পাঠকই লেখক ডেস্ক : সারা দেশে প্রতিনিয়ত যৌতুকের কারণে নারী-নির্যাতনের ঘটনা বেড়েই চলেছে। যৌতুকের লোভে হত্যা সহ মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন বেড়েই চলেছে। দেশের প্রচলিত আইনে যৌতুক লেনদেন উভয়ই সমান অপরাধ। কিন্তু অনেকেই জানেন না কিভাবে আইনের আশ্রয় নিতে হয়। থানায় না আদালতে মামলা করবেন। দেনমোহর বা মোহরানা ব্যতীত বিবাহের আগে বা পরে বিবাহের পণ হিসেবে বর-কনে পক্ষ ৫০০ টাকা অধিক কিংবা যেকোনো সম্পত্তি বা মূল্যবান জামানত প্রদান করে বা প্রদান করতে অঙ্গীকারবদ্ধ হয় তা যৌতুকের আওতাভুক্ত।
ফৌজদারী আদালতে মামলাঃ
১৯৮০ সালের যৌতুক নিরোধ আইনে এ ধরনের অপরাধ আমল-অযোগ্য এবং আপস-অযোগ্য। যদি কোনো ব্যক্তি বর বা কনের পিতা-মাতা বা অভিভাবকের নিকট হতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো যৌতুক দাবি করে কিংবা কোনো ব্যক্তি যৌতুক প্রদান বা গ্রহণ করে অথবা প্রদান বা গ্রহণে যদি প্র্ররোচনা বা উৎসাহ দেয় তবে এ আইনের বিধান মতে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করতে হয়। কোনো ব্যক্তি যৌতুক প্রদান বা গ্রহণ করে অথবা প্রদান বা গ্রহণে যদি প্ররোচনা বা উৎসাহ দেয় তাহলে তার পাঁচ বছর পযন্ত কারাদন্ডাদেশ হতে পারে এবং এক বছরের কম নয় এমন কারাদন্ডে বা জরিমানায় কিংবা উভয়বিধ দন্ডেদন্ডিত হবেন। এই আইনের ৭ ধারার অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পর এক বছরের মধ্যে অভিযোগ না করলে আদালত এ ধরনের অভিযোগ আমলে নেবে না।
থানায় নিয়মিত মামলাঃ
২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের বিধান মতে যৌতুক দাবীর অপরাধ আমল-যোগ্য। যদি কোনো নারীর স্বামী অথবা স্বামীর পিতা, মাতা, অভিভাবক, আত্মীয় বা স্বামীর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি যৌতুকের জন্য কোনো নারীর মৃত্যু ঘটান বা মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টা করেন কিংবা উক্ত নারীকে মারাত্মক জখম করেন বা সাধারণ জখম করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে এ আইনের ১১ ধারা মোতাবেক থানায় কিংবা আদালতে মামলা করা যাবে। কোনো ব্যক্তি যৌতুকের জন্য কোনো নারীর মৃত্যু ঘটান বা মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টা করেন কিংবা উক্ত নারীকে মারাত্মক জখম করেন বা সাধারণ জখম করেন তাহলে ওই স্বামী, স্বামীর পিতা, মাতা, অভিভাবক, আত্বীয় বা ব্যক্তি, মৃত্যু ঘটানোর জন্য মৃত্যুদন্ডে বা মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টার জন্য যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডনীয় হবেন এবং উভয় ক্ষেত্রে ওই দন্ডের অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হবেন। মারাত্মক জখম করার জন্য যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে অথবা কমপক্ষে পাচঁ বছর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হবেন এবং ওই দন্ডের অতিরিক্ত অর্থদন্ডে দন্ডনীয় হবেন। সাধারণ জখম করার জন্য তিন বছর সশ্রম কারাদন্ডে অথবা কমপক্ষে এক বছর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হবেন এবং ওই দন্ডের অতিরিক্ত অর্থদন্ডে দন্ডনীয় হবেন।
জনসচেতনায়- মোঃ সাব্বির রহমান, ওসি(তদন্ত), বাঞ্ছারামপুর মডেল থানা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস