বিচিত্র জগৎ ডেস্ক: ৯০-এর দশকে ভারতের প্রথম সারির মডেলদের মধ্যে আলোচিত নাম গীতাঞ্জলি নাগপাল। ক্যারিয়ারের সুবর্ণ সময়ে তার রূপের চর্চা চলত বলিউডের অলি-গলিতে। জনপ্রিয় অভিনেত্রী মাধুরী দীক্ষিতের সঙ্গে তার তুলনা করা হতো। নামজাদা ডিজাইনার থেকে ফটোগ্রাফার-প্রায় সবার সঙ্গেই কাজ করেছেন গীতাঞ্জলি নাগপাল। গ্ল্যামার জগতের চাকচিক্যে চোখ ধাঁধিয়ে গেলেও শেষ জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। আর সেই অন্ধকারেই হারিয়ে যাওয়া এক জীবনের উদাহরণ গীতাঞ্জলি।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর, দিল্লির লেডি শ্রীরাম কলেজ থেকে পাশ করা গীতাঞ্জলি মডেলিং শুরুর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই সাফল্যের শিখরে পৌঁছে যান। সাবেক বিশ্ব সুন্দরী সুস্মিতা সেনের মতো অভিনেত্রীদের সঙ্গে র্যাম্পে হেঁটেছেন তিনি। কিন্তু শীর্ষ মডেল থাকা অবস্থায় জড়িয়ে পড়েন মাদকের জালে। সে সময় নিজের কাজের থেকেও নেশার জন্যই খবরের শিরোনামে থাকতেন তিনি। এরপর পরিবারের অমতে বিয়ে করেন রবার্ট নামের এক জার্মান নাগরিককে। তবে কিছুদিনের মধ্যেই সেই বিয়ে ভেঙে যায়। এরপর এক ব্রিটিশ নাগরিকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। সেই সম্পর্কে থাকাকালীনই গীতাঞ্জলি মডেলিং থেকে দূরে সরে যান। বেশ কয়েকবছর পর ২০০৭ সালে এক ফটোগ্রাফার তাকে দিল্লির রাস্তায় ভিক্ষা করতে দেখেন। দিল্লির মহিলা কমিশন তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান এবং তার দেখভালের দায়িত্ব নেন। প্রাথমিক চিকিৎসার পর গীতাঞ্জলির ঠাঁই হয় ‘বিদ্যাসাগর ইন্সটিটিউট অব নিউরো সায়েন্সে’।
তিনি বলেন, খাবারের টাকা রোজগারের জন্য ভিক্ষা থেকে দেহব্যবসা-সবই করেছি। ২০১৩ সালে গীতাঞ্জলির মৃত্যু হয়। জাঁকজমকপূর্ণ জীবন থেকে অবহেলায় মৃত্যুর পুরোটাই যেন সিনেমার মতো ছিল তার বাস্তব। গীতাঞ্জলি লাইম লাইট থেকে সরে গেলেও বিতর্ক তার পিছু ছাড়েনি। ২০০৮ সালে মধুর ভান্ডারকরের ‘ফ্যাশন’ সিনেমাটির একটি চরিত্র গীতাঞ্জলির জীবনের উপর ভিত্তি করেই তৈরি হয়েছিল। দিল্লি মহিলা কমিশন এই সিনেমাটি বন্ধের দাবি নিয়ে কোর্টে গেলেও কোনো ফল মেলেনি।
পরবর্তী সময়ে অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত স্বীকার করেন যে ‘ফ্যাশন’-এ তার চরিত্রটি মিস নাগপালের উপর ভিত্তি করেই হয়েছিল। এই চরিত্রে অভিনয় তাকে পরিচালকদের নজরে নিয়ে আসে এবং সেরা পার্শ্ব-অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতে নিতে সাহায্য করে।