রাহিব ফয়ছল, সিলেট প্রতিনিধি: সিলেটে ইভটিজিংয়ের মামলায় এক বখাটেকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। দন্ডপ্রাপ্ত বখাটে আব্দুর রহিম (৩৫) সিলেটের গোলাপগঞ্জ থানার মীরগঞ্জ এলাকার হাওরতলা গ্রামের সমছু মিয়ার পুত্র।
সোমবার সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বিমল চন্দ্র সিকদার এ রায় ঘোষনা করেন। এ সময় আব্দুর রহিম আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, গোলাপগঞ্জের হাওরতলা গ্রামের দেলওয়ার হোসেনের ৪ মেয়ে। তার প্রতিটি মেয়ের সাথে স্কুল-কলেজে লেখাপড়া করার সময় উত্যক্ত করত বখাটে আব্দুর রহিম। এর পর তাদের বিয়ে হয়ে গেলে তার ছোট মেয়ে স্থানীয় মীরগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী শারমিন বেগম (১৫)’র পিছু নিয়ে উত্যক্ত করে আসছিল আব্দুর রহিম। তার এ উত্যক্তের বিষয়টি শারমিন তার পরিবারকে জানায়।
পরে দেলওয়ার হোসেন ২০০৯ সালের ৫ ডিসেম্বর শারমিনের স্কুল পরিচালনা কমিটির কাছে এবং ৬ ডিসেম্বর গোলাপগঞ্জ থানা বরাবরে বখাটে আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে দু’টি অভিযোগ দায়ের করেন। এর পর স্থানীয় ইউ/পি সদস্যসহ এলাকার গণ্যমান্যরা বৈঠকের মাধ্যমে আব্দুর রহিমকে শ্বাসিয়ে দেন এবং ঘটনার পুনরাবৃত্তি না করা জন্য সর্তক করে বিষয়টির আপোষ নিষ্পত্তি করে দেয়া হয়। এতে আব্দুর রহিম আরো বেপোরোয়া হয়ে উঠে।
এর পর ২০১০ সালের ১১ মে সকালে শারমিন বেগম প্রাইভেট পড়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি হতে শিক্ষকের কাছে যাওয়ার পথে তাদের বাড়ির রাস্তার একটু দক্ষিণে পৌছামাত্র পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা বখাটে আব্দুর রহিম তাকে ঝাপটে ধরে মুখে চাপা দিয়ে ধর্ষনের চেষ্টা চালায়। এ সময় তার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে শারমিনকে উদ্ধার করেন। এ সুযোগে আব্দুর রহিম পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় শারমিনের মা পিয়ারা বেগম বাদি হয়ে আব্দুর রহিমকে আসামী করে গোলাপগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। নং- ১৪ (২১-০৮-২০১০)।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে একই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর গোলাপগঞ্জ থানার এসআই আবু জাফর মিয়া একমাত্র আব্দুর রহিমকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার চার্জশিট দাখিল করেন এবং ২০১১ সালের ২৪ মার্চ থেকে আদালত এ মামলার বিচারকার্য্য শুরু করেন।
দীর্ঘ শুনানী ও ৭ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত আসামী আব্দুর রহিমকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত,০৩) এর ১০ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাকে উল্লেখিত দন্ডাদেশ প্রদান করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে বিশেষ পিপি এডভোকেট মোঃ আব্দুল মালেক ও আসামীপক্ষে এডভোকেট শাহ মোঃ মোসাহিদ আলী মামলাটি পরিচালনা করেন।
১৩ মার্চ, ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/প্রতিনিধি/এইচএস/কেএস