ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে : খালেদা জিয়া কারান্তরীণ হওয়ার পর হঠাৎ করে নীরব হয়ে পড়েছে সিলেট সিটি নির্বাচনের দলীয় নেতাদের নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রস্তুতি। বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করছেন সবাই।
এর পরও সিটি নির্বাচনে প্রধান দুটি দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের ‘নীরব’ তোড়জোড় চলছে। বিএনপি আপাতত মাঠের আন্দোলন নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে। আর আওয়ামী লীগ সতর্ক অবস্থানে থেকে বিএনপির আন্দোলনকে পর্যবেক্ষণ করছে। হিসাব অনুযায়ী চলতি বছরের অক্টোবরে শেষ হবে সিলেট সিটি করপোরেশনের বর্তমান পরিষদের মেয়াদ।
এর আগে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। গেল ডিসেম্বর মাসে সিলেট সফর করেছিলেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন চলতি বছরের শুরুতে অনুষ্ঠিত হবে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন। তার এই ঘোষণার পর থেকে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তোড়জোড় বেড়ে গিয়েছিল। আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে প্রার্থিতা নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হয়।
এরই মধ্যদিয়ে ৩০শে জানুয়ারি সিলেট সফর করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সিটি করপোরেশন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা শুরু করেন। তার সফরকে কেন্দ্র করে সিলেটে যে প্রস্তুতি চলছিল সেখানেও ছিল নির্বাচনী আবহ। সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ দলীয় সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থিতা প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে শো-ডাউন দেন। তারা ব্যানার-ফেস্টুনের মাধ্যমে নগরবাসীর দোয়া চান।
আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য বদরউদ্দিন আহমদ কামরান দলীয় প্রধানের ‘গ্রিন সিগনাল’ পেয়েছেন। দলের কার্য নির্বাহী কমিটির সভা শেষে দলীয় প্রধান কামরানকে নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা জানান।
বিগত সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর কাছে পরাজয় বরণ করেছিলেন। পরাজয় বরণ করলেও কামরান থমকে যাননি। সব হতাশাকে পেছনে ফেলে তিনি নির্বাচনের পর থেকেই মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। শুধু আওয়ামী লীগ নয়, দলের বাইরেও বিশাল অংশের মানুষের কাছে রয়ে তার গ্রহণযোগ্যতা। পাশাপাশি সিলেট আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মকাণ্ড এক হাতে সামলাচ্ছেন।
ফলে মেয়র থাকাকালে যেভাবে ব্যস্ত ছিলেন কামরান, বর্তমানেও সেভাবে ব্যস্ত। এবার আওয়ামী লীগে রয়েছেন আরও কয়েকজন প্রার্থী। তাদের মোকাবেলা করতে হচ্ছে এখন তাকে। পাশাপাশি বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নানা চালের জবাবও দিতে হচ্ছে। বিএনপি দলীয় মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী গেল নির্বাচনের পর প্রথম এক বছর সিলেট সিটি করপোরেশনের নানা কর্মকাণ্ড নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। পরের দুই বছর তিনি ছিলেন কারাগারে।
এরপর বেরিয়ে এসে প্রায় এক বছর ধরে আবারও মাঠে সরব। এই মুহূর্তে প্রতিপক্ষ হিসেবে কামরানের সঙ্গে ‘ঠান্ডা’ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন আরিফ। একই সঙ্গে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডও নিয়ে ব্যতিব্যস্ত। প্রধানমন্ত্রী সিলেট সফরের আগে হঠাৎ করে লন্ডনে চলে গিয়েছিলেন সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। প্রধানমন্ত্রীর সফরে তিনি সিলেট ছিলেন না। ৪ই ফেব্রুয়ারি সকালে লন্ডন থেকে সিলেটে ফিরেন তিনি।
আরিফুল হক চৌধুরীর ঘনিষ্ঠজনেরা জানিয়েছেন, আরিফ এখন যা কিছু চালাচ্ছেন সবই হচ্ছে নির্বাচন কেন্দ্রিক। নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি সিলেট নগরীর কয়েকটি সড়ককে প্রশস্তকরণ করার কাজ শুরু করেছেন। পাশাপাশি হকার উচ্ছেদে নতুন করে প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। ‘পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন সিলেট’- স্লোগানকে সামনে রেখে আরিফ নগর পরিষ্কারে নেমেছেন। এমজমিন
এমটিনিউজ/এসবি