বিশ্বনাথ (সিলেট) : সিলেটের বিশ্বনাথে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। আজ রবিবার সকাল ৮টা থেকে একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ। রাতে পৌনে ১০টায় শেষ হয়েছে প্রতিটি কেন্দ্রের ফলাফল। বিশ্বনাথ উপজেলায় মোট ৭৪টি কেন্দ্রের বেসরকারিভাবে প্রাপ্ত ফলাফলে গণফোরামের প্রার্থী মোকাব্বির খান উদীয়মান সূর্য প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৪২ হাজার ৯৪৩ ভোট। তার নিকটতম স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান ডাব প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২২ হাজার ৬১৫ ভোট। নির্বাচনের প্রচারে দুইদিনে আগে মাঠে নেমে চমক দেখালেন মোকাব্বির খান। তবে তার এতো ভোট প্রাপ্তি পিছনে ইলিয়াস পরিবার ও বিশ্বনাথ বিএনপি এবং জামায়াত নেতাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল বলে মনে করছেন অনেকে।
এ ছাড়া বিশ্বনাথ উপজেলার ৭৪টি কেন্দ্রে মহাজোট প্রার্থী জাতীয় পার্টির বর্তমান সংসদ সদস্য লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ৭৭২০ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী 'আওয়ামী লীগ ঘরণা' হিসেবে পরিচিত অধ্যক্ষ ড. এনামুল হক সরদার সিংহ প্রতীকে পেয়েছেন ৪৬৯২ ভোট, খেলাফত মজলিসের মুহাম্মদ মুনতাছির আলী দেয়াল ঘড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ২৬২৮ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রব মল্লিক কার প্রতীকে পেয়েছেন ৪৭২ ভোট, ইসলামী আন্দোলনের মো. আমির উদ্দিন হাত পাখা প্রতীকে পেয়েছেন ৮৯৩ ভোট, এনপিপির মনোয়ার হোসাইন আম প্রতীকে পেয়েছেন ৬২২ ভোট ও বিএনএফ এর মোশাহিদ খান টেলিভিশন প্রতীকে পেয়েছেন ১২৯ ভোট।
বিশ্বনাথে শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তবে কেন্দ্রগুলোতে ভোটারের উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক কম। এর মধ্যে পুরুষ ভোটারের চেয়ে নারী ভোটারের উপস্থিতি ছিল বেশি। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা উপজেলার ৭৪টি কেন্দ্রে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে, ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী গণফোরামের প্রেসিডিয়াস সদস্য মোকাব্বির খানের প্রধান সমন্বয়কারী বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরীকে আটকের প্রায় দুই ঘণ্টা পর ছেড়ে দেয় পুলিশ। তবে কোনো কেন্দ্রে অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। বিকেল ৪টার পর শুরু হয় ভোট গণনা।
উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের কয়েকটি কেন্দ্র থেকে ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীর এজেন্টদের দুপুরে পুলিশ বের করে দেয় বলে অভিযোগ করেছেন দৌলতপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাফিজ আরব খান। তবে পুলিশ বিষয়টি অস্বীকার করে।
আজ সকালে বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ কেন্দ্র ভোটারশূন্য। দুপুর ১২টার পর কিছু কিছু ভোটার ভোট প্রদান করতে কেন্দ্রে আসতে দেখা যায়। পুরুষ ভোটারের চেয়ে নারীর ভোটারের উপস্থিতি ছিল বেশি। অনেক অসুস্থ নারী ভোটারাও ভোট প্রদান করতে দেখা যায়। দুপুরের আগ পর্যন্ত উপজেলার বিশ্বনাথ ডিগ্রি কলেজ, উপজেলা সদরের আলিয়া মাদরাসা, হাজী মফিজ আলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ, মাদানিয়া মাদরাসা, জানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রামধানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দোহাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র ভোটার উপস্থিতি খুবই কমছিল। তবে উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদ কেন্দ্রে পুরুষ ভোটাদের চেয়ে নারী ভোটারের উপস্থিতি ছিল বেশি।
ভোটাদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট প্রদান করেছেন। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা কেন্দ্রে হয়নি। তবে নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীক না থাকায় ভোটাদের আগ্রহ ছিল কম। এমনটাই জানান কয়েকজন ভোটার।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ আসনে থাকা ১৬টি ইউনিয়নের ১৪৪টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের মধ্যে ভোটার হচ্ছেন ২লাখ ৮৬ হাজার ৪০৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৮১ জন ও মহিলা ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৪১ হাজার ৫৫২ জন। দুই উপজেলার ভোটাররা ১২৭টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৬১৪টি ভোট কক্ষে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।-কালের কণ্ঠ