শনিবার, ২৫ মার্চ, ২০১৭, ০৩:৩৮:২৪

চূড়ান্ত অভিযানে প্রকম্পিত পুরো শিববাড়ী এলাকা

 চূড়ান্ত অভিযানে প্রকম্পিত পুরো শিববাড়ী এলাকা

সিলেট থেকে: সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ী এলাকায় ‘জঙ্গি আস্তানা’ আতিয়া মহলে চূড়ান্ত অভিযান শুরু হয়েছে। শনিবার দুপুর ২ টার দিকে ২ জন নারী, ২ জন পুরুষ ও ১ শিশুকে বের করে নিয়ে আসার সময় গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এরপরই শুরু হয় প্যারা-কমান্ডোদের চূড়ান্ত অভিযান।

অভিযানে মুহুর্মুহু গুলির শব্দে প্রকম্পিত হয়ে উঠেছে পুরো শিববাড়ী এলাকা। সেনাদের লক্ষ্য করে জঙ্গিরা গুলি ছুঁড়েছে বলেও জানা গেছে। গুলি বিনিময়ের এক পর্যায়ে আতিয়া মহল থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। এ ধোঁয়া গোলাগুলির কারণে, নাকি ভেতর থেকে কোনো কিছু বিস্ফোরণের কারণে ঘটেছে কি না তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানা যায়নি।

এসময় শিমুল কর নামে ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা গুলিবিদ্ধ হন। এতে আশেপাশের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বেলা সোয়া দুইটার দিকে আতিয়া মহলে বিকট শব্দে গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটে। এর পর পরই এক সেনা সদস্যকে আহত অবস্থায় ভেতর থেকে বের করে নিয়ে আসা হয়। এর মিনিট দশেক পর আরেক সেনা সদস্যকে আহত অবস্থায় বের করে নিয়ে আসেন মেডিকেল কোরের সদস্যরা।

শনিবার সকাল ৮টার দিকে সেনা কমান্ডোরা সেখানকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ‘টোয়াইলাইট’ (গোধূলি) নামের অভিযান শুরু করেন। সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশনের লে. কর্ণেল ইমরুল কায়েসের নেতৃত্বে এ অভিযান শুরু হয়। অভিযানের শুরুর আগে র‍্যাব-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকসহ উৎসুক জনতাকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়।

সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার পাঠানপাড়া সড়কের পাশে অবস্থিত পাঁচতলা ও চারতলাবিশিষ্ট দুটি ভবনের নাম আতিয়া মহল। সিলেট নগরীর আতিয়া ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ির বান্দরঘাটের (বন্দরঘাট) বাসিন্দা উস্তার মিয়া। এই বাড়িতে জঙ্গিরা আস্তানা গেড়েছে এমন সন্দেহে বৃহস্পতিবার রাত ২ টা থেকে বাড়িটি ঘিরে রাখে পুলিশ। শুক্রবার দিনভর পুলিশ, সোয়াট ও সেনা সদস্যরা বাড়িটিকে ঘিরে রাখে। এসময় হ্যান্ডমাইকে করে বারবার সন্দেহভাজন জঙ্গিদের আত্মসমর্পনের আহ্বান জানানো হয়। তবে এতে সাড়া মেলেনি। অবশেষে বাড়িটি ঘিরে রাখার প্রায় ত্রিশ ঘন্টা পর চুড়ান্ত অভিযানে নামে সেনা সদস্যরা।

অভিযানে অংশ নেয়া কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রথমে আতিয়া মহলের অন্য ফ্ল্যাটগুলোতে আটকে পড়াদের উদ্ধার করা হবে। পরে জঙ্গিদের ভবনের বাইরে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হবে। ভবন মালিক জানিয়েছেন, পাঁচ তলা ভবনটিতে ৩০ টি ফ্ল্যাটে মোট ২৮ টি পরিবার ভাড়া থাকেন।

এই ভবনের নিচ তলার একটি ফ্ল্যাট গত জানুয়ারি মাসে প্রাণ কোম্পানির অডিট অফিসার পরিচয়ে ভাড়া নেন কাওসার আহমদ ও মর্জিনা বেগম দম্পতি। ওই ফ্ল্যাটটিকে ঘিরেই চলছে তেত্রিশ ঘন্টা ধরে অভিযান।
২৫ মার্চ ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে