মঙ্গলবার, ২৭ মার্চ, ২০১৮, ০৫:২৯:৫৭

মোবাইলে স্কুলছাত্রীর সঙ্গে প্রেম, দেখা করতে গিয়ে প্রেমিকের সর্বনাশ!

মোবাইলে স্কুলছাত্রীর সঙ্গে প্রেম, দেখা করতে গিয়ে প্রেমিকের সর্বনাশ!

নওগাঁ: নওগাঁর মান্দা উপজেলার গনেশপুর ইউনিয়নের শ্রীরামপুরে মোবাইলে প্রেমের জেরে স্কুলছাত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ৫০ হাজার টাকা গুনতে হয়েছে ভেবরা গ্রামের প্রবাসী বেলালের ছেলে আব্দুর রহমানকে।

শনিবার সন্ধ্যায় ওই স্কুলছাত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যায় প্রেমিক আব্দুর রহমান। এ সময় দুুইজনকে গল্প করতে দেখে একই গ্রামের মনতাজ হোসেনের ছেলে ফিরোজ হোসেন স্কুলছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেয়। পরে মেয়েটিকে জোরপূর্বক বাড়ির পাশে জঙ্গলে নিয়ে নির্যাতনের চেষ্টা করলে তার চিৎকারে স্থানীয়রা এসে ফিরোজকে আটক করে। পরে থানা পুলিশে সংবাদ দিয়ে শনিবার রাতেই তাকে পুলিশে সোপর্দ করে এলাকাবাসী।

এরপর ঘটনাটি নিয়ে স্থানীয় গনেশপুর ইউপি চেয়ারম্যান হানিফ উদ্দিন মন্ডল ও তার বাহিনী নাটক শুরু করে। বিষয়টি ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করে প্রেমিকের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে পকেটে ভরে, সর্বনাশ হল প্রেমিকের।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার সকালে প্রেমিক আব্দুর রহমান উপজেলার সতীহাটের অদূরে মাঠে কাজ করছিল। এ সময় চেয়ারম্যান হানিফ উদ্দিন মন্ডলের নির্দেশে আব্দুর রহমানকে আটক করে নিয়ে আসে গ্রাম পুলিশ খোরশেদ। এরপর তাকে চেয়ারম্যানের অফিস সতীহাট শহীদ মিনার মার্কেটে আটকে রেখে তার অভিভাবককে খবর দেয়া হয় এবং ওই ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে জানানো হয়। আর টাকা না দিলে তাকে থানা পুলিশে দেয়া হবে বলে হুমকি দেয়া হয়। পরে ১ লাখ টাকার পরিবর্তে ৫০ হাজার টাকা দাবি করা হয়।

আগামী ২ এপ্রিল থেকে আব্দুর রহমানের এইচএসসি পরীক্ষা। সে তার ভবিষ্যতের কথা ভেবে ১০ হাজার টাকা তাদের দিতে রাজি হয়। কিন্তু চেয়ারম্যান ও তার বাহিনী স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক, সোহেলসহ কয়েকজন অন্যায়ভাবে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে।পরবর্তিতে আব্দুর রহমানের অভিভাবকরা ৫০ হাজার টাকা চেয়ারম্যান ও তাদের লোকজনকে দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু চেয়ারম্যান ও তার লোকজন ওই টাকা ভুক্তভোগীর পরিবারকে না দিয়ে নিজেরাই পকেটে ভরে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহাদৎ হোসেন বলেন, ঘটনার মূল হোতা ফিরোজ হোসেনকে শনিবার পুলিশ আটক করে জেলহাজতে পাঠায়। কিন্তু রবিবার স্কুলছাত্রীর প্রেমিক আব্দুর রহমানকে আটক করে জোরপূর্বক ৫০ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে। যা অন্যায়।

আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হোসেন বলেন, সবার সম্মতিক্রমে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। তবে টাকার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।

ইউপি চেয়ারম্যান হানিফ উদ্দিন মন্ডল বলেন, জরুরি কাজ থাকায় বিষয়টি সমাধানে ফারুক ও সোহেলকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাদের বলেছি, যদি প্রয়োজন হয় থানা পুলিশ জানাতে। তবে টাকা নেয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মান্দা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান বলেন, স্কুলছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনায় একজনকে আটক করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করে টাকা আদায় করা হয়েছে কিনা তা জানা নেই।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে