আর কত বাড়াব ভিক্ষার হাত
পাঠকই লেখক ডেস্ক: আমার বেদনাদায়ক জ্বালাময়ী স্মৃতি থেকে বলছি। যা আজও আমার স্মৃতি পটে স্বাধীন দেশের পতাকার মতো দাঁড়িয়ে আছে। হারায় না কিছুই, যত কথা যত গান, সবই থাকে, ভুলে থাকে সে তো নয় ভোলা; বিস্মৃতির মর্মে বসিয়ে রক্তে মোর দিয়াছে যে দোলা।
আমার দেখা বাল্যকালের বেদনাদায়ক বিস্মৃত ঘটনা আজ মনের মধ্যে হঠাৎ ঝিলিক মেরে উঠে, আমার এই বেসুরো ছিন্ন জীবন,বীণায় বেদনার ঝংকার তোলে। তখন সময়টা ছিল সন্ধ্যার কিছুক্ষণের পূর্বে, আকাশে ছিল ঘন গাঢ় কালো মেঘে আচ্ছন্ন। মাঝে মাঝে মেঘের গর্জন। কিছু বাতাসের গতি যা উলট পালট করে দিচ্ছে, এরই মাঝে একটি ছোট ছেলে মনে হয় ৬ বছর বয়স পরণে ছিল পেন্ট গায়ে সবুজ গেঞ্জি এরই মাঝে ছেলেটি এসে আমার পাশের একজন কে বলল আমাকে পাঁচটা টাকা দিবেন আমি আজ সারা দিন কিছুই খাইনি। আমার মা আমাকে খাবার দেয়নি, আমি কাজ করতে পারিনি বিদায়, আমি আমার পরশ মাখা চোখের বুলি দিয়ে তাকিয়ে রইলাম, আর মনে মনে ভাবলাম যে, আজ যে ছেলে থাকার কথা মায়ের বুকে সে আজ রাস্তার ফুটপাতে ক্ষুধায় কাতর। আমি দেখতে পেলাম লোকটি ছেলেটিকে ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দিল। আমার ইচ্ছা ছিল ছেলেটাকে কিছু টাকা দিতে, কিন্তু বিধাতা সেই দিন কেন যেন পকেটটা শূন্য করে রেখেছিল।
এরই মাঝে শুরু হল তুমুল ঝড়, গাঢ় অন্ধকার, শুরু হলো ঝড়ের তান্ডব, বিঝলী চমকানো আলোর শুধু হুহু শব্দ আর গাছপালা ভাঙ্গার মতো মড়মড় শব্দ। ঐ ছোট ছেলেটি অন্ধকারে কোথায় যেন চলে গেছে। আবার রাস্তায় খুব কম সংখ্যক গাড়ি চলছে। এরই মাঝে ঐ অন্ধকার থেকে আর্তচিৎকার শুনতে পেলাম, কিন্তু কিছুই বুঝতে পারলাম না। ঘন্টা দুয়েক পর যখন আকাশটা দেখি পরিষ্কার ।
রাস্তায় মানবের ঝটলা পেকেছে আমি সাথে সাথে ভিড়ের ভেতর যাই গিয়ে দেখি ঐ ফুটফুটে ছোট ছেলেটি তার মাথার উপর দিয়ে গাড়ি যাওয়ায় তার মাথা পিশে যায় রাস্তার সাথে। তাজা লাল রক্তগুলো মিশে যায় রাস্তার সাথে। তাজা লাল রক্তগুলো ভাসছে। যা আজ ও আমার এ হৃদয় দেহকে গুমরে কাঁদায়। আর আমার হৃদয় জড়ানো ব্যথা বলে উঠে, আর কত বাড়াব ভিক্ষার হাত ...?
লেখক: মোঃ সেলিম মিয়া
গ্রাম- ভিটিপাড়া, ডাকঘর- সিংহশ্রী,
উপজেলা- কাপাসিয়া, জেলা- গাজীপুর।
১০ ডিসেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এইচএস/কেএস
�