দৃশ্যপট ১
তখন আমি ৮ম শ্রেনীতে পড়ি, বৃত্তি দিবো। ক্লাসের সবাই পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত। আমিও এর বাইরে না। যেহেতু আমি গার্লস স্কুলে পড়তাম। আর স্কুলটা ছিল নতুন তাই স্কুলে খুব বেশি স্যার/ম্যাম ছিল না।
খুব গুরুত্বপূর্ন ক্লাশগুলো মাঝে মাঝেই হতো না। তো একদিন বাংলা ২য় পত্রের ক্লাশটা হলো না। আমি বইটা সামনে নিয়ে গিয়ে আর একটা মেয়েকে বলছিলাম যে, এই রচনা গুলা গুরুত্বপূর্ন।
এমন সময় এক মেয়ে (রহিমা) বলে উঠলো "হ্যাঁ সবই ইম্পরট্যান্ট, তুমি সব পড়। পড়ে তোমার বড় ভাই এর মত ডাব্বা মারো।" কথাটা শুনে খুব কষ্ট পেয়েছিলাম সেদিন। খুব কষ্টে সেদিন চোখের পানি আটকেছিলাম।
আমার ভাই এর দোষ ছিল যে সে এস.এস.সি তে ফেল করেছিল। এই ঘটনার এক সপ্তাহ পর শুনলাম রহিমার বিয়ে হয়ে গেছে। তারপর আর সে স্কুলে আসে নি।
আমি কিন্তু ফেল করিনি এবং এখনও পড়ালেখা করছি। আমার একটা ইচ্ছা আছে জানি না ঠিক হবে কিনা। যদি কোন দিন রহিমার সাথে দেখা হয় তো ওকে জানাবো আমি ফেল করি নি।
দৃশ্যপট ২
এস.এস.সি পরীক্ষা শেষ। বেড়াতে গেলাম আম্মার ফুফাতো বোনের বাড়ি মানে খালা বাড়ি। এক খালাতো বোন ছিল যে কলেজে পড়ত। আর আমি সব সময় ওই আপুর সাথে থাকতাম।
একদিন দুপুরে কথায় কথায় আপু বলে বসল "খাটো মানুষ আল্লার শত্রু। আল্লাহ খাটো মানুষ পচ্ছন্দ করে না।" আপু এটাও বলল আপু নিজেও খাটো মানুষ সহ্য করতে পারে না।
আমি সেদিন বুঝতে পারিনি কথা গুলো আমাকে বলা হচ্ছে ৷ পরদিন আপুকে হঠাৎ করেই দেখতে আসে এবং ওই ছেলের সাথে বিয়ে হয়। সবচেয়ে বড় কথা ছেলেটা খাটো আর আপুর ছেলেটাও হয়েছে খাটো।
কথা বলার সময় খেয়াল করবেন কেউ যেন কষ্ট না পাই। মনে রাখবেন কারো চোখের পানি আপনাকে পুড়াতে না পারলেও ডুবাতে পারে।
লেখিকাঃ Colourless Pain