আন্তর্জাতিক ডেস্ক: শনিবার উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে ভোট পুনর্গণনায় ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের নির্বাচনি শিবির যোগ দেবে বলে তাদের আইনজীবী মার্ক এলিয়াস নিশ্চিত করেছেন। এর পরই ট্রাম্প তার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘জিল স্টেইন ভোট পুনর্গণনার নামে আসলে নিজের কোষাগার মজবুত করছেন। কারণ এর জন্য তিনি সমর্থকদের কাছ থেকে অনুদান নিচ্ছেন।’
ভোট পুনর্গণনার নামে গ্রিন পার্টি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে বলেও অভিযোগ করেন ট্রাম্প। জিল স্টেইনের প্রতি নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ ও কলুষিত না করে তাকে সম্মান দেখানো উচিত।’
নির্বাচনে জয়ী হওয়ার আগে, এমনকি নির্বাচনের দিনও ট্রাম্প নির্বাচনকে সাজানো বলে মন্তব্য করেছিলেন। নির্বাচনের ফলাফল না মেনে নেওয়ারও ইংতিত দিয়েছিলেন। তবে এবার তার জয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য ট্রাম্প তীব্র সমালোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, “জনগণ তাদের মতামত দিয়েছেন, আর নির্বাচন শেষ হয়েছে। নির্বাচনের রাতেই হিলারি ফোন করে আমাকে অভিনন্দন জানিয়ে হার মেনে নেন। তখন হিলারি বলেছিলেন, ‘আমাদের এই ফলাফল মেনে নিতে হবে এবং সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’”
শনিবার এক টুইটার বার্তায় ট্রাম্প বলেন, ‘গ্রিন পার্টির অসম্ভব ভোট পুনর্গণনার ষড়যন্ত্রে যোগ দিয়েছে বাজেভাবে পরাজিত এবং নীতিহীন ডেমোক্র্যাটরা।’
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট কারচুপির অভিযোগ ওঠা তিন অঙ্গরাজ্যের মধ্যে প্রথম দফায় উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে ভোট পুনর্গণনার আবেদন জানানো হয়েছে। শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) গ্রিন পার্টির প্রার্থী জিল স্টেইন উইসকনসিনের নির্বাচন কমিশনে আবেদনটি জমা দেন। কারচুপির অভিযোগ ওঠা অপর দুই অঙ্গরাজ্য মিশিগান ও পেনসিলভ্যানিয়ায়ও শিগগিরই ভোট পুনর্গণনার আবেদন করার অঙ্গীকার করেছেন তিনি। জিল স্টেইনের দাবি, মার্কিন ভোটিং সিস্টেম হ্যাক করে ওই কারচুপি করা হয়।
হিলারি শিবিরের আইনজীবী মার্ক এলিয়াস বলেছেন, ‘ভোট পক্রিয়ায় কোনও ধরনের কারচুপি হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখার জন্য হিলারি শিবির ও বাইরের বিশেষজ্ঞরা নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছেন। নির্বাচনে কারচুপির উদ্দেশে মেশিনের ক্ষতি করা হয়েছে, এমন কোনও প্রমাণ আমরা পাইনি। তবে যে সাড়ে ছয় কোটি মার্কিনি হিলারি ক্লিনটনের সমর্থনে ভোট দিয়েছেন, তাদের অনুরোধের কারণে সত্যিই স্বচ্ছতার সঙ্গে ভোট গণনা হয়েছে কি না, তা জানার জন্য ভোট পুনর্গণনায় অংশগ্রহণের বাধ্যবাধকতা আমাদের রয়েছে।’
উইসকনসিনে হিলারি ক্লিনটনের চেয়ে খুবই কম ব্যবধানের জয় পেয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে পুনর্গণনায় উইসকনসিনের ফলাফল পাল্টে গেলেই যে হিলারি জিতে যাবেন তা নয়। এর জন্য মিশিগান ও পেনসিলভানিয়ার ফলাফলের ওপরও নির্ভর করবে। উইসকনসিন, পেনসিলভানিয়া ও মিশিগানে ইলেক্টোরাল ভোট ছিল যথাক্রমে ১০, ১৬ ও ২০।
পেনসিলভানিয়ায় ভোট পুনর্গণনার আবেদনের সময়সীমা সোমবার আর মিশিগানের সময়সীমা বুধবার পর্যন্ত।
৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল পরিবর্তন করে হিলারিকে প্রেসিডেন্ট হতে হলে উইসকনসিন, মিশিগান ও পেনসিলভানিয়া – এই তিন রাজ্যের ফলই তার পক্ষে যেতে হবে।
উল্লেখ্য, কারচুপির অভিযোগ ওঠা তিনটি অঙ্গরাজ্যে ভোট পুনর্গণনার আবেদনের খরচ মেটানোর জন্য জিল স্টেইন অনলাইনে ফান্ড খুলেছেন সেখানে ৫৩ লাখ ডলার অর্থ সগ্রহ হয়েছে। এ পর্যন্ত যে অর্থ সংগৃহীত হয়েছে তা দিয়ে উইসকনসিন আর পেনসিলভানিয়ার ব্যয় মেটানো যাবে। তবে মিশিগানে আবেদনের জন্য আরও টাকার প্রয়োজন পড়বে। স্টেইনের ওই তহবিল সংগ্রহের পেইজে বলা হয়েছে, তিন অঙ্গরাজ্যে আবেদনের ক্ষেত্রে প্রায় ৬০-৭০ লাখ ডলার খরচ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।-পলিটিকো।
২৭ নভেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এআর