আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভেজাল দুধে ফেনা আনতে মেশানো হচ্ছে গুঁড়ো সাবান। রাজ্যে ভেজাল দুধের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমে এই তথ্য পেয়েছে রাজ্য পুলিশের এনফোর্সমেন্ট শাখা (ইবি)। রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিত্ করপুরকায়স্থকে দেওয়া ১৭ পাতার একটি রিপোর্টে ইবি এই সব কথা বিস্তারিত ভাবে জানিয়েছে।
শুধু তাই নয়, ভেজাল দুধের কারবারে সরকারি নজরদারি ব্যবস্থার অভাব যে কতখানি, স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে তা-ও। বিক্রয়যোগ্য দুধের মান ঠিক আছে কি না, সেটা দেখার কথা ফুড সেফটি অফিসারদের। যারা স্বাস্থ্য দফতরের অধীন।
কিন্তু খাদ্য সুরক্ষা আধিকারিক পদে এখনও যে পর্যাপ্ত সংখ্যক নিয়োগই করে উঠতে পারেনি, সেটা দফতরের কর্তারাই স্বীকার করে নিচ্ছেন। ফলে নজরদারি ঠিকমত হচ্ছে না এবং তার জেরে নিরাপত্তার ফাঁক গলে বাজারে চলে আসছে ভেজাল দুধ। রাজ্য জুড়ে যে খোলা দুধ বিক্রি হয়, তার একাংশেও ফর্মালিন, মেলামিন, ইউরিয়ার মতো ক্ষতিকর রাসায়নিক মেশানো হচ্ছে বলে ইবি-র দাবি।
কিন্তু কোনটা ভেজাল আর কোনটা নিরাপদ, সেটা কিভাবে বোঝা যাবে? ইবি জানিয়েছে, বাজারে যে সব সংস্থার দুধ পলিপ্যাক বা টেট্রাপ্যাকে পাওয়া যায়, তার মধ্যে হুগলির ডানকুনির সরকারি ডেয়ারি দিনে ছ'লক্ষ লিটার দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার তৈরি করে। বারাসতের আধা সরকারি ডেয়ারিটি সেখানে তৈরি করে দিনে চার লক্ষ লিটার। গুজরাতের দুগ্ধ সমবায়ের দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার পশ্চিমবঙ্গে তৈরি করে বাঁকুড়ার জয়রামবাটির একটি বেসরকারি ডেয়ারি।
সেখানে দিনে পৌনে দু'লক্ষ লিটারেরও বেশি দুধ উত্পন্ন হয়। নদিয়ার মোহনপুরের সরকারি ডেয়ারিতে উত্পন্ন হয় দিনে ৫০ হাজার লিটারের কিছু কম দুধ। জানানো হয়েছে, এই চারটি ব্র্যান্ডের দুধে এখনও গণ্ডগোল ধরা পড়েনি। কিন্তু বিপদের কথা হল, দুধ সংগ্রহের সময়ে ডানকুনি বা বারাসতের ডেয়ারি যে দুধ ভেজাল বলে বাতিল করছে, সেই দুধই আবার অন্য পথে প্যাকেটবন্দি হয়ে চলে আসছে বাজারে। ইবি সূত্রে খবর, রোজ গড়ে ৫০-৬০ হাজার লিটার দুধ ভেজাল বলে বাতিল করা হচ্ছে।
কিন্তু তা চলে যাচ্ছে কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার প্ল্যান্টে। প্রাথমিক ভাবে ইবি জেনেছে, হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর, হুগলির জাঙ্গিপাড়া ও উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটায় ওই সব সংস্থার প্ল্যান্ট আছে। তিনটি জায়গা মিলিয়ে রোজ প্রায় ৬০ হাজার লিটার দুধ তৈরি হচ্ছে। ইবি-র রিপোর্ট বলছে, কোনও ডেয়ারি যখন কোনও দুধ বাতিল করছে, তখন দুধ ফিরিয়ে দেওয়ার চিরকুটে তারা লিখছে- ' নট অ্যাকসেপ্টেড ফর আওয়ার কাইন্ড অব ইউজ।
আমাদের মানের বিচারে গ্রহণযোগ্য নয়। ' ইবি-র বক্তব্য, অন্য কোনও ডেয়ারি সস্তায় ওই দুধ কেনার সময়ে ভাষার ফাঁককেই কাজে লাগাচ্ছে। ইবি-র রিপোর্টে তাই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, ' নোট অব মিল্ক রিটার্ন ' -এ পরিষ্কার করে ' রিজেক্টেড ' শব্দটি লেখা উচিত। --এ এন এন
এমটিনিউজ২৪/এম.জে