নাটোর থেকে : নাটোরে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে চার দিন ধরে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান করছেন প্রেমিকা। ঘটনাটি ঘটেছে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার ৪ নম্বর পিপরুল ইউনিয়নের ঠাকুর লক্ষীকোল গ্রামের মদন হাট পাবনাপাড়া গ্রামে। বিষয়টি শেষ পর্যন্ত পুলিশ পর্যন্ত গড়িয়েছে। অভিযুক্ত প্রেমিকের নাম সাইফুল। তার বাবার নাম সিদ্দিক মোল্লা। বর্তমানে তিনি পলাতক রয়েছেন।
ওই তরুণীর অভিযোগ, সাইফুলের সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক। বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে তারা একসঙ্গে বসবাস করে আসছেন। এলাকাবাসী জানায়, সোনার মোড় গ্রামের ওই তরুণীর সঙ্গে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক সাইফুলের। এলাকাতে তাদের সম্পর্কের কথা জানাজানি হলে গত বছরের আগস্টে প্রেমিকাকে সঙ্গে নিয়ে গাজীপুর চলে যান। সেখানে তারা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন। তরুণী বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকলে নানা অজুহাতে বিষয়টি এড়িয়ে যান সাইফুল।
প্রায় চার মাস এভাবে চলার পর সাইফুলের বড় ভাই ছাতনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী আকবর মাস্টারের ভোটের জন্য কাজের কথা বলে নভেস্বর মাসে নাটোরে নিজ গ্রামে ফিরে আসে। যাওয়ার সময় তরুণীকে বলে যান, বাড়ি গিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বিয়ে করবেন। বাড়ি ফেরার পর সাইফুল জানান, পরিবারের কেউ বিয়েতে রাজি নয়। এরপর থেকে তিনি পলাতক। উপায় না দেখে ওই তরুণী গত বৃহস্পতিবার ৭ জানুয়ারি স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে প্রেমিক সাইফুলের বাড়িতে অবস্থান নেন।
প্রথমে সাইফুলের বাবা তরুণীকে বাড়িতে রাখতে না চাইলেও পরে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কলিম উদ্দিনের হস্তক্ষেপে রাখতে বাধ্য হন। চেয়ারম্যান কলিম উদ্দিনের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে সাইফুলের হাজির হওয়ার কথা থাকলেও পরিবার জানায়, তিনি কোথায় তারা জানেন না। বিষয়টি সমাধান না হওয়ায় চার দিন ধরে ওই বাড়িতে অবস্থান করছেন তরুণী। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, নলডাঙ্গা থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তে নেমেছে।
তবে সাইফুলের বাবা সিদ্দিক মোল্লা বলেন, ''আমার ছেলে যদি ওই মেয়েকে বিয়ে করে থাকে তাহলে আমার কোনো আপত্তি নেই কিন্তু এটা আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। এলাকার লোকজন মিলে একটা চক্র এই ষড়যন্ত্র করছে যাদের কাজই এগুলো করা। প্রয়োজনে যত টাকা খরচ করতে হয় করব কিন্তু এই মেয়ের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে দেব না।''
ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, ''আমার আর সাইফুলের সম্পর্কের কথা অনেকেই জানে। আমার কাছে প্রমাণও আছে। এখন যদি আমাকে সাইফুল বিয়ে না করে তাহলে আমি আত্মহত্যা করব তবুও এখান থেকে যাব না।'' নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম মৃধা জানান, এ ব্যাপারে একটা অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।