বুধবার, ০২ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:৫১:০৫

‘তিন দিন লুকিয়ে রেখেও স্বামীকে বাঁচাতে পারিনি’

‘তিন দিন লুকিয়ে রেখেও স্বামীকে বাঁচাতে পারিনি’

ফিরোজ আমিন সরকার, ঠাকুরগাঁও থেকে : ইউপি নির্বাচনে প্রতিপক্ষের প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় ঘরবাড়ি ছাড়া তিন দিন ধরে। বৃহস্পতিবার সারা রাত ধানক্ষেতে রাতযাপনের পর ভোরেই চলে যাই পঞ্চগড়ের দেবিগঞ্জ উপজেলায় ভাতিজার বাড়িতে। সোমবার ভোট শেষে রাতে বাড়ি ফেরার জন্য আসি।

পথিমধ্যে ডোডাপাড়া মাদরাসার পেছনে গেলে আনোয়ারের নেতৃত্বে কয়েকজন এসে স্বামী মন্টুকে ধরে নিয়ে যায়। এর পর চিৎকার করতে নিষেধ করে। প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। ভয়ে ধানক্ষেতে সারা রাত কাটার পর স্বামীর লাশ দেখতে পাই। তিনদিন লুকিয়ে থেকে স্বামীকে রক্ষা করতে পারিনি। আমার আর কেউ  নেই। আমার সব শেষ এমন আহাজারি নিহত মকবুল হোসেন ওরফে মন্টু’র স্ত্রী বাচ্চাই বেগমের।   

ঠাকুরগাঁওয়ের নারগুন ইউপি নির্বাচনে প্রতিপক্ষের সমর্থকদের ভয়ে তিন দিন লুকিয়ে থেকেও শেষ রক্ষা হলো না মকবুল ওরফে মন্টু নামে এক কামারের সহযোগীর। মঙ্গলবার সকালে সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের ডোডাপাড়ার নুর ইসলামের বাঁশঝাড় থেকে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে এলাকাবাসী। মন্টুর বাড়ি নারগুন ইউনিয়নের কিসমত দৌলতপুর গ্রামে।

পুলিশও ধারণা করছে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর বাঁশঝাড়ে লাশ ঝুলিয়ে রেখেছে অজ্ঞাতরা। ভোটের ফলাফল শেষে সোমবার রাতে নিজবাড়িতে ফিরে আসার সময় প্রতিপক্ষের লোকজন মন্টুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ স্ত্রী বাচ্চাই বেগমের।

স্ত্রী বাচ্চাই অভিযোগ করে বলেন, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খোচাবাড়ি হাটের কামার সফিকুল অস্ত্র বানাচ্ছে এমন অভিযোগ পুলিশে দেয় স্থানীয়রা। স্বামী ওই কামারের সহযোগী হওয়ায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর লোকজন বাড়িতে হামলা করে। বাড়িতে থাকা ২৫ হাজার টাকা ও একটি গরু লুট করে নিয়ে যায়। ওই রাত থেকে তাদের ভয়ে পঞ্চগড়ের বোদায় ভাতিজার বাড়িতে লুকিয়ে থেকে সোমবার রাতে বাড়ি আসি। এমন সময় ডোডাপাড়া মাদরাসার পাশে পৌঁছলে ৭/৮জন অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার স্বামীকে তুলে নিয়ে যায়। ভয়ে সারা রাত ধানক্ষেতে লুকিয়ে থেকে সকালে স্বামীর লাশ দেখতে পায় বলে জানান তার স্ত্রী বাচ্চাই বেগম।

এ ঘটনার পর মঙ্গলবার সকালে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের দল নিহত মন্টুর বাড়ি থেকে লুট হওয়া গরুর বাচুরটি উদ্ধার করে দৌলতপুর মণ্ডলপাড়ার করিমের বাড়ি থেকে।

ঠাকুরগাঁও থানার এসআই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাশেদুল আলম বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ওই ব্যক্তিকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি আরো গুরুত্বের সাথে দেখে তদন্ত করা হচ্ছে। দোষীদের আটক করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি। মানবজমিন

০২ নভেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি‌

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে