আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নোটবাতিলে এমন পরিস্থিতিরও যে সম্মুখীন হতে হবে তা ভাবতেই পারেননি ফুলমতির পরিবার। সোমবারই মৃত্যু হয় নয়ডার বাসিন্দা বছর ৬২-র ফুলমতির। দীর্ঘ ৬ মাস ধরে ক্যানসার রোগের জন্য চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
মরদেহ দাহ করতে যে নগদ অর্থ লাগবে তা ফুলমতির পরিবারের কাছে ছিল না। নগদ মজুদ নেই বলে ফুলমতির পরিবারকে ফিরিয়ে দেয় ব্যাংক। অর্থের অভাবে সোমবার রাত পর্যন্ত ফুলমতির মরদেহ দাহ করা যায়নি।
শেষমেশ মঙ্গলবার সকালে ফুলমতির দেহ ব্যাংকে নিয়ে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে পরিবার। ব্যাংকের দরজার সামনে এমন বিক্ষোভে হতবাক হয়ে যান সকলে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অনেক বোঝানো সত্ত্বেও দেহ সরিয়ে নিয়ে যেতে অস্বীকার করে ফুলমতির পরিবার।
বছর পাঁচেক আগে বাস্তি থেকে নয়ডার সেক্টর ৯ এসে চলে আসেন ফুলমতি, স্বামী মুন্নিলাল এবং ছেলে যমুনাপ্রসাদের সঙ্গে। মুন্নিলাল সবজি বিক্রি করেন। আর ছেলে যমুনাপ্রসাদ দর্জির কাজ করেন। মুন্নিলাল জানান, তাঁদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১৬,০০০ টাকা ছিল। কিন্তু, ব্যাংক তা তুলতে না দেওয়ায় ফুলমতির দাহকার্য সারাটা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
ব্যাংকের সামনে মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভের ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ চলে আসে। পরিস্থিতি দেখে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক নিজের পকেট থেকে ২,০০০ টাকা মুন্নিলালকে দেওয়ার চেষ্টা করলেও কোনও লাভ হয়নি। কারণ, মুন্নিলাল সাফ জানিয়ে দেন, ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে না পারলে ফুলমতির দেহ নিয়ে তিনি বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন।
খবর পেয়ে, ঘটনাস্থলে আসেন স্থানীয় বিধায়ক। তিনিও মুন্নিলালকে ১০,০০০ টাকা দিতে চান। কিন্তু, ফুলমতির পরিবার তা নিতে অস্বীকার করে। এরপরই পুলিশ আধিকারিক ব্যাংক ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলেন। অনেক টালবাহানার পর, বিকেল নাগাদ ব্যাংক ফুলমতির পরিবারকে টাকা তুলতে অনুমতি দেয়। কিন্তু, রাত হয়ে যাওয়ায় ফুলমতির দেহ দাহ করতে অস্বীকার করে পরিবার।
তাঁরা জানায়, তাঁদের বংশে সন্ধ্যার পরে মরদেহ দাহ করা নিষেধ। যার ফলে মঙ্গলবারও রাতভর পড়ে থাকে ফুলমতির দেহ। শেষমেশ বুধবার সকালে ফুলমতির মরদেহ দাহ করা হয়।-এবেলা
৩০নভেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/টি.জে