তারেক হাসান: চৌত্রের দাবদাহ খরা পেরিয়ে আসে বৈশাখ। সূচনা হয় আবারো একটি বাংলা নতুন বছরের। নতুন বছরকে বরণ করে নিতে, মেতে উঠে বাংলার সকল স্তরের মানুষ। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্বাগত জানায় বৈশাখের শুরুতে। আর তারই ধারাবাহিকতায় বাংলার মানুষ আনন্দে মেতে উঠে বৈশাখী মেলায়।বলা চলে এটা একটি প্রাচীন ঐতিহ্য। বৈশাখ মনে করিয়ে দেয় আমার শৈশব। আমার শৈশবে,,,,
আমি ছোট সময় ধানের মাচার একটি বাঁশ ফোটা করতাম। আর তার ভিতরে পয়সা জমা করে রাখতাম বছর অব্ধি। পহেলা বৈশাখে সেই বাঁশের ভিতর থেকে পয়সা বের করতাম, আর গুনে মার কাছে জমা রাখতাম। আমাদের পাশের গ্রামেই প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ জমে বৈশাখী মেলা। অনেক দূরদূরান্ত মানুষ আসতো সেই মেলায়। সেদিন পহেলা বৈশাখ আমিও মেলায় যাবো বাবার সাথে, বেলা বাড়ার সাথে সাথে মানুষ ছুটছে মেলায়। আমি বাবার হাতটি ধরে হেঁটে হেঁটে মেলায় গেলাম। প্রথমে নগর দোলায়,,,, মনটাকে একটু ধুলিয়ে নিলাম, তারপর দেখলাম মেলার প্রধান আকর্ষণ কুস্তি খেলা, আমাদের এলাকায় যারা ভালো কুস্তিগির তাদের কে আমাদের এলাকায় মাল নামে চিনে, তাই তাদের নামের শেষে মাল জুড়ে দেওয়া হয়। মাঠে দেখতে পেলাম একজন হাক ডাকিতেছে তার নাম মিরাজ মাল, তার সাথে কুস্তি খেলায় কেউ পারে না তাই সে এলাকার সেরা মাল। দেখলাম কুস্তি খেলা, পড়েই শুরু হলো ঘোড়াদৌড় প্রতিযোগিতা আর ও ভালো লাগলো। কিন্তু আমার একটা নেশায় আমাকে ডাকছে বাবা আমি পানি খাবো, বাবা নিয়ে গেলো এক দোকানে সেখানে গরম জিলাপি খেলাম। আর এবার গেলাম খেলনা কিনতে, বাবা আমি ওটা নিব, আমি নাম জানিনা অনেক কিছু দেখালেন বাবা, আমি শুধু বলছি ওটা নিব, কি যে নিবো তার নাম বলতে পারছি না। পরে হাত দিয়ে দেখিয়ে দিলাম, বাবা বলে এটা তো তাল পাতার বাঁশি। আমার বাবা সেদিন তাল পাতার বাঁশি কিনে দিয়েছিলেন। আমি আনন্দে বাঁজাতে লাগলাম" তাল পাতার বাঁশি "কখনো এপাশ দিয়ে কখনো ওপাশ দিয়ে। আজ আমি বড় হয়ে গেছি কিন্তু ভুলতে পারিনি সেই তাল পাতার বাঁশি।
এটা আমাদের প্রাচীন ঐতিহ্য, তা এখন বিলুপ্তির পথে। তাই সেই ঐতিহ্য ধরে রাখতে এবার বৈশাখী মেলা থেকে আপনার সন্তানের জন্য একটা তাল পাতার বাঁশি কিনে আনবেন।
১৩ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস