আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জোরদার সেনা অভিযান কলকাতার ২ নম্বর জাতীয় সড়কে ৷ বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই পশ্চিমবঙ্গের দুই গুরুত্বপূর্ণ টোলপ্লাজার সামনে ভারতীয় সেনা টহল দিতে দেখা যায়৷ বর্ধমানের পালসিট ও হুগলির ডানকুনি, এই দু’ই টোলপ্লাজায় মোতায়েন রয়েছে সেনা৷ ঠিক কি কারণে তল্লাশি তা নিয়ে সেনার তরফে পরিষ্কার করে কিছু জানানো হয়নি৷
তবে সূত্রের খবর, দেশে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে জাতীয় সড়কে কত গাড়ি তোলা যাবে তা ক্ষতিয়ে দেখতেই সেনার এই টহলদারি৷
এদিকে সেনা মোতায়েন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী৷ রাজ্যকে না জানিয়ে কি করে সেনা মোতায়েন করল কেন্দ্র এই প্রশ্ন তোলেন তিনি৷ দেশে কি জরুরী অবস্থা জারি হয়েছে? নাকি বিপর্যয় দেখা দিয়েছে? প্রশ্ন মমতার৷ নরেন্দ্র মোদি সরকার গায়ের জোরে যা খুশি তাই করছে বলেও দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷
গত তিন দিন ধরে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের পালসিট টোলপ্লাজায় সেনাবাহিনীর সাপ্লাই জোনের উদ্যোগে বেসরকারি গাড়ি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্ৰহ অভিযান চলছে। ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে নানান সন্দেহ দানা বাঁধছে। যদিও এই বিষয়টি সম্পর্কে আতংকিত হওয়ার কিছু নেই বলেই জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা।
বৃহস্পতিবার বর্ধমানের পলিসিট টোলাপ্লাজায় হাজির সমীক্ষা পরিচালন করতে আসা নাম প্ৰকাশে অনিচ্ছুক সেনাবাহিনীর এক কর্তা জানিয়েছেন, এই নিয়ে অহেতুক আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। প্রতিবছরই ১ ডিসেম্বরকে সামনে রেখেই তারা সমস্ত রাজ্যেই এই সমীক্ষা চালিয়ে আপ টু ডেট থাকার চেষ্টা করেন।
কারণ হিসাবে তিনি জানিয়েছেন, ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় যুদ্ধের সরঞ্জাম বয়ে নিয়ে যাওয়া, খাবার কিংবা সৈন্যবাহিনীকে যুদ্ধক্ষেত্রে বয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে একটা সমস্যা দেখা দেয় গাড়ি নিয়ে। সেই অসুবিধার কথা মাথায় রেখেই সেনাবাহিনী প্রতিবছর ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের কথা মাথায় রেখেই এই সমীক্ষা চালায়।
পালসিট টোলাপ্লাজার ম্যানেজার প্ৰীতম চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তিন দিন ধরে সেনাবাহিনীর লোকজন এই সমীক্ষা চালাচ্ছেন। প্রায় পঞ্চাশজন সেনা এই কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে ভারত-পাকিস্তানের সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে৷ আগামীদিনে নতুন করে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে আঁচ করেই কী এই সমীক্ষা চালানো হচ্ছে? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানিয়েছেন, এটা একটা কারণ হলেও একমাত্র কারণ নয়। কারণ সেনাবাহিনীকে সবসময়য়ই সবরকম পরিস্থিতির জন্যই প্রস্তুত থাকতে হয়। তাই গোটা রাজ্যে বেসরকারি যানবাহন সংকান্ত এই সমীক্ষা বা তাদের সম্পর্কে নথি সম্পর্কেও তারা আপ টু ডেট থাকেন। যাতে প্রয়োজনে তাদের দ্রুত ব্যবহার করা যায়।
তিনি জানিয়েছেন, মূলত তারা বিভিন্ন বেসরকারি গাড়িগুলিকে চিহ্নিত করে তাদের সম্পর্কে একটি প্ৰাথমিক ডেটা সংগ্ৰহ করছেন। কোথাকার গাড়ি, কি মডেলের গাড়ি প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর একটি স্টিকারও তাতে লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কলকাতা ২৪
১ ডিসেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি