নাঈম ইসলাম: এক ঘণ্টা ধরে রিকশা নিয়ে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরতেছি। রিকশাচালক কে কিছুটা বিরক্ত মনে হল। বিকেলে রোদের তেজ কমে গেলেও চারদিকে ভ্যাপসা গরম। রিকশাচালকের শরীর থেকে ঘাম ঝড়ছে অভিরাম। আমার শরীরের যে ঘাম নেই তা নয়। আমার শরীরের সব অঙ্গ ভিজে গিয়েছে ঘামে।
-রিকশাচালকঃ ভাইজান কই যাইবেন?
-আমিঃ কোথাও না, এমনি ঘুরতেছি।
-রিকশাচালকঃ ও আইচ্চা (বেশ বিরক্ত নিয়ে বলল)
-আমিঃ ভালোবাসা খুজতে বের হইছি,পেয়ে গেলে ঘোরা বন্ধ করে দেব।
-রিকশাচালকঃ তাইলে সারাজীবনেও ঘোরা বন্ধ হইব না। এই দুনিয়ায় প্রকৃতি ভালবাসার মানুষ নেই। সবাই আছে নিজের ধান্দা নিয়ে।
-আমিঃ কি নাম আপনার?
রিকশাচালকঃ: মোসলেম উদ্দিন…
রিকশা থামিয়ে ২ টা সেভেন আপ কিনলাম , একটা আমার জন্য আরেকটা দিলাম মোসলেম উদ্দিন ভাইকে (রিকশাচালক)। মোসলেম উদ্দিন এর চোখ চক চক করে উঠল। গামছা দিয়ে পেচিয়ে রাখল সেভেন আপ এর বোতল।
আমিঃ: খাচ্ছেন না কেন?
মোসলেম উদ্দিনঃ: আমি খামু না। বাড়িতে নিয়া যামু ছোট পোলাটার লাইগা। গরীব মানুষ এইগুলা কিন্না দিতে পারিনা। আজকে পাইলে খুশি হইব। ছোট মাইয়াটা আবার পুতুল এর বায়না ধরছে। গরীবের কি এত বায়না ধরলে চলে। আইজকা একটা ছোট পুতুল কিনুম। বাপ যখন হইছি বায়না ত মিটাইতেই হইব। আমি তাকিয়ে আছি মোসলেম উদ্দিন এর দিকে ।
মোসলেম উদ্দিন ভালবাসার সংজ্ঞা জানেন না, কিন্তু ভালবাসতে জানে। দারিদ্রতা তার ভালোবাসা কমাতে পারেনি এতটুকু। সন্তানের জন্য বাবা-মার ভালোবাসা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভালোবাসা। এই ভালোবাসা ছড়িয়ে পড়ুক সারা পৃথিবীতে।
বাবা-মা বেঁচে থাকুক সব সন্তানের হৃদয়ে।- লেখক নাঈম ইসলাম
১২ মে, ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এএস