শেরপুর থেকে : শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় মঙ্গলবার এক ভিক্ষুক ইউএনওর করোনা তহবিলে ১০ হাজার টাকা দান করেছেন। উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের গান্ধীগাঁও গ্রামের মৃ'ত ইয়ার উদ্দিনের ছেলে হ'তদরিদ্র ভিক্ষুক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন (৮০)। তার তিন ছেলে তিন মেয়ে। কিন্তু ভিক্ষে করেই জীবন চলে তার। তিনি যে শোবার ঘরে থাকেন সেটির খুব খারাপ অবস্থা।
ভেন্নাপাতার ছাউনির মত ওই ঘরে বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে। গত দুই বছর ধরে তিনি ৫-১০ টাকা করে জমিয়ে ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় করেন। ইচ্ছে ছিল এবার বর্ষাকালের আগেই ঘর ঠিক করবেন। কিন্তু দেশে করোনা সং'ক্র'মণ শুরু হওয়ার পর মানুষের দুঃ'খক'ষ্ট দেখে ওই বৃদ্ধ ঠিক থাকতে পারলেন না। তাদের কষ্ট দেখে তিনি সিদ্ধান্ত নেন ওই টাকা করোনা তহবিলে দান করবেন। যাতে গরিব মানুষের কাজে লাগে।
সেই সিদ্ধান্তের পরিপ্রে'ক্ষিতে তিনি খোঁ''জ নিয়ে জানতে পারেন ঝিনাইগাতীর ইউএনও রুবেল মাহমুদের হাতে টাকা দিলে গরিব মানুষ যথাযথভাবে পাবেন। মঙ্গলবার তিনি জানতে পারেন ইউএনও মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের খাটুয়াপাড়া গেছেন চু'রি করা চাল উ'দ্ধা'র করতে। সেখানেই ছুটলেন তিনি। পরে ইউএনওকে পেয়ে তার হাতে ১০ হাজার টাকা তুলে দেন।
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বলেন, ''ভা'ঙ্গা ঘর ঠিক করবার জন্য ভিক্ষা কইরা ১০ হাজার ট্যাহা জমাইছিলাম। কিন্তু দেশের অহন খুব বি'প'দ। দেশের মানুষ কষ্ট করতাছে। আমি ইউএনও সাহেবের হাতে ট্যাহা দিলাম। তিনি দশেরে দেক। তারা খাইয়া বাঁচুক। তাইলেই আমি শান্তি পামু। আমার আর কিছু চাওয়ার নাই।''
ইউএনও রুবেল মাহমুদ বলেন, একজন ভিক্ষুক অনেক ক'ষ্ট করে ঘর তৈরি করার জন্য ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় করেছিলেন। সেই টাকা তিনি দরি'দ্রদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য আমার তহবিলে দান করলেন। অথচ আমি আজ এ ইউনিয়নে এসে মিনারা বেগম নামে সংর'ক্ষিত ওয়ার্ডের একজন নারী মেম্বারের বাড়ি থেকে হ'তদরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করার জন্য ২৫ কেজি চাল ও ২৭টি সরকারি ব্যাগ উ'দ্ধা'র করলাম। তাকে আ'টক করা হয়েছে। তার বি'রু'দ্ধে নিয়মিত মামলা হবে।'
এ ব্যাপারে মিনারা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, গত ১৯ এপ্রিল চেয়ারম্যান নূরল ইসলাম তোতা তাকে ২৩ জনকে ৫ কেজি করে চাল দেওয়ার জন্য বরাদ্দ দেন। ১৮ জনকে দেওয়া হয় ৫ কেজি করে চাল। বাকি চাল চেয়ারম্যান নিজে দেবেন বলে আমার কাছে রাখতে বলেন। চেয়ারম্যানের কথা রাখতে গিয়ে আমি ফেঁ'সে গেলাম। ঝিনাইগাতীর প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আব্দুল মান্নান বলেন, চাল উ'দ্ধারের ঘটনায় মিনারা বেগমের বি'রু'দ্ধে আমি বা'দী হয়ে থানায় মামলা করেছি।