বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:১০:০৯

হিন্দুদের ডিভোর্স নিয়ে ঐতিহাসিক রায় সুপ্রিম কোর্টের

হিন্দুদের ডিভোর্স নিয়ে ঐতিহাসিক রায় সুপ্রিম কোর্টের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : হিন্দুদের ডিভোর্স নিয়ে ঐতিহাসিক রায় দিলো সুপ্রিম কোর্ট।  হিন্দু দম্পতিদের বিবাহবিচ্ছেদের আগে অন্তত ছ'মাস অপেক্ষা করা বাধ্যতামূলক নয় বলেই মনে করে সুপ্রিম কোর্ট।

একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিকের খবর অনুযায়ী, মঙ্গলবার একটি মামলার রায় দিতে গিয়ে এমনই মত দিয়েছে সু্প্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। আইন মেনে চূড়ান্ত বিচ্ছেদের আগে ভেবে দেখার জন্য দম্পতিদের ছ'মাস অপেক্ষা করার বিষয়টি চাইলেই উপেক্ষা করা যায় বলেই মনে করেন শীর্ষ আদালতের বিচারপতিরা।

দম্পতির একসঙ্গে থাকার সমস্ত রকম চেষ্টা যদি ব্যর্থ হয়ে থাকে এবং দু'জনে যদি একবছর বা তার বেশি সময় আলাদা-আলাদা থেকে থাকেন, তাহলে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য নতুন করে আরও ছ'মাস অপেক্ষা করা অর্থহীন বলেই মনে করে শীর্ষ আদালত।

এক্ষেত্রে ছ'মাসের অপেক্ষা স্বামী-স্ত্রী দু'জনেরই নতুনভাবে জীবন শুরু করার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করে বলেই মনে করেন বিচারপতিরা। প্রায় আট বছর আলাদা ভাবে থাকছিলেন, এমন এক এমনই এক দম্পতি বিবাহবিচ্ছেদের জন্য ছ'মাসের এই সময়সীমা বাদ দেওয়ার আবেদন জানিয়ে সু্প্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন।

সেই মামলার রায় দিতে গিয়েই শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ বলে, ''উদ্দেশ্যহীন একটি দাম্পত্যজীবনকে অহেতুক কিছু দিন টেনে নিয়ে যাওয়া বা স্বামী-স্ত্রী দু'পক্ষের মানসিক যন্ত্রণা বাড়ানোর জন্য এই ছ'মাসের সময়সীমা রাখা হয়নি।

যেখানে বিয়েকে বাঁচানোর সবরকম চেষ্টা ব্যর্থ, দু'পক্ষের মিলমিশের কোনও সম্ভাবনাই নেই, সেখানে আদালতের হাত গুটিয়ে বসে থাকার কোনও অর্থ হয়না। বরং আদালতের হস্তক্ষেপে স্বামী-স্ত্রী দ্রুত ভাল বিকল্প পথ বেছে নিতে পারেন।''

বিচারপতি এ কে গোয়েল এবং বিচারপতি ইউ ইউ উদিতের ডিভিশন বেঞ্চ আরও বলে, দম্পতিরা যাতে তাড়াহুড়োতে কোনও সিদ্ধান্ত না নিয়ে ফেলেন, তা নিশ্চিত করতেই ছ'মাসের এই 'কুলিং অফ পিরিয়ড' রাখা হয়। কিন্তু তা কখনওই বাধ্যতামূলক হতে পারে না। হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্ট-এর ১৩বি(২) ধারা অনুযায়ী, বিবাহবিচ্ছেদের আবেদনের পরে স্বামী বা স্ত্রী কোনওপক্ষই ৬ মাস থেকে ১৮ মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত বদল না করলে আদালত বিবাহবিচ্ছেদের পক্ষে রায় দিতে পারে।

শীর্ষ আদালতের দুই বিচারপতি বলেন, ভরণপোষণ, সন্তানের দায়িত্ব এবং নিজেদের মধ্যে অন্যান্য যাবতীয় বিষয় নিয়ে নিষ্পত্তি হয়ে গেলে ছ'মাস অপেক্ষা করার কোনও অর্থ হয় না। দম্পতির পুনর্মিলনের আর কোনও সম্ভাবনাই নেই, এ বিষয়ে নিশ্চিত হলে সংশ্লিষ্ট আদালতই ছ'মাসের সময়সীমা বাদ দেওয়ার বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

বিবাহবিচ্ছেদর আবেদন জমা পড়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই ছ'মাস অপেক্ষার এই সময়সীমা বাদ দেওয়ার আবেদন জানিয়ে দম্পতিরা আদালতে আবেদন করতে পারেন বলে মত দিয়েছে শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ।  --এবেলা

এমটিনিউজ২৪/এম.জে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে