জয়পুরহাট: আতিকুল ইসলাম। পেশায় ভ্যানচালক। জয়পুরহাট সদরের দোগাছি গ্রামের এই মানুষটির পরিবারের সদস্য সংখ্যা পাঁচ। তার একার রোজগারে চলে সংসার।
অনেক আশা নিয়ে ছেলে আকাশকে বুয়েটে ভর্তি করিয়েছিলেন আতিকুল। আশায় ছিলেন অভাবের সংসারে এক সময় পূর্ণতা আসবে আকাশের হাত ধরে। ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে আকাশ সংসারের হাল ধরবে সে রকম একটি স্বপ্ন লালন করছিলেন তিনি।
কিন্তু ভ্যানচালক বাবার সে স্বপ্ন ভেঙ্গে চু'রমা'র হয়ে গেছে ছেলেকে কাঠগড়ায় দেখে। যে সন্তানকে মানুষ করার স্বপ্নে হা'ড়ভা'ঙা পরিশ্রম করে যাচ্ছিলেন তার এই পরিনতিতে স্বপ্ন যেন দুঃস্ব'প্নে পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হ'ত্যার ঘটনা দেশব্যাপী চা'ঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। আবরার হ'ত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ১৩ জনকে রিমা'ন্ডে নিয়েছে পুলিশ।
এদের মধ্যে রয়েছেন জয়পুরহাটের আতিকুল ইসলামের ছেলে বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ১৬তম ব্যাচের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মো. আকাশ হোসেন (২১)। বুধবার আদালত তার পাঁচ দিনের রিমা'ন্ড মঞ্জুর করেন।
এদিন আদালতে জয়পুরহাটের দোগাছি গ্রাম থেকে ঢাকা সিএসএম আদালতে হাজির হন আকাশের বাবা আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আকাশ ছাত্রলীগের বুয়েট শাখার সদস্য, এটা জানতাম না। তবে ছেলেকে রাজনীতিতে জড়িত না হত বারবার নিষেধ করেছিলাম। সে যদি আমার কথা শুনতো তাহলে আজ এ পরিস্থিতি হতো না।’
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আতিকুল বলেন, ‘সব স্বপ্ন শেষ । এখন স্বপ্ন পূরণ তো দূরের কথা, জীবনটাই বাঁ'চানো দায় হয়ে পড়ছে। পুরো পরিবার দুশ্চি'ন্তায় চোখে মুখে সব ঝাঁ'পসা দেখতেছি।’
তিনি বলেন, ছেলেকে বুয়েটে পাঠায়ছিলাম ইঞ্জিনিয়ার বানাতে। নিজে না খেয়ে তার জন্য মাসে মাসে টাকা পাঠায়ছি আজ এই দিন দেখার জন্য!
আকাশের বাবা আরো বলেন, পুরো জয়পুরহাট জেলার লোক তার সুনাম করছিল। মেট্রিক-ইন্টারে গোল্ডেন এ প্লাস পাইছে। এলাকার মানুষ তার লেখাপড়ায় নিজ থেকে সহযোগিতা করেছে। আজ সব শেষ হয়ে গেল।