বিচিত্র জগৎ ডেস্ক: বিনামূল্যে লাখ টাকার অপারেশন করেন অধ্যাপক ডা. সায়েবা আক্তার। অবসরকালীন প্রভিডেন্ট ফান্ডের ৩৫ লাখ টাকা ভেঙে অসহায় ফিস্টুলা রোগীদের জন্য রাজধানীর মগবাজারে প্রতিষ্ঠা করেন মামস ইন্সটিটিউট। নিবেদিত প্রাণ বন্ধু, স্বজন, শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকদের সহযোগিতায় রোগীদের প্রাণের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে তার প্রতিষ্ঠানটি। ফিস্টুলামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সরকারের সহযোগিতায় এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ ইন্সটিটিউট গড়ার স্বপ্ন দেখছেন স্বনামধন্য এই চিকিৎসক। সময় টিভি
সপ্তাহে ৩ দিন ফিস্টুলা, প্রলাপসসহ প্রসবের আঘাতজনিত ১০ থেকে ১২টি অপারেশন করেন সায়েবা আক্তার। সবসময় তার ডাকে সাড়া দেন ২০ থেকে ২৫ জন শিক্ষার্থী ও ৬ থেকে ৭ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নিবেদিত প্রাণ একটি দল। ৩ মাসে ৩ দফা অপারেশন শেষে সুস্থ জীবনে ফিরতে পেরে আনন্দের শেষ নেই শেরপুরের খুকিয়া বেগমের। ২৪ ঘণ্টায় প্রস্রাব পায়খানা ঝরতে থাকায় আক্রান্তরা স্বামী পরিবার ও সমাজের কাছে চরমভাবে নিগৃহীত। তীব্র দুর্গন্ধ ছড়ানোর সাথে শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণায় পাগলপ্রায় প্রতিটি রোগীই তাই আত্মহারা এমন মহৎপ্রাণের সান্নিধ্য পেয়ে।
রোগীরা বলেন, কতো কষ্ট করেছি, মানুষের কাছে বসতে পারি নাই। টাকা পয়সা ছিলো না এখানে আসার চারদিন পর অপারেশন হয়েছে। ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত ২০ শয্যার হাসপাতালে দ্বিগুণের বেশী চাপ থাকে বছরব্যাপী। দক্ষ জনবল তৈরির মাধ্যমে কিভাবে কয়েকগুণ রোগীকে চিকিৎসা দেয়া যায় সেই ভাবনায় বিভোর রক্তক্ষরণ বন্ধে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সায়েবাস মেথডের জনক ডা. সায়েবা।
তিনি বলেন, ভবিষ্যতে এদের জন্য কারা কাজ করবে। একটা সত্যিকারের ইন্সটিটিউট দেখে যেতে পারাটা আমার জীবনের বড় লক্ষ। সরকার যদি আমাদের একটি জায়গা দেয় যেখানে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ একটা প্রতিষ্ঠান গড়তে পারবো।
প্রতিটি ফিস্টুলার অপারেশন ব্যয় ৮০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। আক্রান্ত ২০ হাজারের প্রায় সবাই অসহায় হতদরিদ্র হওয়ায় চিকিৎসার ব্যয় মেটাতে পারেন না কেউই। তাই এসব রোগীদের চিকিৎসায় ডা. সায়েবার মত চিকিৎসক ও সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের।