পাঠকই লেখক ডেস্ক: সকালে বাবাকে ফোন দিয়ে বললাম, বাবা টাকা লাগবে।
বাবা উত্তরে বললেন, 'বাবা আজকে তো টাকা পাই নাই, কাল টাকা পেলে পাঠিয়ে দিবো'।
আমি জানতাম, বাবার কাছে ঐ মূহুর্তে টাকা নাই।
তারপরও বলেছি কারণ টাকার খুব প্রয়োজন। তারপর আমি বললাম, 'আচ্ছা বাবা ঠিক আছে.. আমার কাছে কিছু আছে চলে যাবে দুই দিন'।
বাবা হেসে বললেন, আচ্ছা ঠিক আছে...
আমি বুঝতে পেরেছিলাম ওই হাসির পেছনে অনেক কষ্ট আছে।
মধ্যবিত্তের জীবন বড়ই কঠিন। এই ধরনের জীবন মানেই মনের মতো করে গড়ে তুলা কিছু স্বপ্ন ও আশাকে নিজ হাতেই গলা টিপে হত্যা করা। প্রতিদিন কাটে এক একটি আশা নিয়ে। এর ভিতর থাকেই আনন্দ, কষ্ট।
তবে কষ্টের ভাগটাই মনে হয় বেশি।
অভাব আর টাকা এই দুটো যেন মধ্যবিত্তের খুব পরিচিত। একটি নিত্যদিনের সঙ্গী আরেকটি মরীচিকা। একটি পিছু ছাড়ে না আর একটি ধরতে গেলে ধরা দিতে চায় না।
বাস্তবতা সেতো আরেকটি নিষ্ঠুর পরিচিত মুখ। কতো স্বপ্ন ধুলিস্যাত করে দেয়। আর দিবেই না কেন? মধ্যবিত্ত যে তার চরম শত্রু। টাকাকে দূরে সরিয়ে দেয়াটাই তার কাজ।
বিত্তবানদের জন্য ভাই বাস্তবতা যেন টাকা দিয়ে কেনা। আর হবে না কেন টাকা যে তাদেরকেই চেনে।
আমরা মধ্যবিত্তের ছেলেরা না পারি টাকার জন্য হাত পাততে, না পারি সমাজের অন্যদের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে। একটু মানিয়ে চলতে গেলেই প্যান্টের পকেট ফোঁটা হয়ে যায়। স্বাদ থাকলেও সাধ্যটা যেন হয়ে উঠে না।
Enjoy এই শব্দটা বলতে আমি টাকা ছিটিয়ে মজা লোটা শিখিনি। শিখেছি মা-বাবার মুখের হাসি Enjoy করতে।
সত্যিই মধ্যবিত্ত মানে বাস্তবতার সাথে যুদ্ধ করা। তবে জীবনে আর কিছু না পারলেও বাস্তবতার
সংজ্ঞা, মা-বাবার মুখে হাসি ফোঁটাতে পেরেছি। যদি অভাব না থাকতো, বস্তা ভরা টাকা থাকতো, তাহলে বাস্তবতা বুঝতাম না। হয়তো ওই হাসির মর্মও বুঝতাম না। দোয়া করি বাকি জীবনটা যেন Enjoy শব্দটা এভাবেই ব্যবহার করতে পারি।
লেখক: ইকতিয়ার নেওয়াজ
বি:দ্র: সম্পাদক দায়ী নয়
২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি