শুক্রবার, ০৫ জানুয়ারী, ২০১৮, ০১:২৩:৫৬

প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হতে চান ইভাঙ্কা

প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হতে চান ইভাঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হতে চান ট্রাম্প কন্যা ইভাঙ্কা। ইতিমধ্যেই স্বামী জারেড কুশনারের সঙ্গে এই বিষয়ে পরিকল্পনাও সাজিয়ে ফেলেছেন তিনি। ভবিষ্যতে তিনি সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়বেন। বিখ্যাত মার্কিন সাংবাদিক মাইকেল উলফের লেখা ‘ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি: ইনসাইড দ্য ট্রাম্প হোয়াইট হাউস’ বইতে এমনটিই দাবি করা হয়েছে। এতে উঠে এসেছে মার্কিন প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ সব খবর। ফাঁস হয়েছে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার সময়ের বিভিন্ন গোপন তথ্য।
এমনকি ট্রাম্প পরিবারের তথ্যও প্রকাশ করা হয়েছে এতে। সূত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে হোয়াইট হাউসের সাবেক কৌঁসুলি স্টিভ ব্যাননকে। যাকে ট্রাম্প তার চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছেন। উলফের বইয়ের সার-সংক্ষেপ প্রকাশের পরই ব্যাননের ওপর চটেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। বইতে বলা হয়, নির্বাচনে জেতার পর ডনাল্ড ট্রাম্প হতবুদ্ধি হয়ে যান। তিনি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ অনুষ্ঠানকে উপভোগ করেননি। বরং অপ্রত্যাশিতভাবে হোয়াইট হাউসের উত্তরসূরি নির্বাচিত হওয়ায় অনেকটাই ভীতসন্ত্রস্ত ছিলেন। ২০০টিরও বেশি সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এই বই লিখেছেন মাইকেল উলফ। তবে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি সারাহ স্যান্ডার্স বলেছেন, বইটি মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্যে পরিপূর্ণ। বইয়ের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয় হলো-

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়বেন ইভাঙ্কা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার মনোবাসনা রয়েছে ইভাঙ্কার। শুভাকাঙ্ক্ষীদের পরামর্শ অনুযায়ী স্বামী জারেড কুশনার ও ইভাঙ্কা এই বিষয়ে একমত হয়েছেন। এই দম্পতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ভবিষ্যতে ইভাঙ্কা প্রেসিডেন্ট হবেন। একসময় মনে করা হচ্ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন হিলারি ক্লিনটন। কিন্তু পারেন নি হিলারি। এবার তা করে দেখাবেন ইভাঙ্কা। হোয়াইট হাউসের সাবেক প্রধান কৌঁসুলি স্টিভ ব্যাননকে যখন তাদের পরিকল্পনার কথা জানানো হয়, তখন তিনি হতবাক হয়ে যান।

অশ্রু ঝরিয়েছিলেন মেলানিয়া, কিন্তু তা আনন্দের ছিল না
মাইকেল উলফ তার বইয়ে ডনাল্ড ট্রাম্পের অপ্রত্যাশিত বিজয়ের পর ট্রাম্প পরিবারের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেছেন। তিনি লিখেছেন, নির্বাচনের দিন রাত ৮টার কিছু সময় পর যখন খবর প্রকাশিত হলো যে আসলেই ট্রাম্প জিততে চলেছেন, তখন জুনিয়র ট্রাম্প তার বন্ধুকে নিজের পিতার অবস্থা বর্ণনা করেন এভাবে, ‘তিনি ভূত দেখেছেন’। এ সময় মেলানিয়া কাঁদছিলেন, কিন্তু তা আনন্দাশ্রু ছিল না।

রুশদের সঙ্গে ট্রাম্প জুনিয়রের সাক্ষাৎ ‘রাষ্ট্রদ্রোহমূলক’ ভেবেছিলেন ব্যানন
উলফের বই অনুসারে, রুশদের সঙ্গে ট্রাম্প-পুত্র ডনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র ও কতিপয় রুশদের মধ্যকার সাক্ষাৎকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহমূলক’ ভেবেছিলেন হোয়াইট হাউসের সাবেক প্রধান স্ট্র্যাটেজিস্ট স্টিভ ব্যানন। ২০১৬ সালে সংঘটিত এই বৈঠকে ট্রাম্প জুনিয়রকে হিলারি ক্লিনটন সম্বন্ধে ক্ষতিকর তথ্য দেয়ার কথা ছিল রুশ পক্ষের। বই অনুসারে ব্যানন এ বিষয়ে উলফকে বলেন- প্রচারণা শিবিরের তিন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ভেবেছিলেন, ট্রাম্প টাওয়ারের ২৫ তলার সম্মেলন কক্ষে, কোনো আইনজীবী ছাড়া, একটি বিদেশি সরকারের সঙ্গে দেখা করাটা মূলত একটি ভালো আইডিয়া। তাদের কাছে কোনো আইনজীবী ছিলই না। আপনার কাছে যদি এটা রাষ্ট্রদ্রোহমূলক, দেশপ্রেমবর্জিত বা বাজে...  মনে না হলেও, আমি মনে করি এটা এগুলোর প্রত্যেকটিই। বিষয়টি সম্বন্ধে তাৎক্ষণিকভাবে এফবিআইকে অবগত করা প্রয়োজন ছিল।

ফ্লিন জানতেন ‘রুশ সম্পর্ক’ একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ফ্লিন একটি বক্তব্যের জন্য মস্কো থেকে অর্থ নিয়েছিলেন। অর্থ নেয়ার সময়ই তিনি জানতেন যে, এটি পরবর্তীতে তার জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। উলফ তার বইতে লিখেছেন- নির্বাচনের পূর্বে ফ্লিনের বন্ধুরা তাকে বলেছিল যে,  রুশদের কাছ থেকে ভাষণের জন্য ৪৫ হাজার ডলার নেয়াটা ভালো সিদ্ধান্ত ছিল না। ফ্লিন তাদের কথার ওপর জোড় দিয়ে বলেছিলেন, আমরা যদি (নির্বাচনে) জিতে যাই, তাহলে এটা সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। উল্লেখ্য, ফ্লিনকে বিচার বিভাগের স্পেশাল কাউন্সেল তদন্তে বরখাস্ত করা হয়।
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে