রবিবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০১৬, ০৪:৪৮:১৪

মাত্র ১২৫ টাকার জন্য ৪২ ছাত্রীকে পিটিয়ে জখম

 মাত্র ১২৫ টাকার জন্য ৪২ ছাত্রীকে পিটিয়ে জখম

নাটোর : এক ছাত্রীর ১২৫ টাকা চুরি যাওয়ার ঘটনায় মাদরাসার ৪২ ছাত্রীকে পিটিয়ে জখম করায় রোববার মাদরাসার এক সহকারী শিক্ষিকা এবং শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় সুপারকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে ম্যানেজিং কমিটি।  এমন নির্মম নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটেছে নাটোরের বাগাতিপাড়ায়।

ঘটনা তদন্ত করতে সহকারী সুপারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

নির্যাতিত ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকরা জানান, শনিবার উপজেলার পেড়াবাড়িয়া দাখিল মাদরাসার নবম শ্রেণির ছাত্রী শিমলা খাতুনের কমন রুমে রাখা বই থেকে ১২৫ টাকা হারিয়ে যায়।  বিষয়টি ওই ছাত্রী শিক্ষকদের জানান।  এ ঘটনায় মাদরাসার সুপার শামসুল আরেফিন সহকারী শিক্ষিকা জান্নাতুল ফেরদৌসকে বিষয়টি দেখার দায়িত্ব দেন।

তারা জানান, সহকারী শিক্ষিকা জান্নাতুল ফেরদৌস কমন রুমের দরজা আটকে রুমের ৪২ জন ছাত্রীর দেহ তল্লাশি করেন।  অনেকের বোরকা খুলেও এ তল্লাশি চালান তিনি।  তল্লাশিতে টাকা পাওয়া না যাওয়ায় কেউ চুরি করেছে কি না এ জন্য ৩০ মিনিট সময় বেধে দেন তিনি।

ছাত্রী ও অভিভাবকরা জানান, কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি।  টাকা উদ্ধার না হওয়ায় কমন রুমের দরজা বন্ধ করে অষ্টম থেকে দশম শ্রেণির ৪২ জন ছাত্রীকে বেত দিয়ে পেটান সহকারী শিক্ষিকা জান্নাতুল ফেরদৌস।  এদের মধ্যে ১৫-২০ জন আহত হলে তাদের হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।

ছুটির পর তারা বাড়ি গিয়ে বিষয়টি অভিভাকদের জানালে অভিভাকরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।  বিষয়টির কোনো ব্যবস্থা না করায় ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকরা রোববার সকালে বিক্ষোভ-মিছিল বের করে।  

মাদরাসা থেকে মিছিলটি বের হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।  পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার খন্দকার ফরহাদ আহম্মেদের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে শিক্ষার্থীরা।

মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নুরুল ইসলাম ঠান্ডু গণমাধ্যমকে বলেন, এক ছাত্রীর ১২৫ টাকা হারিয়ে যাওয়ায় ৪২ জন ছাত্রীকে বেত্রাঘাত করেছেন মাদরাসার সহকারী শিক্ষিকা জান্নাতুল ফেরদৌস।  এ ঘটনায় সকালে ম্যানেজিং কমিটির বৈঠক হয়।

বেত্রাঘাতের ঘটনায় ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় প্রতিষ্ঠানের সুপার শামসুল আরেফিন এবং বেত্রাঘাত করা সহকারী শিক্ষিকা জান্নাতুল ফেরদৌসকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।  ঘটনার তদন্ত করতে মাদরাসার সহকারী সুপার আফজাল হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।  

কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন শিক্ষক প্রতিনিধি আব্দুল করিম ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ফিরোজুল ইসলাম।

মাদরাসা সুপার শামসুল আরেফিন বলেছেন, টাকা হারিয়ে যাওয়ার ঘটনার বিষয়ে সহকারী শিক্ষিকা জান্নাতুল ফেরদৌসকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল।  কিন্তু তিনি ছাত্রীদের বেত্রাঘাত করেছেন।
৩১ জানুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে