চাপা একটা কষ্ট নিয়ে ঘুমাতে এলাম
শুধু এ পাশ আর ও পাশ ,ল্যাপ টপ খুলে হাত চালালাম কি বোর্ডে
কষ্টটা আমার,কষ্টটা বাবর আলীর ,
কষ্টটা আমাদের ,কষ্টটা প্রবাসীর ,প্রবাসীদের
আজ এক প্রবাসীর কষ্টে আরেক প্রবাসী ,অশ্রু ঝরালো অঝোরে !
ভরা কণ্ঠে এক প্রবাসী ফোন করে জানতে চাইলো,
ভাই ,আচ্ছা আপনিতো লিখেন ,বলতে পারেন
কি করলে আমি ,আমরা ,আমাদের জন্ম দেয়ার ঋণ
দুধের ঋণ , লালন পালনের ঋণ , বড় করার ঋণ
ভালোবাসার ঋণ শোধ করতে পারি ?
জানতে চাইলাম ,কি হয়েছে ?কোথায় এখন?
ছুটলাম ,ঘড়ির কাঁটায় রাত প্রায় বারোটা
শহরের সোডিয়াম লাইট গুলি আলো দিচ্ছে শহরটাকে ,
চারদিক ঈদ আনন্দ বেদনার ইতি টেনেছে।
ফাঁকা ,নীরব চারদিক ,মোস্তফা প্লাজার সামনে পৌঁছতেই
ছুটে এলো ,বলল ,সারা দিন বন্ধুদের সাথে ছিলো সে
দুপুরে খেতে পারেনি ঠিক মতো ,সাথের কেউ তার চাপা কষ্ট বুঝতে পারেনি !
জানতে চাইলাম কোথায় এখন ? জবাব ট্যাক্সিতে তুলে দিয়েছি।
ছেলেটার চোখে তখনো অস্ত্রু ,
ভাই জানেন ,দশ বছর ঘানি টানছে,সবাইকে প্রতিষ্ঠিত করেছে ,
দুবার বুকের ব্যাথায় হাসপাতালে ছিলো ,
তার সন্তান কোলের শিশু ছেড়ে গেছে তারে গত বছর,
তার স্ত্রী একসন্তান হারিয়ে দত্তক সন্তান বুকে নিয়ে বেঁচে আছে।
লক্ষ টাকা পাঠিয়েছে পরিবারের জন্য
আজ এক খানা নতুন কাপড় পায়নি হত ভাগী প্রবাসীর বৌ
আফসোস নেই , নতুন কিছু নয় , এ সংসারে অবহেলিত বরাবর !
এবার তার আদরের সন্তানের জন্য একটা জামা কেনেনি কেউ !
সবাই নিয়েছে তার টাকায় !
তাতেও কষ্ট নেই ,
আঘাত পেয়েছে তার স্ত্রী সন্তানের ফেতরার টাকা দেয়নি কেউ !
টিনের চালা হয়েছে ইটের ইমারত ,পাথর হয়ে গেছে মানুষের মন !
চাইলেই প্রবাসী যেতে পারে না দেশে ,
ঋণের বোঝা ,একটা সন্তানকে বাঁচাতে স্বর্বস্ব শেষ করেছে।
শোধিতে হবে অর্থের ঋণ, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে শোধিবে মালিকের ঋণ
কিন্তু কি করে শোধিবে প্রবাসী জন্মের ঋণ ?
আরেক বাবর আলী জানতে চাইলো ,এই বাবর আলীর কাছে ,
আরেক বাবর আলীর বন্ধু জন্যে ,
এই বাবর আলী নিরুত্তর !
শুধু বলল ,বাবর আলীরা ঋণী থেকে যায় ,
অর্থের ঋণ চুকিয়ে দিলেও বাবর আলীর শোধিতে পারেনা -
জন্ম,ভালোবাসা , মমতার ঋণ
কলিজা কেটে প্রিয়জনের হাতে তুলে দিলেও
শোধ হবে না কোন দিন রক্তের বন্ধনের ঋণ
ধর্মীয় নীতির সামাজিক রীতির পারিবারিক বন্ধনের ঋণ !
বলা যাবে না সত্য ন্যায়ের কথা, প্রবাসী বাবর আলীরা বিদায় নিবে একদিন
কষ্টের পাহাড় বুকে নিয়ে !
কবি: জাহাঙ্গীর আলম বাবু
৭ জুলাই ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এইচএস/কেএস