শনিবার, ০৩ মার্চ, ২০১৮, ০৮:২৬:৩৮

যেভাবে আটক করা হয় ড. জাফর ইকবালের ওপর হামলাকারী যুবককে!

যেভাবে আটক করা হয় ড. জাফর ইকবালের ওপর হামলাকারী যুবককে!

নিউজ ডেস্ক : মৌলবাদীদের ধারাবাহিক হুমকির মধ্যে থাকা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, বিশিষ্ট লেখক ও শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালকে ছুরিকাঘাত করেছে এক যুবক।

শনিবার বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে শাবি ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটেছে। বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে ত্রিপল-ই বিভাগের এক অনুষ্ঠানে তাকে পিছন দিক থেকে মাথায় ছুরিকাঘাত করে ওই যুবক। ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যাওয়ার সময় আশপাশের লোকজন তাকে আটক করে।

পরে গণপিটুনি দিয়ে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। ওই যুবকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রাথমিক ভাবে ওই যুবকের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। কোন রাজনৈতিক দলের কর্মী নাকি কোন ধর্মান্ধ গ্রুফের কর্মী তা এখনো জানা যায়নি।

মুক্তমঞ্চ এলাকায় পেছন থেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ড. জাফর ইকবালের মাথায় আঘাত করা হয়। হামলাকারী দুইজন ছিল। হামলার পর সঙ্গে সঙ্গে এক হামলাকারীকে আটক করা হলেও মোটরসাইকেলযোগে আরেক হামলাকারী পালিয়ে যায়। এসময় ইব্রাহিম নামে একজন পুলিশ কনস্টেবলও ছুরিকাঘাতে আহত হন।

আহত অবস্থায় শিক্ষার্থীরা জাফর ইকবালকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। এসময় হামলাকারীকেও আটক করেন শিক্ষার্থীরা। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তার নাম পরিচয় জানা যায়নি। ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ওই যুবককে আটক করেছে পুলিশ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জহির উদ্দিন আহমেদ বলেন, মঞ্চের পেছন থেকে এসে এক ছেলে ছুরি মারে গলা, বুক ও মুখের দিকে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশসহ অন্যরা তাকে আটক করে। কী কারণে ওই তরুণ জাফর ইকবালের উপর হামলা করেছেন, সে বিষয়ে কিছু তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিং নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন জাফর ইকবাল। র‌্যাগিংয়ের দায়ে পাঁচ ছাত্রের শাস্তি দেওয়া হলে তিনি বলেছিলেন, এদের শাস্তির পরিমাণ কম হয়েছে, তাদের পুলিশে দেওয়া উচিৎ। আবার এর পেছনে জঙ্গিদের হাত থাকতে পারে বলেও সন্দেহ রয়েছে কোনো কোনো শিক্ষার্থীর। জাফর ইকবাল বরাবরই জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ।

প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক শিক্ষার্থী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রনিক্স বিভাগের ভেস্টিভেল চলছিল। একপর্যায়ে তিনি অনুষ্ঠানস্থলের এক স্থানে দাড়িয়েছিলেন। তাকে ঘিরে ছিল পুলিশ। এর মধ্যেই এক যুবক পেছন থেকে এসে জাফর ইকবালকে ছুরিকাঘাত করেন।

প্রিয় স্যারকে রক্তাক্ত জখম হতে দেখে শিক্ষার্থীরা ছুটে এসে তাকে ঘিরে ধরে। আর কিছু শিক্ষার্থী হামলাকারী যুবককে আটক করে গণধোলাই দেয়। এক শিক্ষার্থী জানান, হাসপাতালে নেয়ার সময় ড. জাফর ইকবাল তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা হইচই করো না। আমি নিজেকে কন্ট্রোল করছি। আমাকে ধরো। আমার রক্তের গ্রুপ এ পজিটিভ।’

ড. জাফর ইকবালের ওপর হামলার খবরে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা। বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ ওসমানী মেডিকেলে ছুটে আসছে। হাসপাতালে অনাকাঙিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে