফলে সময় পেলে যে ইনিংস গুলোতে শতক হাঁকাতে পারতেন, সেখানে হাফ সেঞ্চুরি করেই খুশি থাকতে হচ্ছে এবং রান রেট এবং বলের এর সাথে তাল মিলাতে গিয়ে আউট হয়ে যাচ্ছেন।
অপরদিকে সাব্বির রহমান এর অভিষেকের পর থেকেই বাংলাদেশ দলে একজন হার্ড হিটার ব্যাটসম্যানের জন্য যে হাহাকার দেখা দিয়েছিল সেটা প্রায় মিটে যেত । বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে প্রমিজিং ইয়াংস্টার দের মধ্যে সাব্বির রহমান ছিলেন এবং আমি মনে করি এখনো আছেন।
তিনি সব বলকেই পেটাতে পছন্দ করেন। বিপিএলে গেইলের রেকর্ড ভাঙা তাঁর ১২২ রানের অপরাজিত ইনিংস অনেক বছর চোখে ভেসে থাকবে। আমি মনে করি না তার নিজস্ব এই স্টাইলে খেলতে কোন সমস্যা আছে । অথচ তাকে ৬ থেকে হুট করে ৩ নম্বর ব্যাটসম্যানে পরিণত করার কারণ আমার বোধগম্য নয়।
৩নম্বরে নামা একজন ব্যাটসম্যানের দায়িত্ব উইকেটে টিকে থেকে ইনিংস বিল্ড আপ করা। উচ্চ স্ট্রাইক রেটে রান বলের সমতা করার কাজ শেষের দিকে ৬-৭ নম্বর ব্যাটসম্যান করে থাকেন সাধারণত ।
এই দুই চরিত্রের দুইজন ব্যাটসম্যান কে আমরা বিপরীত পজিশনে খেলতে তবে কেন বাধ্য করছি?
এমটিনিউজ২৪/টিটি/পিএস