খলিল রহমান, সুনামগঞ্জ থেকে : ‘আমার সোনার টুকরা ছেলেরে যারা সন্ত্রাসী বানাইছে, জঙ্গি বানাইছে, আমি তারার বিচার চাই’—বলছিলেন শামীমের মা। জাগৃতির প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় মূল আসামি শামীম।
গত মঙ্গলবার ঢাকার টঙ্গী থেকে শামীমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল দেশের সব গণমাধ্যমে গ্রেপ্তারের খবর প্রকাশের আগে এ হত্যার সঙ্গে শামীমের জড়িত থাকার বিষয়ে কিছু জানত না বলে দাবি করেছে তার পরিবার।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার মাধবপুর গ্রামে শামীমদের বাড়িতে গিয়ে কথা হয় তার বৃদ্ধ মা সালেহা বেগমের সঙ্গে। ছেলের জন্য কাঁদতে কাঁদতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। চোখের জল মুছতে মুছতে বলেন, যে ছেলে ভয়ে রাতে একা ঘর থেকে বের হতো না, এখন টিভিতে দেখছি সে মানুষ হত্যা করেছে। বড় সন্ত্রাসী হয়ে গেছে। এটা বিশ্বাস করতে পারছি না। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে অন্যায় করলে তার বিচার হবে। তবে যারা তাকে এই পথে এনেছে, তাদেরও যেন বিচার হয়।’
শামীমের বড় ভাই আবু জাফর জানান, ২০১০ সালে শামীমকে সিলেটে পড়াশোনার জন্য পাঠানো হয়। ওই বছরই তিনি বাড়িতে এসে স্থানীয় গোবিন্দগঞ্জ বাজারে লিফলেট বিতরণ করতে গিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। পরে তারা জানতে পারেন শামীম হিযবুত তাহ্রীরের সদস্য। সেটা নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন। শামীমকে জেল থেকে জামিনে বের করে আনার পর তাকে ওই পথ থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়। শামীম তা মেনে নিয়েছে বলে মনে হয়েছিল। কারণ, এরপর থেকে শামীম পড়াশোনায় মনোযোগী হন। একপর্যায়ে এইচএসসি পাস করেন। তখন তারা ধারণা করেছিলেন, শামীম এসব ছেড়ে দিয়েছেন।
আবু জাফর আরও জানান, শামীম সঠিক পথে এসেছেন ভেবে আরেক ভাই তাকে একটি ল্যাপটপ কিনে দেন। তবে এর কয়েক দিন পর আবু জাফর ভাবেন, এই ল্যাপটপে ইন্টারনেট ব্যবহার করে শামীম সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আবার যোগাযোগ করতে পারেন। তাই তিনি সেটি ভেঙে ফেলেন।
মা সালেহা বেগম জানান, গত রমজান শুরুর দুই দিন আগে শামীম সিলেট থেকে বাড়িতে আসেন। এর সপ্তাহ খানেক পর বাড়ির কাউকে কোনো কিছু না বলে আবার চলে যান। ঈদেও বাড়িতে আসেননি। আর কোনো যোগাযোগ হয়নি পরিবারের সঙ্গে। গত বুধবার তারা জানতে পারেন, শামীম ঢাকার টঙ্গীতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। - প্রথম আলো
২৬ আগস্ট ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস