কুলাউড়া থেকে: কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শামীম মুসার অপসারনসহ তিনটি দাবি নিয়ে অনশনে বসেছেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এড. আবেদ রাজা। সোমবার দুপুর ২টা ৩০ মিনিট থেকে কুলাউড়া থানা প্রশাসনের সামনে স্বাধীনতা সৌধে একাই অবস্থন নিয়েছেন তিনি। স্বাধীনতা সৌধের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকলেও ব্যাটারি চার্জার লাইট দিয়ে চলছে বিএনপি নেতার অনশন। আবেদ রাজার আমরণ অনশনের দীর্ঘ ৯ ঘণ্টা পার হলেও স্থানীয় কোনো নেতাকর্মী সঙ্গী হয়নি তার। তবে উৎসুক জনতা ভিড় চোখে পড়ার মত।
এদিকে বিএনপি এ নেতার একা অনশন বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে পুলিশ প্রশাসন। পুলিশ প্রশাসন না পারছে আটক করতে, না পারছে পুলিশ পাহারা প্রত্যাহার করতে। কুলাউড়া থানা প্রশাসনের সামনে স্বাধীনতা সৌধে দুপুর থেকেই অবস্থান নিয়েছেন তিনি।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মানববন্ধনে পুলিশের ব্যাপক লাঠিচার্জ ও আটকের প্রতিবাদে কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শামীম মুসার অপসারণের চেয়ে একাই আমরণ অনশন পালন করছেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও এড. আবেদ রাজা। প্রখর রৌদ্র উপেক্ষা করে আমরণ অনশন বসেন তিনি।
এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত (রাত ১০টা ৪০ মিনিট) অনশনে অনড় রয়েছেন তিনি।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টা ৩০ মিনিটের দিকে কুলাউড়া পৌর শহরের স্বাধীনতা সৌধে অবস্থান করে তিনি এই অনশন পালন করছেন।
জানা যায়, বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মানববন্ধন করার উদ্দেশ্যে পৌর শহরের উছলাপাড়া থেকে বিএনপি নেতা আবেদ রাজার নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা উত্তর বাজারের দিকে অগ্রসর হোন। খবর পেয়ে কুলাউড়া থানার ওসির নেতৃত্বে একদল পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়। পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ শুরু করলে নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে ৫ জনকে আটক করে পুলিশ।
এদিকে আবেদ রাজা তার অবস্থানে অনড় থাকলে পুলিশ তাকেও ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে থানার সম্মুখে অবস্থিত স্বাধীনতা সৌধে গিয়ে অবস্থান করেন আবেদ রাজা।
সরেজমিনে গেলে আবেদ রাজা বলেন, সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক তৎপরতায় বাঁধা প্রদান করেছে পুলিশ। একটি সুষ্টু সুন্দর কর্মসূচিতে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উপর লাঠিচার্জসহ আমাদের নেতাকর্মীদের আটক করা হয়েছে। আটককৃত সকল নেতাকর্মীদের মুক্তিসহ গণতান্ত্রিক তৎপরতায় বাঁধা প্রদান করায় ওসির অপসারণের দাবিতে আমি আমরণ অনশন পালন করছি।
এবিষয়ে কুরাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শামীম মুসা বলেন, মানববন্ধন করতে গেলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে। তাই তাদেরকে বাঁধা দিয়েছি।
অপসারণের বিষয়ে তিনি বলেন, গণতন্ত্র না থাকলে উনি এমন কথা বলতে পারতেন না। উনি এভাবে বসে থাকতে পারতেন না। নিশ্চয়ই গণতন্ত্র আছে। শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমাদের দ্বায়িত্ব আমরা পালন করছি।
উল্লেখ্য, দুপুরে মানববন্ধন করার সময় ৬ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন, কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের মৃত বাতির মিয়ার ছেলে আবু সুফিয়ান (৩২), হাসানপুর গ্রামের আব্দুল মন্নাফের ছেলে ছাত্রদল নেতা সাইফুর রহমান (২৫), বিহালা গ্রামের মহরম আলীর ছেলে প্রভাষক শামীম (৩৮), টিলাগাঁও ইউনিয়নের চকসালন গ্রামের গোবিন্দ চন্দ্রের ছেলে গৌরাঙ্গ দে (২২), হাজিপুর ইউনিয়নের ফরজান উল্লার ছেলে মাওদুদ (৩২), পৌর শহরের বেহালার বাসিন্দা আতিকুল ইসলাম (২৮)।
এমটি নিউজ/এপি/প্রতিনিধি