সিলেট থেকে: এবার জঙ্গিদের ফ্ল্যাটে অভিযান শুরু করেছে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো সদস্যরা। সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানা ৩০ ঘণ্টা ঘিরে রাখার পর সেনাবাহিনীর চূড়ান্ত অভিযানের তিন ঘণ্টার মধ্যে অর্ধ শতাধিক ব্যক্তিকে বের করে আনা হয়েছে। আজ শনিবার ১১টা ৪৫ মিনিটে জঙ্গিদের ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেন তারা। এর আগে সকাল সকাল ৮টা ২৮ মিনিটে সিলেটে জঙ্গি আস্তানা আতিয়া মহলে অপারেশন টোয়ালাইট শুরু হয়। ওই দুটি ভবনে শনিবার সকাল ৯টায় সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়ন অভিযান শুরু করে, যেখানে এক জঙ্গি দম্পতি রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এলাকাটি ঘিরে রাখা হয়েছে। দুপুর ১২টা পর্যন্ত অর্ধ শতাধিক ব্যক্তিকে বের করে আনতে দেখা গেছে, যারা বৃহস্পতিবার থেকে সেখানে আটকা পড়েন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের কাছের একটি ভবনে জড়ো করে রাখা হয়েছে।
ওই দুই বাড়ির মধ্যে পাঁচতলা ভবনটিতে ৩০টি ফ্ল্যাটে সমান সংখ্যক পরিবারের বসবাস। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের মধ্যে বাকি পরিবারগুলো কার্যত জিম্মি হয়ে পড়েন। সকাল ৯টায় অভিযান শুরুর পর দুই দফা গুলির শব্দ পাওয়া গেছে। ভেতরের অবস্থা বিষয়ে আর কিছু জানা যায়নি। সেনাবাহিনী কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারাও সাংবাদিকদের কিছু বলেননি। লে. কর্নেল ইমরুল কায়েসের নেতৃত্বে এই বিশেষ অভিযানে সম্মুখভাগে অংশ নিয়েছেন সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো সদস্যরা। অভিযানের সার্বিক তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে আছেন ১৭ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল আনোয়ারুল মোমেন। বাইরে রয়েছেন সোয়াট, র্যাব ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুসা এ খবর নিশ্চিত করেন।
টান টান উত্তেজনার মধ্যে একটি দিন ও একটি রাত পার করে চূড়ান্ত অভিযান শুরুর আগে শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপস্থিত সংবাদকর্মীসহ সবাইকে এক কিলোমিটার দূরে সরে যেতে বলা হয়। তখন বন্ধ করে দেওয়া হয় বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ। ফায়ার ব্রিগেডের দুটি গাড়ি রাতেই ঘটনাস্থলে এনে রাখা হয়েছিল। সকালে সাঁজোয়া যান ও অ্যাম্বুলেন্স দেখা যায়। অভিযানের খবর সরাসরি সম্প্রচার না করতে আইএসপিআরের পক্ষ থেকে সংবাদ মাধ্যমকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সেনাবাহিনী এই অভিযানের নাম দিয়েছে অপারেশন টোয়াইলাইট এর আগে ঘটনাস্থলে কাজ করে আসা সোয়াট এই অভিযানের নাম দিয়েছিল অপারেশন স্প্রিং রেইন।
শুক্রবার ভোর থেকে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার শিববাড়ি এলাকার উস্তার মিয়ার বাড়ি আতিয়া মহল ঘেরাও করে রাখে পুলিশ। সকাল সোয়া ৭টায় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে জঙ্গিরা আল্লাহ আকবার বলে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে সকাল ৯টা থেকে পুলিশ ভবন লক্ষ্য করে একের পর এক গুলি ছুড়ছে। তবে ভবনের ভাড়াটিয়া নিরীহ লোকজনের কাউকে বের করে আনতে পারেনি। পুলিশের ধারণা মর্জিনা নামে কোড ব্যবহার করে জঙ্গিরা ওই বাসায় অবস্থান নিয়েছে। বাসায় নব্য জেএমবি নেতা মুছা থাকতে পারে, এমন ধারণাও পোষণ করছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
২৫ মার্চ ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/টিটি/পিএস