ওয়েছ খসরু: সিলেটে এবারও চমক দেখালো সিলেটের ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ও ব্লু-বার্ড। পাসের হারে এ দুটি প্রতিষ্ঠান শতভাগ। আবার মেধার লড়াইয়ে এগিয়ে গেল তারা। এ দুটি প্রতিষ্ঠান শুধু এবার নয়, প্রতিবারই চ্যাম্পিয়নের গৌরব বজায় রেখে চলেছে। তবে, এবার ব্লু-বার্ডকে পেছনে ফেলে এগিয়ে গেলো ক্যান্টনমেন্ট স্কুল। এই স্কুলে এবার মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৮৮ জন। এর মধ্যে ১৬৬ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। পাসের হারেও বিদ্যালয়টি সেরা।
গতকাল ফলাফল ঘোষণার পর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উল্লাস করেছেন। কড়া নিয়মের মধ্যে আবদ্ধ সিলেটের ক্যান্টনমেন্ট স্কুলের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকের পাশাপাশি অভিভাবকরাও ভালো ফলাফলে সচেতন। এ কারণে এবারও সেরাদের সেরা হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে আলোকিত এ প্রতিষ্ঠানটি। শিক্ষকরা জানিয়েছেন, আগামীতে আরো ভালো করতে চায় এ প্রতিষ্ঠান। পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তি করতে চান সমান সমান। যেমনটি প্রতিবারই ঘটে সিলেট ক্যাডেট কলেজের বেলায়। এদিকে, নীল পাখিরাও এবার চমক দেখিয়েছে। সিলেটের ব্লু-বার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা বরাবরই মেধার বিকাশে এগিয়ে রয়েছে। এবারও তার ব্যত্যয় ঘটেনি।
এই স্কুল থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ২৬৫ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪৭ জন শিক্ষার্থী। গতকাল বেলা দুইটা বাজার একটু আগেই বিদ্যালয়ের মাঠে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা। এমন সময় প্রিন্সিপাল মিসেস হুসনেআরা মাইকে এসে ফলাফল ঘোষণা শুরু করলেন। তিনি যখন এক এক করে ফলাফল ঘোষণা করছিলেন তখন বাইরের মাঠে চলছিল উল্লাস। অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। ফলাফল জানতে বিদ্যালয়ে মেয়ের সঙ্গে স্কুলে এসেছিলেন টুকেরবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহীদ আহমদ। মেয়ের ফলাফলে তিনি খুশি। জানালেন, মেয়ে ভালো রেজাল্ট করুক সে ব্যাপারে তারা সতর্ক ছিলেন। মেয়ের ফলাফলে তারা সন্তুষ্ট। তিনি স্কুলের শিক্ষকদের সাধুবাদ জানান।
এদিকে, ফলাফল ঘোষণার পর গোটা ক্যাম্পাসজুড়ে শুরু হয় আনন্দ উল্লাস। বাদ্যযন্ত্র নিয়ে নাচ শুরু করে কৃতী শিক্ষার্থীরা। এ সময় কেউ কেউ সাংবাদিকদের কাছে তাদের অনুভূতির কথা জানায়। কেউ ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার আবার কেউ বা হতে চায় রাজনীতিবিদ। ফলাফল ঘোষণার পর বিদ্যালয়ের প্রিন্সিপাল শামসুন্নাহার জানালেন, ফলাফলে তিনি খুশি। আগামীতে যাতে আরো ভালো ফলাফল করা যায় সে ব্যাপারে তারা সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন।
এগিয়ে ছেলেরা: সিলেটে মেয়েদের চেয়ে ভালো করেছে ছেলেরা। গড় পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তি উভয়দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে তারা। ৩৭ হাজার ৬৭২ জন ছেলে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ৩২ হাজার ৩১৮ জন। ছেলেদের পাসের হার ৮৫ দশমিক ৭৯ ভাগ। অপরদিকে ৪৬ হাজার ৭৭৬ জন মেয়ে পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৩৯ হাজার ২৬৮ জন। মেয়েদের পাসের হার ৮৩ দশমিক ৯৫ ভাগ। মোট জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ২ হাজার ২৬৬ জনের মধ্যে ১ হাজার ২২৫ জন ছেলে ও ১ হাজার ৪১ জন মেয়ে।
জিপিএ-৫ কমেছে: সিলেট বোর্ডে কমেছে জিপিএ-৫ প্রাপ্তের সংখ্যা। এবার পাস করেছে ৮৪ দশমিক ৭৭ ভাগ। যা গত বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৯৫ ভাগ বেশি। ২০১৫ সালে পাসের হার ছিল ৮১ দশমিক ৮২ ভাগ। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ২৬৬ জন। গতবছর এই সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৪৫২ জন। বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় সিলেট মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডে ফলাফল প্রকাশ করেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. শামসুল ইসলাম। তিনি জানান, গতবারের তুলনায় এবার সিলেটে পাসের হার বেড়েছে কিন্তু জিপিএ-৫ কমেছে। এবার এসএসসি পরীক্ষায় পাস করেছে শতকরা ৮৪ দশমিক ৭৭ ভাগ শিক্ষার্থী। পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ২৬৬ জন।-মানবজমিন
১২ মে, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ