আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিয়ানমার ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য লঙ্গরখানা খুলেছে শিখ সম্প্রদায়ের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। খালসা এইড নামের ওই সংস্থাটি রবিবার রাতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার আন্তর্জাতিক সীমান্তে পৌঁছায়। এরপর রাতেই বাংলাদেশের সীমান্ত শহর টেকনাফে লঙ্গরখানা চালু করে রোহিঙ্গা মুসলিমদের মধ্যে খাবার পরিবশন শুরু করে।
টেকনাফ থেকে ফোনে ভারতের একটি ইংরেজি দৈনিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে ফোনে খালসা এইড-ভারত'র ম্যানেজিং ডিরেক্টর অমরপ্রীত সিং জানান, সীমান্তে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবস্থা অত্যন্ত দুঃখের, যা বর্ণনা করার মতো নয়।
তিনি বলেন, শরণার্থীদের সহায়তা করার জন্য ওইদিনই ছিল আমাদের প্রথম দিন। প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে ত্রাণ সহায়তা করার ব্যাপারে আমরা প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু এখানে এসে দেখলাম যে তিন লাখেরও বেশি শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে। তাদের কাছে পানি, খাদ্য, পোশাক বা বাসস্থানের কোনো বন্দোবস্ত নেই। যেখানে জায়গা পাচ্ছে বসে পড়ছে। বর্ষণের মধ্যেও এই অসহায় রোহিঙ্গাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। এ পরিস্থিতি খুবই করুণ। আমরা কিছু ত্রিপলের বন্দোবস্ত করেছি। কিন্তু তার তুলনায় শরণার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি।
অমরপ্রীত আরও জানান, টেকনাফে এক একটি ত্রাণ শিবিরে ৫০ হাজার শরণার্থীর ব্যবস্থা থাকলেও তাদের বেশিরভাগ শিবিরেই এক লাখের বেশি শরণার্থী রয়েছেন। শিশুরা পোশাকবিহীন ইতস্তত ঘুরে বেড়াচ্ছে, খাবারের জন্য ভিক্ষা করছে। যারা শিবিরে ঠাঁই পায়নি তারা রাস্তার পাশেই বসে পড়ছে একমুঠো খাবারের আশায়। টেকনাফ থেকেই নদী পথে লঙ্গরখানার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মাঝে মাঝে বর্ষণ ও যোগাযোগের অসুবিধার কারণে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তারপরেও যত তাড়াতাড়ি দুর্গত মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
জম্মু-কাশ্মীর থেকে যাওয়া খালসা এইড'র স্বেচ্ছাসেবী জীবনজ্যোত সিং। তিনি এই মুহূর্তে টেকনাফেই কাজ করছেন। তিনি জানান, ১০ দিন আগে মিয়ানমার থেকে শরণার্থীরা হাঁটা শুরু করে। এরপর নৌকায় করে তারা টেকনাফে পৌঁছায়। এখনও পর্যন্ত তারা প্রত্যেকেই খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। তাদের এখন আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।
এমটিনিউজ২৪ডটকম/আ শি/এএস