মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৬, ০৯:৪৭:১৫

‘আল্লাহগো শেখ হাসিনারে বাঁচিয়ে রাখো’

‘আল্লাহগো শেখ হাসিনারে বাঁচিয়ে রাখো’

টাঙ্গাইল থেকে : 'স্বপ্নেও কল্পনা করিনাই আমি বিলডিংএ ঘুমামু। মাসের মাস দশ হাজার করে টাকা পামু। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমারে একটা বিলডিং দিছে। মাসে মাসে দশ হাজার করে টাকা দেয়, এতো সুখ আমি রাখমু' কথাগুলো বলা মাত্রই স্বামী পরিত্যক্তা নারী মুক্তিযোদ্ধা ফাতেমা খাতুনের চোখ দিয়ে টলমল করে গড়িয়ে পড়লো আনন্দের অশ্রু।  

দু’হাত দিয়ে কাপড়ের আচঁল তুলে কান্না জড়িত কণ্ঠে দোয়া করলেন প্রধানমন্ত্রীর জন্য। 'আল্লাহগো শেখ হাসিনারে বাঁচিয়ে রাখো। তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমানকে বেহেস্তবাসী করো'। প্রধানমন্ত্রীর উপহার 'বীর নিবাস' পেয়ে দীর্ঘদিনের মানবেতর জীবনের অবসান ঘটায় আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েছেন ফাতেমা খাতুন। তিনি টাঙ্গাইলের সখীপুরে একমাত্র নারী মুক্তিযোদ্ধা।  

একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে কাদিরিয়া বাহিনীর সদর দপ্তর ছিলো টাঙ্গাইলের সখীপুরে। সেই সখীপুরের বহেড়াতৈল এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য রান্না, এক ক্যাম্প থেকে অন্য ক্যাম্পে খবর পৌঁছে দেয়া ও রাইফেল পরিস্কার করাসহ নানান কাজে নিয়োজিত ছিলেন তিনি। মাত্র তেরো বছর বয়সে ১৯৭১ সালের মুক্তিযোদ্ধে যোগদান করেন তিনি।  

যুদ্ধের পর ফাতেমা খাতুনের বিয়ে হয় বহেড়াতৈল এলাকার সামাদের সাথে। বিয়ের ১২ বছর পর চার সন্তানের জননী ফাতেমা খাতুন যুদ্ধ চলাকালীন সময়ের নানা অপবাদ আর অভিযোগে কারণে স্বামী পরিত্যক্তা হোন। সন্তানদের নিয়ে শুরু করেন মানবেতর জীবনযাপন। ১৩ বছর পর আবার সংসার শুরু করেন সখীপুরের দিনমুজোর মোবারক হোসেনের সাথে। সেখানেও এক ছেলে সন্তানের মা হন ফাতেমা।  

অভার ঘোচাতে ২০০১ সালে সখীপর পৌরসভার সূচনা লগ্ন থেকেই পৌরসভার ঝাড়ুদার হিসেবে কাজ করেন তিনি। বয়সের ভারে নানা অসুস্থতার কারণে কয়েক বছর আগে পৌরসভার চাকুরিচুত্য হোন তিনি। তারপর থেকে আবার শুরু হয় মানবেতর জীবনযাপন। অভাবের কারণে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে মোবারক হোসেনও ফাতেমাকে ফেলে চলে যান।  

২০১১ সালে (সখীপুর-বাসাইল) এর তৎকালীন সংসদ সদস্য প্রয়াত কৃষিবিদ শওকত মোমেন শাহজাহান ফাতেমা খাতুনকে বনের ভিতরে ২০ শতাংশ জমির ব্যবস্থা করে দেন। সেখানে ছেলে, মেয়ে, মেয়ের জামাইসহ নাতি-নাতনীদের নিয়ে কোনমতো জীবন যাপন করছেন তিনি। বর্তমান সময়ে স্থায়ী বসবাসের ঠিকানা পেয়ে আনন্দের অশ্রু দেখা যায় ফাতেমার চোখে।  

এ বিষয়ে সখীপুর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার এমও গনি বলেন, ফাতেমার কষ্টের কোন সীমা ছিলোনা। তার কোন বাড়ি ঘর ছিলোনা। দেশরত্ন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফাতেমা খাতুনসহ সখীপুরের সাত জন দুস্থ মুক্তিযোদ্ধাকে 'বীর নিবাস' দেয়ায় আমরা সকল মুক্তিযোদ্ধারা আনন্দিত।  বিডি প্রতিদিন

২৭ ডিসেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে