বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫, ০৯:৫৯:১৬

সামনে স্বর্ণের দাম বাড়বে নাকি কমবে? যে ভবিষ্যদ্বাণী

সামনে স্বর্ণের দাম বাড়বে নাকি কমবে? যে ভবিষ্যদ্বাণী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চলতি বছরের প্রথমার্ধে বিশ্ববাজারে সোনার দাম ২৬ শতাংশ বেড়েছে। বছরের বাকি সময়ও সোনার বাজারদর ঊর্ধ্বমুখী থাকার পূর্বাভাস দিয়েছে ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল (ডব্লিউজিসি)।

সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ডব্লিউজিসি জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে সোনার মূল্যবৃদ্ধির পেছনে যেসব কারণ আছে, সেগুলো হলো: ডলারের বিনিময় হার কমে যাওয়া, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা, বিনিয়োগকারীদের চাহিদা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনা কেনা বেড়ে যাওয়া। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিশেষ করে স্থবিরতা বা মন্দার ঝুঁকি বাড়লে ভবিষ্যতে এই ধাতুর চাহিদা আরও বাড়তে পারে।

বছরের দ্বিতীয়ার্ধে সোনার দাম আবার কিছুটা বাড়তে পারে। সেই ধাক্কায় সোনার দাম ৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে ডব্লিউজিসি। তবে বৈশ্বিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে বাজারদর সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।

ডব্লিউজিসি জানিয়েছে, ইদানীং সোনার দামে তেমন একটা ওঠানামা করছে না। এই বাস্তবতা ভবিষ্যতে মূল্যবৃদ্ধির নতুন ভিত্তি তৈরি করেছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, সোনার প্রাতিষ্ঠানিক ক্রেতার তালিকায় নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান যুক্ত হচ্ছে। ভবিষ্যতেও তাদের সোনার চাহিদা অব্যাহত থাকতে পারে। অন্যদিকে ডিডলারাইজেশন প্রক্রিয়া যেভাবে গতি পাচ্ছে এবং ট্রাম্পের শুল্কনীতিজনিত অনিশ্চয়তার কারণে ডলারের দরপতন হচ্ছে, তাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনা কেনার প্রবণতা ঊর্ধ্বমুখী থাকবে বলেই বাজারের ধারণা। এমন প্রেক্ষাপটে সোনার দাম বাড়লে ভোক্তাপর্যায়ের চাহিদা কিছুটা সীমিত হবে। তখন ব্যক্তিপর্যায়ে সোনা পুনর্ব্যবহারের প্রবণতা বাড়বে।

ডব্লিউজিসি আরও জানিয়েছে, সোনার দাম কমতেও পারে। বৈশ্বিক রাজনীতিতে বড় সমঝোতা অথবা বৈশ্বিক বাণিজ্যিক প্রবৃদ্ধি বাড়লে সোনার দাম ১৭ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাওয়ার পূর্বাভাসও দিয়েছে তারা।

এদিকে বিশ্ববাজারে সোনার দাম গত এক মাসে ৫৯ ডলার কমে গেছে। সাধারণত অনিশ্চয়তার মধ্যে সোনার দাম বেড়ে যায়। কিন্তু সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের মধ্যেও সোনার দাম তেমন একটা বাড়েনি। যুদ্ধবিরতির পর দাম আরও কমে যায়। মূলত শেয়ারবাজারসহ কোনো বাজারই ট্রাম্পের শুল্ক হুমকিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন না। সে কারণে শেয়ারবাজারেও ট্রাম্পের শুল্ক হুমকির তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। ফলে যুদ্ধ পরিস্থিতি বা এ ধরনের শুল্ক নিয়ে ধারাবাহিকতাহীন নীতির মধ্যে সোনার দাম যতটা বাড়ার কথা, ততটা বাড়েনি।

গোল্ড প্রাইস ডট অর্গের তথ্যানুসারে, আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববাজারে সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৩৪২ ডলার। রূপার দাম আউন্সপ্রতি ৩৮ ডলার। বিশ্লেষকেরা মনে করেন, সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৩০০ ডলারের আশপাশে থাকা ভালো, এই দামে বেচাকেনা বাড়বে। দাম ৩ হাজার ২৫০ ডলারে নেমে এলে তা আরও ভালো। এই দামে বেচাকেনা আরও বাড়বে।

গতকাল বুধবার বিশ্ববাজারে ডলারের বিনিময় হার দশমিক ১ শতাংশ কমে গেছে। ডলারের বিনিময় হার কমে গেলে অন্যান্য মুদ্রা ব্যবহারকারী দেশের কাছে সোনা তুলনায়মূলক সস্তা হয়ে ওঠে। এ অবস্থায় চাহিদা বেড়ে গেলে দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়।

বিশ্বে সোনাকেই সবচেয়ে স্থিতিশীল ও নির্ভরযোগ্য পণ্য হিসেবে ধরা হয়। বলা হয়, একমাত্র সোনার দরেই সাধারণত বড় ধরনের অস্থিতিশীলতা দেখা যায় না। সোনা কিনে রাখলে লোকসানের ভয় নেই বলা যায়। এ কারণেই সোনার প্রতি সবার এত আকর্ষণ। ৫০ বছর আগে কেউ সোনা কিনে রাখলেও তা ভালো বিনিয়োগ হিসেবেই বিবেচিত। শেয়ারবাজার, ডলার বা অন্য কিছু—এই নিশ্চয়তা দেয় না।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে