সিলেট থেকে : সিলেট শহরের দাড়িয়াপাড়া মহল্লায় অবস্থিত প্রাইম লাইটিং অ্যান্ড ডেকোরেটার্স। সোমবার দুপুরের দিকে দেখা গেল, সেটার সামনে বেশ ভিড়। অপেক্ষা একটি লাশের জন্য। লাশটি এই দোকানের মালিক ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলামের।
পুলিশ সূত্রগুলো বলছে, সিলেটের আতিয়া মহলের জঙ্গি আস্তানাকে কেন্দ্র করে সেনাবাহিনী পরিচালিত অভিযান ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ চলাকালে শনিবার দুই দফা বিস্ফোরণে নিহত ছয়জনের একজন শহীদুল ইসলাম। তিনি ও তার প্রতিষ্ঠানের চিত্রগ্রাহক খাদেম শাহ ওই সময় এক মোটরসাইকেলে ছিলেন। বিস্ফোরণের ঘটনায় খাদেমেরও মৃত্যু হয়।
বাকি চারজনের লাশ রোববার বুঝিয়ে দেওয়া হয়। তবে তাদের দুজনের লাশ এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মর্গে রেখে দেওয়া হয়। হামলায় তাঁরা জড়িত ছিলেন কি না, সে ব্যাপারে অধিকতর তদন্তের জন্য লাশ রাখা হয়। আজ দুজনের আঙুলের ছাপ ও জামাকাপড়ের নমুনা রেখে লাশ স্বজনদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
শহীদুল ও খাদেমের বাবা-ভাইসহ স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। তবে দাড়িয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দারা বললেন, শহীদুল খুবই ভালো মানুষ ছিলেন।
আলমগীর কুমকুম, যিনি এলাকায় প্রয়াত নায়ক সালমান শাহের মামা হিসেবে পরিচিত, তিনি বলেন, ‘ছেলেটা খুবই ভালো ছিল। খুবই কর্মঠ ছিল। ডেকোরেটর, লাইটিং, ক্যামেরা সরবরাহ করত। বিকাশ-ফ্ল্যাক্সিও করত। তাঁর মৃত্যুর খবর শুনে সবাই কাঁদছে।’ তিনি আরও বলেন, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সাজসজ্জার কাজ পেয়েছিলেন শহীদুল। তা নিয়ে তিনি ছোটাছুটির মধ্যে ছিলেন—জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এমন কর্মঠ ছেলে জঙ্গি হতে পারে না।’
শহীদুলের আত্মীয় মো. মামুন বলেন, শহীদুলের চার মাস বয়সী বাচ্চা আছে। শনিবার তার মৃত্যুর ঘটনা জানার পর তার স্ত্রী ও সন্তানকে নেত্রকোনায় শহীদুলের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ওকে যতটুকু চিনি, তাতে বলতে পারি—ও কখনো জঙ্গি হতে পারে না।’ প্রথম আলো।
২৭ মার্চ ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/এসএস