বৃহস্পতিবার, ০১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:৫৪:৩২

একই বিপদ: ব্রাজিল ফুটবল দলের পরিণতি থেকে কিভাবে বেঁচে গেলেন মমতা?

একই বিপদ: ব্রাজিল ফুটবল দলের পরিণতি থেকে কিভাবে বেঁচে গেলেন মমতা?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কয়েক হাজার মাইলের দূরত্ব। কিন্তু মিলে গিয়েও মিলল না ভারতের কলকাতা আর কলম্বিয়া। মাঝ আকাশে একই ধরনের বিপদের ফলে কলম্বিয়ার মতোই ভয়ঙ্কর পরিণতির সাক্ষী থাকতে পারতো কলকাতাও। ব্রাজিলের সাপেকোয়েন্সে ফুটবল দলের মতো বিমান বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পড়তে বেঁচে গেলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মঙ্গলবার কলম্বিয়ায় ভেঙে পড়েছিল ব্রাজিলের সাপেকোয়েন্সে ফুটবল দলের চার্টার্ড বিমান। বিমানে থাকা ফুটবলার-সহ ৭১জন এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। বেঁচে গিয়েছেন ছ’জন। সেই বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু হতে না হতেই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। অভিশপ্ত বিমানটি ভেঙে পড়ার আগে পাইলট এবং এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের শেষ কথোপকথনের টেপ লিক হয়ে গিয়েছে কলম্বিয়ার সংবাদমাধ্যমে।

আর সেখানেই শোনা যাচ্ছে, ব্রিটিশ পাইলট বুঝতে পেরেছিলেন বিমানের জ্বালানি ফুরিয়ে আসছে। সেই জন্য জরুরি অবতরণের জন্য নিকটবর্তী বিমানবন্দরের অনুমতি চান তিনি। কিন্তু এক মহিলা আধিকারিক তাঁকে জানিয়ে দেন, আরও একটি বিমান যান্ত্রিক সমস্যা নিয়ে বিমানবন্দরে অবতরণ করছে। ফলে ওই চার্টার্ড বিমানকে সাত মিনিট আকাশে অপেক্ষা করতে হবে। এর পরেই মরিয়া হয়ে ওই পাইলট কার্যত চিৎকার করতে থাকেন।

তিনি জানান, বিমানটি ৯০০০ ফুটে নেমে এসেছে। পরিস্থিতি আন্দাজ করতে পেরে তখন আগের বিমানটিকে সরিয়ে চার্টাড বিমানটিকে নামার অনুমতি দেওয়া হয়। ততক্ষণে অবশ্য অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। পাহাড়ে ধাক্কা খেয়ে ধ্বংস হয়ে যায় সাপেকোয়েন্সে ফুটবল দলের চার্টার্ড বিমানটি। ভেঙে পড়ার পরেও বিমানটিতে সেভাবে আগুন লাগেনি। জ্বালানী না থাকাতেই বিমানটিতে আগুন ধরেনি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

বুধবার রাতে কলকাতার আকাশেও অনেকটা একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। রাত আটটা নাগাদ পটনা থেকে আসা ইন্ডিগোর বিমান কলকাতায় অবতরণের কথা ছিল। কিন্তু তার আগে আরও বেশ কয়েকটি বিমান থাকায় মাঝআকাশে অপেক্ষা করতে বলা হয় বিমানটিতে। সেই বিমানেই ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

অভিযোগ, প্রায় আধ ঘণ্টা আকাশে চক্কর কাটতে কাটতে বিমানের জ্বালানী প্রায় শেষ হয়ে এসেছিল। বিপদ আঁচ করে তা কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলকে জানান বিমানচালক। সঙ্গে সঙ্গেই জরুরি ভিত্তিতে বিমানটিকে আগে অবতরণের সুযোগ করে দেওয়া হয়। রানওয়ের পাশে দমকল, অ্যাম্বুল্যান্স, চিকিৎসকদেরও তৈরি রাখা হয়েছিল। যদিও, বিমানে থাকা মমতার সফরসঙ্গী, রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অভিযোগ করেছেন, বিমানচালক বার বার জ্বালানী ফুরিয়ে আসার কথা বলা সত্ত্বেও বিমানটিকে নামার অনুমতি দেওয়া হয়নি।

কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রে খবর, প্রথম রানওয়েতে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলায় দ্বিতীয় রানওয়ে ব্যবহার করে বিমান ওঠানামা চলছে। সেই কারণেই একসঙ্গে অনেক বিমান অবতরণের জন্য চলে আসলে কিছু বিমানকে আকাশে অপেক্ষা করতে বলা হচ্ছে। মমতার বিমানের ক্ষেত্রে অবশ্য কোনও দেরি করা হয়নি বলেই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি।

যাই হোক না কেন, কলম্বিয়ার বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ যে ভুল করেছিল, কলকাতার এটিসি সেই ভুল করেনি। না হলে হয়তো ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে একই ধরনের বিপর্যয়ের সাক্ষী থাকত কলকাতা আর কলম্বিয়া। -এবেলা।
০১ ডিসেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে