সিলেট ব্যুরো (সিলেট): সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নের বাসিন্দারা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। অবহেলিত এই ইউনিয়নে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অভাবে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিক শিক্ষা অর্জনে বঞ্চিত হচ্ছেন। পাঁচ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে একটি করে মাধ্যমিক বিদ্যালয় থাকার কথা।
বিশাল আয়তন এবং জনসংখ্যার অনুপাতে এই ইউনিয়নে তিনটি বিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সেখানে একটি মাত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয় দিয়ে এ অঞ্চলে মাধ্যমিক শিক্ষার চাহিদা পূরণ করাতো দূরের কথা বরং অপূর্ণতাই দিয়ে যাচ্ছে। এতে ক্রমেই ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই ইউনিয়নের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত করার বিষয়ে আবেদন করা হলেও সেটিরও কোনো অগ্রগতি হচ্ছেনা।
স্থায়ীয়দের উদ্যোগে বিগত দিনে এই এলাকায় একটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়, কিন্তু এক সময় সেটিও বন্ধ হয়ে যায়। ওই বিদ্যালয়টির বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নের হামছাপুর গ্রামে ‘হামছাপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়’ নামে এলাকাবাসীর উদ্যোগে প্রায় এক একর ভুমির উপর একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার ৫-৬ বছর পর ১৯৯০ সালের দিকে সেটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা এবং ভবন সংকটের কারণে বিদ্যালয়টির অগ্রযাত্রা ব্যাহত হয়। তৎকালীন সময়ে স্কুলের জন্য নির্মাণাধীন ভবনের পিলারগুলো এখন কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বিদ্যালয়টি পুনঃপ্রতিষ্টিত হলে এই এলাকার মাধ্যমিক শিক্ষার প্রসারে অগ্রণী ভুমিকা রাখবে। এতে পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়ন ও বোয়ালজুড় ইউনিয়নের শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবেন। বিদ্যালয়টি চালু করার বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
এই বিদ্যালয়ের ভূমিদাতা পরিবারের সদস্য ইয়াহিয়া সুজন ও মখদ্দুছ আলী বলেন, বিদ্যালয়টি চালু করার লক্ষ্যে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, সরকারিভাবে সুযোগ-সুবিধা পেলে বিদ্যালয়টি দ্রুত চালু করা সম্ভব হবে।
বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও একই ইউনিয়নের বাসিন্দা মাওলানা সৈয়দ আলী আসগর বলেন, এই ইউনিয়নে নতুন একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার খুবই প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তাই ‘হামছাপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি’ আবারো চালুকরণে এলাকাবাসীর সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এগিয়ে আসতে হবে। এই বিদ্যালয়টি চালু হলে এই অঞ্চলের শিক্ষার্থীসহ পাশ্ববর্তী রাজনগর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের শিক্ষার্থীরাও উপকৃত হবেন।
বালাগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নে নতুন একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এখানে বিদ্যালয় প্রতিষ্টিত হলে প্রাথমিকের গন্ডি পেরিয়ে শিক্ষার্থীরা সহজেই মাধ্যমিক শিক্ষা অর্জন করতে পারবে। এতে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা হ্রাস পাবে। স্থানীয়রা হামছাপুর গ্রামের ওই বিদ্যালয়টি পূনরায় চালু করতে চাইলে পাঠদানের অনুমতি প্রদানসহ সাধ্যমত সহযোগীতা করা হবে।
বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আবদুল হক বলেন, হামছাপুর গ্রামের ওই বিদ্যালয়টি চালু করার বিষয়ে আলোচনা চলছে। খুব শিগগির এটা বাস্তবায়নের দিয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।